Advertisement
E-Paper

ধরতেই চায়নি, তাই কাউকে ধরেনি পুলিশ?

সোমবার আলিপুরের ট্রেজারি ভবনে আনন্দবাজার পত্রিকার সাংবাদিক এবং একটি বৈদ্যুতিন চ্যানেলের এক মহিলা সাংবাদিককে অপহরণ, নিগ্রহ, মোবাইল ও ঘড়ি ছিনতাইয়ের ঘটনায় কাউকেই ধরতে পারেনি কলকাতা পুলিশ। শুধু তা-ই নয়, ৯ এপ্রিল আলিপুরে দুই সাংবাদিকের নিগ্রহের ঘটনাতেও অভিযুক্তেরা ধরা পড়েনি।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ০৩ মে ২০১৮ ১১:৫৪

দুর্গাপুর পারল। কলকাতা পারল না।

সাংবাদিক-নিগ্রহের ঘটনার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে দুর্গাপুর পুলিশ ছ’জনকে গ্রেফতার করেছে। কিন্তু সোমবার আলিপুরের ট্রেজারি ভবনে আনন্দবাজার পত্রিকার সাংবাদিক এবং একটি বৈদ্যুতিন চ্যানেলের এক মহিলা সাংবাদিককে অপহরণ, নিগ্রহ, মোবাইল ও ঘড়ি ছিনতাইয়ের ঘটনায় কাউকেই ধরতে পারেনি কলকাতা পুলিশ। শুধু তা-ই নয়, ৯ এপ্রিল আলিপুরে দুই সাংবাদিকের নিগ্রহের ঘটনাতেও অভিযুক্তেরা ধরা পড়েনি।

সোমবার পঞ্চায়েত নির্বাচনের মনোনয়নপত্র পেশের খবর সংগ্রহ করতে গিয়ে বীরভূম, পূর্ব বর্ধমানের কাটোয়া এবং মুর্শিদাবাদের বিভিন্ন জায়গায় আনন্দবাজার পত্রিকার ছয় সাংবাদিক নিগৃহীত হন। শুধু মুর্শিদাবাদে নিগৃহীত হন আনন্দবাজারের চার জন। ওই সব ঘটনায় এক জনকেও গ্রেফতার করা গেল না কেন? জেলা পুলিশকর্তাদের বক্তব্য, পুলিশের কাছে দায়ের করা অভিযোগপত্রে হামলাকারীদের নাম না-থাকায় তাঁদের সমস্যা হয়েছে। তা হলে পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ কী করল, সেই প্রশ্ন উঠছে।

কলকাতা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার সুপ্রতিম সরকারের মন্তব্য, ‘‘তদন্ত চলছে। সব দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’ আলিপুরে অপহৃত মহিলা সাংবাদিককে পুলিশ উদ্ধার করলেও আনন্দবাজারের সাংবাদিক আর্যভট্ট খানকে উদ্ধার করতে পুলিশ সেখানে যায়নি। আর্যভট্টের সঙ্গে সুপ্রতিমবাবু কথা বলার পরেও পুলিশ কেন সেখানে গেল না, সেই প্রশ্ন এড়িয়ে গিয়েছেন যুগ্ম কমিশনার (সদর)।

গোটা ঘটনায় কলকাতা পুলিশের দক্ষতা নিয়েই প্রশ্ন তুলেছেন প্রাক্তন পুলিশকর্তাদের কেউ কেউ। কলকাতার প্রাক্তন পুলিশ কমিশনার প্রসূন মুখোপাধ্যায়ের কথায়, ‘‘অন্যত্র পুলিশ ধরতে চেয়েছে, তাই দোষীদের ধরতে পেরেছে। কলকাতায় সেটা চায়নি, তাই ধরতে পারেনি। পুরোটাই তাঁদের সিদ্ধান্তের প্রশ্ন, যাঁরা পুলিশকে চালাচ্ছেন। নিছকই কয়েকটা গ্রেফতারের ভিত্তিতে আমি পুলিশের দক্ষতা মাপব না।’’

দুর্গাপুরে মহকুমাশাসকের অফিসে মনোনয়নপত্র পেশের খবর সংগ্রহে গিয়ে সাংবাদিকদের আক্রান্ত হওয়ার ঘটনায় ছ’জন গ্রেফতার হলেও এ দিন তাঁরা আদালত থেকে জামিন পেয়ে গিয়েছেন। মহকুমাশাসকের অফিসে ১৪৪ ধারা থাকা সত্ত্বেও সেখানে ঢুকে তাণ্ডব চালানোয় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে জামিনযোগ্য ধারায় মামলা হল কেন, সেই প্রশ্ন উঠছে। ‘‘কী ভাবে অনেকে ভিতরে ঢুকেছিল, তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে,’’ বলেন আসানসোল-দুর্গাপুরের ডিসিপি (পূর্ব) অভিষেক মোদী।

নিগৃহীত সাংবাদিকদের বেশির ভাগই ক্রমশ সুস্থ হয়ে উঠছেন। তবে রামপুরহাটে যিনি মাথায় আঘাত পেয়েছেন, আনন্দবাজার পত্রিকার সেই চিত্র-সাংবাদিক সব্যসাচী ইসলামের শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়েছে। তাঁকে কলকাতায় স্থানান্তরিত করার পরামর্শ দিয়েছেন স্থানীয় হাসপাতালের চিকিৎসকেরা। বেলডাঙায় নিগৃহীত আনন্দবাজার পত্রিকার সাংবাদিক সেবাব্রত মুখোপাধ্যায়ের মাথা ফেটে গিয়েছে। চিকিৎসকেরা জানান, ঘাড়ের একটি হাড়ে চিড় ধরেছে। আপাতত চার সপ্তাহ তাঁকে শুয়ে থাকতে হবে।

সাংবাদিকদের উপরে হামলার প্রতিবাদে মঙ্গলবার বহরমপুরে বুকে কালো ব্যাজ লাগিয়ে মিছিল করেন বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের কর্মীরা। মুর্শিদাবাদের জেলাশাসকের কাছে স্মারকলিপি দেওয়া হয়। বেলডাঙায় পথে নামেন সাধারণ মানুষও। সাংবাদিক-নিগ্রহের প্রতিবাদে এ দিন কাটোয়ার মহকুমাশাসকের দফতরে স্মারকলিপি জমা দেন সাংবাদিক-প্রতিনিধিরা। তবে সোমবার রাতে একটি বিবৃতি প্রকাশ ছাড়া কলকাতা প্রেস ক্লাব আর কিছু করেনি।

Journalists Kolkata Police Harassment Arrest
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy