Advertisement
০৩ মে ২০২৪

৫ বছরে উষ্ণতম সংক্রান্তি পৌষের

আবহবিদদের অনেকে বলছেন, মাঘের বাঘা রূপ এখন আর সে-ভাবে দেখা যায় না। মকরসংক্রান্তি পেরোনো মানেই শীতের বিদায় ঘণ্টা বেজে যাওয়া।

মকরস্নান: মঙ্গলবার গঙ্গাসাগরে। ছবি: শশাঙ্ক মণ্ডল

মকরস্নান: মঙ্গলবার গঙ্গাসাগরে। ছবি: শশাঙ্ক মণ্ডল

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৬ জানুয়ারি ২০১৯ ০৩:৪৬
Share: Save:

মাঘের শীত বাঘা মূর্তি ধরবে কি না, সেটা দূরের ব্যাপার। আপাতত পৌষের শেষে এসে শীতের জারিজুরি কার্যত শেষ! ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে বাঙালির হাড়ে কাঁপন ধরিয়েছিল সে। কিন্তু পৌষের শেষে তার দশা এমনই যে, আলিপুর হাওয়া অফিসের তথ্য বলছে, এ বছরের মকরসংক্রান্তিকে গত পাঁচ বছরের নিরিখে উষ্ণতমও বলা চলে। ২০১৬ -র পৌষ সংক্রান্তিতে কলকাতার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৫.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। মঙ্গলবারও পারদ থিতু হয়েছে একই জায়গায়!

বাঙালির কাছে মকরসংক্রান্তি মানেই কড়া শীত, কনকনে উত্তুরে বাতাস। কিন্তু মঙ্গলবার, পৌষ সংক্রান্তিতে কলকাতায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৫.৪ ডিগ্রি, স্বাভাবিকের থেকে এক ডিগ্রি বেশি। উত্তুরে বাতাসও সে-ভাবে দাপট দেখায়নি। শ্রীনিকেতন, বাঁকুড়া, পানাগড়ের মতো জায়গায় শীত মালুম হলেও নিজেদের ‘সুনাম’ রাখতে পারেনি তারা। তবে উত্তরবঙ্গে শীত দাপট বজায় রেখেছে। এ বার কলকাতায় শৈত্যপ্রবাহ বইতে দেখা যায়নি। মকরসংক্রান্তি মানেই শীতের বিদায় ঘণ্টা বেজে যাওয়া। তাই কলকাতায় শৈত্যপ্রবাহ ছাড়াই যে শীতের ইনিংস শেষ হতে চলেছে, তা নিয়ে হাওয়া অফিসে হিসেবনিকেশ শুরু হয়েছে। ‘‘কলকাতা-সহ গাঙ্গেয় বঙ্গে এ বছর হাড়কাঁপানো শীত পড়ার আশা আর নেই বললেই চলে,’’ বলছেন আলিপুর আবহাওয়া দফতরের অধিকর্তা গণেশকুমার দাস।

আবহবিদদের অনেকে বলছেন, মাঘের বাঘা রূপ এখন আর সে-ভাবে দেখা যায় না। মকরসংক্রান্তি পেরোনো মানেই শীতের বিদায় ঘণ্টা বেজে যাওয়া। এ বছর অবশ্য পুজোর পর থেকেই পশ্চিমি ঝঞ্ঝার প্রভাবে উত্তর ভারতের পাহাড়ি এলাকায় তুষারপাত শুরু হয়েছিল। তার জেরে পাওয়া গিয়েছে হিমেল উত্তুরে হাওয়া। ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে রেকর্ড ঠান্ডা পড়ে দেশ জুড়ে। মকরসংক্রান্তিতে এসে শীতের এমন হাল হল কেন?

গণেশবাবুর ব্যাখ্যা, সোমবার গাঙ্গেয় বঙ্গের উপর দিয়ে একটি নিম্নচাপ অক্ষরেখা তৈরি হয়েছিল। তার টানে সাগর থেকে জোলো গরম হাওয়া ঢুকেছে। এ দিন অবশ্য সেই অক্ষরেখা সরে গিয়েছে। আবহবিদদের অনেকে বলছেন, উত্তুরে হাওয়ারও তেমন জোর নেই। উত্তর ভারতেও শীত ব্যাকফুটে। তবে অক্ষরেখাটি সরে যাওয়ায় পারদ নিম্নমুখী হতে পারে বলে অনেকে আশাবাদী।

মৌসম ভবনের কেউ কেউ জানান, জলবায়ু বদলের ফলে ভূমধ্যসাগরীয় এলাকা থেকে বয়ে আসা ঠান্ডা হাওয়া বা পশ্চিমি ঝঞ্ঝারও চরিত্র বদলাচ্ছে। সেই জন্যই শীত এমন খামখেয়ালি হয়ে উঠছে কি না, তা দেখা প্রয়োজন।

এই জলবায়ু বদল নিয়েই আবার আশায় বুক বাঁধছেন শীত-প্রত্যাশীদের অনেকে। তাঁরা বলছেন, জলবায়ু বদলের ফলে মাঘেও তো কড়া শীত ফিরতে পারে! খামখেয়ালি প্রকৃতি কী করবে, তা কি কেউ বলতে পারে?

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Gangasagar Sagar Island
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE