পড়ুয়াদের নিরাপত্তার স্বার্থে স্কুলে কমিটি গঠনের নির্দেশ এসেছিল প্রায় আট মাস আগে। অথচ এখনও পর্যন্ত খাস কলকাতার বেশ কয়েকটি স্কুলই তা করে উঠতে পারেনি বলে জানাচ্ছে স্কুলশিক্ষা দফতর। স্কুলগুলির এই কমিটি গঠনের অনীহা নিয়ে বিরক্ত শিক্ষা দফতরের কর্তারা। তাই গত মঙ্গলবার স্কুলগুলিকে কড়া চিঠি পাঠিয়েছে কসবার শিক্ষা ভবনের কলকাতা জেলা স্কুল পরিদর্শকের দফতর। আজ, শুক্রবারের মধ্যে বিস্তারিত রিপোর্ট চেয়েছেন জেলা স্কুল পরিদর্শক (ডিআই)। স্কুলশিক্ষা দফতর সূত্রের খবর, গত ২৬ অক্টোবর পড়ুয়াদের নিরাপত্তার স্বার্থে রাজ্যের সমস্ত জেলা স্কুল পরিদর্শকদের সেফটি অ্যান্ড সিকিওরিটি মনিটরিং কমিটি গঠনের নির্দেশ দেন স্কুলশিক্ষা সচিব। সেই মতো ডিআই অফিস থেকে ওই নির্দেশিকা চলে যায় স্কুলগুলিতে। তাতে পুলিশ অথবা দমকল বা স্বাস্থ্য এবং সমাজকল্যাণ দফতরের সদস্য, সংশ্লিষ্ট স্কুলের অভিভাবক প্রতিনিধি ও শিক্ষকদের নিয়ে কমিটি গঠনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। ছাত্রছাত্রীদের জন্য আলাদা শৌচাগার, স্কুল চত্বরে সিসি ক্যামেরা বসানো, স্কুলে বহিরাগতদের প্রবেশ আটকানো, স্কুলবাসের নিরাপত্তা এবং সেফ ড্রাইভ, সেভ লাইফ প্রচার-সহ একাধিক দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল স্কুলগুলিকে।
কিন্তু কলকাতার সব স্কুলে এই কমিটি গঠন না হওয়ায় চিঠি পাঠিয়েছেন ডিআই।শিক্ষা ভবন সূত্রের খবর, চিঠিতে জানতে চাওয়া হয়েছে, কমিটির গঠন নিয়ে বিস্তারিত তথ্য। যারা এখনও পর্যন্ত এই কমিটি তৈরি করেনি, তাদের ১৮ মে বিকেল ৪টের মধ্যে কমিটির প্রস্তাবের প্রামাণ্য নথি জমা দিতে হবে। তবে শুধু এই কমিটি নয়, বিশাখা নির্দেশিকা মেনে প্রতিটি স্কুলে যৌন নিগ্রহের অভিযোগ জানানোর জন্য একটি বিশেষ কমিটি গঠনেরও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যেটি সম্প্রতি বিকাশ ভবন থেকে সমস্ত ডি আই-দের কাছে পাঠানো হয়েছে। এই কমিটির গঠনের বিষয়েও রিপোর্ট চেয়েছেন ডিআই। বিকাশ ভবনের এক কর্তা জানান, গত মাসে বহু স্কুলকে এই বিশেষ কমিটি গঠনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। এখনও বহু স্কুল তা গঠন করে উঠতে পারেনি। তাই সব মিলিয়ে এই চিঠি।
প্রশ্ন উঠেছে, কলকাতার বিভিন্ন স্কুলে যখন নানা অভিযোগ উঠেছে তার পরেও এই সব কমিটি গড়তে স্কুলের অনীহা কেন? যদিও বিশাখা নির্দেশিকার উপরে ভিত্তি করে কমিটি গঠনের নির্দেশিকায় ক্ষুব্ধ শিক্ষক মহলের একাংশ। শিক্ষক নেতা স্বপন মণ্ডল বলেন, এত দ্রুত এই কমিটি গঠন সম্ভব নয়। দফতরের উচিত ছিল আরও কিছু দিন আগে এই কমিটি তৈরির নির্দেশ পাঠানো। এত তাড়াহুড়োয় কমিটি আদৌ গঠন করা যাবে কি না তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। যদিও স্কুল শিক্ষা দফতরের এক কর্তার মতে, ‘‘ইচ্ছা থাকলেই উপায় হয়। নিরাপত্তা স্বার্থে কমিটি গঠনের জন্য তো অনেক সময় পেয়েছিলেন স্কুল কর্তৃপক্ষ। তবু তো সেটা হল না। ফলে স্কুলেরই গাফিলতি সামনে আসছে। এ বারে সময় মতো রিপোর্ট দিতেই হবে। অন্যথা স্কুলের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া যায় কি না তা নিয়েও আলোচনা চলবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy