Advertisement
১১ মে ২০২৪
Babita Sarkar

ববিতার চাকরি থাকবে? বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় বললেন, অঙ্কিতার থেকে পাওয়া টাকা সরিয়ে রাখুন

মন্ত্রীকন্যার চাকরি পাওয়া ববিতা সরকারের চকরি বাতিলের দাবি নিয়ে আদালতে গিয়েছিলেন আরেক চাকরিপ্রার্থী অনামিকা রায়। আদালতকে তিনি বলেন, তিনিই ববিতার চাকরির যোগ্য দাবিদার।

বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের বেঞ্চে শুনানি ছিল ববিতা সরকার এবং অনামিকা রায়ের চাকরি বিতর্কের মামলার।

বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের বেঞ্চে শুনানি ছিল ববিতা সরকার এবং অনামিকা রায়ের চাকরি বিতর্কের মামলার। ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৫ জানুয়ারি ২০২৩ ১৮:১৩
Share: Save:

মন্ত্রীকন্যার থেকে পাওয়া স্কুলশিক্ষিকার চাকরিটি কি শেষ পর্যন্ত ববিতা সরকারও হারাবেন? আদালতে ববিতার চাকরির বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠায় এই একটিই প্রশ্ন ছিল আলোচনার কেন্দ্রে। কিন্তু বৃহস্পতিবার এ নিয়ে কোনও নির্দেশই দিল না কলকাতা হাই কোর্ট। বদলে বৃহস্পতিবার বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় ববিতাকে বলে দিলেন, অঙ্কিতা অধিকারীর বেতনের যে টাকা তাঁকে দেওয়া হয়েছিল, তা যেন ববিতা আলাদা করে সরিয়ে রাখেন। কারণ, ভবিষ্যতে তা ফেরত দিতেও হতে পারে।

শিলিগুড়ির ববিতার চাকরি বাতিলের দাবিতে হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন তাঁরই শহরের কন্যা, আর এক এসএসসি পরীক্ষার্থী অনামিকা রায়। বৃহস্পতিবার সেই মামলার শুনানি ছিল বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের বেঞ্চে। তবে শিক্ষিকা ববিতার চাকরি থাকবে কি না, তা নিয়ে এখনই কোনও নির্দেশ দেয়নি কলকাতা হাই কোর্ট। বিচারপতি বলেন, ‘‘এখনই ববিতার চাকরি নিয়ে কোর্ট কোনও সিদ্ধান্ত নিচ্ছে না। এসএসসি এবং ববিতাকে হলফনামা জমা দিতে হবে। আগামী ৯ জানুয়ারি মামলার পরবর্তী শুনানি হবে।’’

ববিতা এবং অনামিকা কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন গত সোম এবং মঙ্গলবার। ববিতা তাঁর ছ’মাস আগে পাওয়া চাকরি নিয়ে ওঠা সাম্প্রতিক বিতর্কে আদালতের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিলেন। অন্য দিকে, অনামিকার আবেদন ছিল, স্কুলশিক্ষিকার যে চাকরিটি এর আগে আদালত ববিতাকে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল, তা বাতিল করে তাঁকে ওই চাকরি দেওয়া হোক। কারণ, তাঁর দাবি, তিনিই ওই চাকরিটি পাওয়ার যোগ্য। বৃহস্পতিবার ওই মামলার শুনানির পর আদালত জানায়, অঙ্কিতার দেওয়া সমস্ত অর্থ ববিতাকে জোগাড় করে রাখতে হবে। এর জন্য আলাদা ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট করে রাখতে পারেন ববিতা। আগামিদিনে চাকরি না থাকলে ওই সব টাকা হাই কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলকে ফেরত দিতে হবে।

উল্লেখ্য, রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী পরেশ অধিকারীর কন্যা অঙ্কিতাকে বেআইনি ভাবে শিক্ষকতার চাকরি পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগ করেছিলেন ববিতা। তাঁর অভিযোগ ছিল এসএসসির মেধাতালিকায় অনেক পিছন দিকে থাকা অঙ্কিতার নাম প্রথমে নিয়ে আসায় ওই তালিকায় ২০ নম্বরে নাম থাকা ববিতা চাকরি থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। কিন্তু সম্প্রতি সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একটি আবেদনপত্রের ছবি নিয়ে ফের শুরু হয় বিতর্ক।

ছবিটির সত্যাসত্য যাচাই করেনি আনন্দবাজার অনলাইন। তবে সেই ছবিতে দেখা গিয়েছে ববিতার এসএসসির আবেদনপত্র। যেখানে তাঁর ‘অ্যাকাডেমিক স্কোর’ অনেকটাই বাড়িয়ে দেখানো হয়েছে বলে দাবি অনামিকার। ছবির আবেদনপত্র অনুযায়ী স্নাতক স্তরে ৮০০ নম্বরের মধ্যে ৪৪০ নম্বর পেয়েছিলেন ববিতা। যা শতকরা হিসাবে ৫৫ শতাংশ। কিন্তু আবেদনপত্রে স্নাতক স্তরের প্রাপ্ত নম্বরের শতকরা হিসাবে লেখা রয়েছে ৬০ শতাংশ বা তার বেশি নম্বরের কথা। এর থেকেই গন্ডগোলের সূত্রপাত।

অনামিকা ওই ছবির তথ্যের উল্লেখ করে জানান, তথ্যটি ঠিক হলে র‌্যাঙ্কিংয়ে অন্তত আট ধাপ পিছিয়ে যাবেন ববিতা। কেন না সে ক্ষেত্রে ববিতার অ্যাকাডেমিক স্কোর ৩৩-এর বদলে কমে ৩১ হবে। আর যোগ্য প্রার্থী হিসাবে ২০ জনের তালিকার ২০ নম্বরে উঠে আসবে তাঁর নাম। ফলে চাকরিটা তাঁরই পাওয়ার কথা।

অন্য দিকে, ববিতার যুক্তি, উচ্চ মাধ্যমিকে ৬০ শতাংশ নম্বর পেয়েছিলেন তিনি। হয়তো ভুলবশতই স্নাতক স্তরের নম্বরের জায়গাতেও ৬০ শতাংশের ব্র্যাকেটে টিক পড়ে গিয়েছিল তাঁর। ভেরিফিকেশনের সময় পর্ষদ এই ভ্রান্তি লক্ষ্য করলে সমস্যা হত না। দু’টি মামলাই বুধবার শুনবেন বলেছিলেন হাই কোর্টের বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। ববিতার আবেদনের ভিত্তিতে মামলায় এসএসসি যুক্ত করতেও বলেছিলেন বিচারপতি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE