Advertisement
E-Paper

ডেঙ্গি-মৃত্যু অস্বীকার কেন, ক্ষুব্ধ দেগঙ্গা

চাকলার দাসপাড়ার রত্না দাস গত ২৯ অক্টোবর মারা যান আর জি কর হাসপাতালে। তিনি দশ মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন। তাঁর মৃত্যুর শংসাপত্রেও ডেঙ্গির কথা লিখেছে হাসপাতাল।

অরুণাক্ষ ভট্টাচার্য

শেষ আপডেট: ১১ নভেম্বর ২০১৭ ০২:১৯

বহু মৃত্যুর কারণ হিসেবে বেসরকারি হাসপাতাল লিখছে ‘ডেঙ্গি’। গত ৩৫ দিনের মধ্যে কলকাতার সরকারি হাসপাতালেও কারও কারও মৃত্যুর শংসাপত্রে লেখা হয়েছে, ‘ডেঙ্গি’ এবং ‘এনএস ১ পজিটিভ’। তবু গত স্বাস্থ্য দফতর দাবি করেছে, গত ৩৫ দিনে রাজ্যে এক জনেরও ডেঙ্গিতে মৃত্যু হয়নি। সেই বক্তব্যের বিরুদ্ধেই শুক্রবার একজোট হয়ে ক্ষোভ দেখালেন উত্তর ২৪ পরগনার দেগঙ্গার বাসিন্দারা। যদি কিছুই না হয়ে থাকে, তবে কেন কলকাতার এত বড় বড় সরকারি হাসপাতাল মৃত্যুর কারণ ‘ডেঙ্গি’ লিখেছে? সরকারি হাসপাতালের দেওয়া কিছু মৃত্যুর শংসাপত্র দেখিয়ে এমনই প্রশ্ন তোলা হল সেখানে।

দেগঙ্গার বেড়াচাঁপার বাসিন্দা আব্দুল হাই এ দিন নিজের মায়ের মৃত্যুর শাংসাপত্র হাতে এসেছিলেন। গত ৩১ অক্টোবর মারা যান তাঁর মা, সায়েরা বিবি (৪৫)। কামারহাটির সাগর দত্ত হাসপাতাল সেই মৃত্যুর কারণ হিসেবে ডেঙ্গির কথা উল্লেখ করেছে। আব্দুল জানালেন, জ্বর হওয়ায় রক্ত পরীক্ষা করে দেখা গিয়েছিল মায়ের প্লেটলেট খুবই কম। মিলেছিল ডেঙ্গির জীবাণুও। আব্দুলের প্রশ্ন, ‘‘তা হলে কি আমার মায়ের মৃত্যু সব হিসেবের বাইরে?’’

চাকলার দাসপাড়ার রত্না দাস গত ২৯ অক্টোবর মারা যান আর জি কর হাসপাতালে। তিনি দশ মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন। তাঁর মৃত্যুর শংসাপত্রেও ডেঙ্গির কথা লিখেছে হাসপাতাল। এ দিন রত্নার স্বামী রামচন্দ্র দাস বলেন, ‘‘বারাসত হাসপাতালে ভর্তি করার দু’দিন পরে ছেড়ে দেন চিকিৎসক। অবস্থার অবনতি হলে ফের ওই হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাঁকে। পরে স্থানান্তরিত করা হয় আর জি করে। সেখানে চিকিৎসকেরা জানান, ডেঙ্গির জন্য বাচ্চাটা মারা গিয়েছে।’’

সোহায় কুমারপুর গ্রামের ইরফান আলি (১৫) নবম শ্রেণিতে পড়ত। ২০ অক্টোবর আর জি করে মৃত্যু হয় তারও। মৃত্যুর কারণে লেখা, ‘এনএস ১ পজিটিভ’ এবং ‘ভাইরাল ফিভার।’ তার পরিবার জানায়, এর পরে ইরফানকে বারাসত হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে আর জি করে স্থানান্তরিত করা হয় তাঁকে। সেখানেই ওই ছাত্রের মৃত্যু হয়। ইরফানের বাবা সাবুর আলি এ দিন বলেন, ‘‘রক্তের রিপোর্টে ডেঙ্গির কথা ছিল। কিন্তু হাসপাতাল ওকে চিকিৎসা না করে ফেলে রাখে।’’

বেড়াচাঁপার দক্ষিণ কাউকেপাড়ার লায়লা বিবি (৩২) গত ২৮ অক্টোবর ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজে মারা যান। তাঁর মৃত্যুর কারণও ‘এনএস ১ পজিটিভ’ লেখা হয়েছে। লায়লার স্বামী রেজাউল মণ্ডল এ দিন বলেন, ‘‘ডেঙ্গি ছিল, প্লেটলেট ৩৫ হাজারে নেমে যায়। কারা, কী ভাবে মৃত্যুর হিসেব রাখছেন, কে জানে?’’ ২২ অক্টোবর চাঁপাতলার চাঁদপুরের সফিক আলি (৪৭) বেলেঘাটা আইডি-তে মারা যান। তাঁর মৃত্যুর কারণেও লেখা, ‘এনএস ১ পজিটিভ।’ এ দিন সফিকের ছেলে রেজাউল ইসলাম বলেন, ‘‘সরকারি হাসপাতালে বাবার চিকিৎসাই হয়নি। চিকিৎসক শুধু জানিয়ে দিলেন, ডেঙ্গি হয়েছে, এর কোনও চিকিৎসা নেই। এখন শুনছি, কেউ নাকি ডেঙ্গিতে মারা যাননি!’’

Dengue Deganga
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy