লিভারের রক্তক্ষরণ থামাতে জরুরি একটি পরীক্ষার খরচ চার গুণ নেওয়ার অভিযোগ ছিলই। কিন্তু পথ দুর্ঘটনায় জখম ডানকুনির সঞ্জয় রায়ের চিকিৎসার সময়ে অ্যাপোলো হাসপাতাল সেই পরীক্ষাটি আদৌ করেছিল কি না, এ বার সে প্রশ্নটিই বড় হয়ে উঠল। কারণ, পরীক্ষাটি হয়েছে বলে তদন্ত কমিটিকে কোনও প্রমাণ দিতে পারেননি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। সঞ্জয়ের দেহের ময়না তদন্তের প্রাথমিক রিপোর্টেও সে পরীক্ষার কোনও প্রমাণ মেলেনি।
সূত্রের খবর, সঞ্জয়ের স্ত্রীর কাছ থেকে অ্যাঞ্জিও এমবোলাইজেশন পরীক্ষার জন্য ১ লক্ষ ৭৯ হাজার টাকা নিয়েছিলেন অ্যাপোলো কর্তৃপক্ষ। লিভারের রক্তক্ষরণ বন্ধের জন্য দরকারি এই পরীক্ষাটি করাতে শহরের আর পাঁচটা বেসরকারি হাসপাতালে বড় জোর ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকা লাগে। অর্থাৎ, চার গুণ বেশি চার্জ নিয়েছে অ্যাপোলো। কিন্তু তদন্ত কমিটি সেই পরীক্ষার রিপোর্ট সম্বলিত সিডি জমা দিতে বললেও অ্যাপোলো কর্তৃপক্ষ তা দিতে পারেননি। তার পরেই কমিটির সদস্যদের সন্দেহ দৃঢ় হয়েছে— সম্ভবত পরীক্ষা না করিয়েই মোটা বিল নিয়েছে অ্যাপোলো। ময়না তদন্তের প্রাথমিক রিপোর্টেও অ্যাঞ্জিও এমবোলাইজেশন হয়েছে বলে কোনও প্রমাণ মেলেনি।
সোমবারই মুখ্যমন্ত্রীর কাছে সঞ্জয় রায়ের মৃত্যুর তদন্ত রিপোর্ট জমা দিয়েছেন স্বাস্থ্যসচিব। ওই রিপোর্ট সঞ্জয়ের চিকিৎসায় গাফিলতির কথা স্বীকার করেছে। তবে পুলিশের রিপোর্ট এখনও জমা পড়েনি। অ্যাপোলো হাসপাতালের আরও দুই চিকিৎসককে ডেকে মঙ্গলবার জিজ্ঞাসাবাদ করেছে পুলিশ।
লালবাজার জানাচ্ছে, সোমবার পর্যন্ত চিকিৎসক-সহ অ্যাপোলোর ১৩ জনকে ফুলবাগান থানা জিজ্ঞাসাবাদ করেছিল। আগের ১৩ জনের বয়ানের সঙ্গে মঙ্গলবারের দুই চিকিৎসকের বয়ান মিলিয়ে দেখা হয়। পুলিশ সূত্রে খবর, এখনও পর্যন্ত যে ১৫ জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে, তাঁদের বয়ানে বিস্তর অসঙ্গতি মিলেছে। তাঁদের ফের তলব করা হতে পারে। অ্যাপোলোর আইটিইউ-এ চিকিৎসাধীন থাকার সময় সঞ্জয়ের চিকিৎসা রেকর্ডের কাগজপত্রে কারচুপি করা হয়েছে বলে স্বাস্থ্যসচিব আগেই সন্দেহ প্রকাশ করেছিলেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy