Advertisement
৩০ এপ্রিল ২০২৪

মধ্যশিক্ষা পর্ষদের প্রশাসকের বিরুদ্ধেই আন্দোলন কর্মী সংগঠনের!

শাসকদলের আস্থাভাজন হওয়ায় মেয়াদ বাড়িয়ে তাঁকে প্রশাসক পদে বহাল রেখেছিল রাজ্য সরকার। মধ্যশিক্ষা পর্ষদের প্রশাসক পদে কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায়কে রেখে দেওয়ায়াটা এতটাই জরুরী ছিল যে নির্বাচন না করিয়ে তাঁকে পদে রাখার জন্যে কয়েক মাস আগে বিধানসভায় বিল পাশ করিয়ে নেওয়া হয়।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ৩০ নভেম্বর ২০১৫ ১৭:০৭
Share: Save:

শাসকদলের আস্থাভাজন হওয়ায় মেয়াদ বাড়িয়ে তাঁকে প্রশাসক পদে বহাল রেখেছিল রাজ্য সরকার। মধ্যশিক্ষা পর্ষদের প্রশাসক পদে কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায়কে রেখে দেওয়ায়াটা এতটাই জরুরী ছিল যে নির্বাচন না করিয়ে তাঁকে পদে রাখার জন্যে কয়েক মাস আগে বিধানসভায় বিল পাশ করিয়ে নেওয়া হয়। কিন্তু কয়েক মাসের মধ্যেই ছন্দ পতন। পদোন্নতি, স্বজন পোশন ও ‘হুইপ’ চালানোর একাধিক অভিযোগে তুলে শাসক দলের আস্থাভাজন কল্যাণময় বাবুর বিরুদ্ধে আন্দোলনে নামল শাসকদলেরই কর্মচারী সংগঠন! সোমবার দুপুরে পর্ষদ অফিসের ভিতরে বিক্ষোভ দেখাল আইএনটিটিইউসি-র শাখা সংগঠন ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল বোর্ড অফ সেকেন্ডারি এডুকেশন এমপ্লয়িজ ইউনিয়ন’-এর শতাধিক কর্মীরা।

কিন্তু কেন এই বিক্ষোভ?

পর্ষদ সূত্রের খবর, বহু দিন থেকেই নির্বাচনের মাধ্যমে পর্ষদের বোর্ড গঠন করাহয়ে আসছে। কিন্তু বর্তমান তৃণমূল সরকার আসার পরেই পাল্টে যায় পরিস্থিতি। ২০১১ সালে মেয়ার শেষ হয় মধ্যশিক্ষা পর্ষদের তৎকালীন সভাপতি চৈতালি দত্তের। নতুন সরকার আসার পরে কোনও এক ‘অজানা’ কারণে নির্বাচন স্থগিত হয়ে যায়। এরপরে ২০১২ সালের জুলাই মাসে পর্ষদের প্রশাসক পদে বসানো নিউ আলিপুর কলেজের অধ্যাপক তথা টালিগঞ্জের এক প্রভাবশালী মন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায়কে। পর্ষদের কর্মীদের অভিযোগ তারপর থেকেই কার্যত একনায়কতন্ত্র চালিয়ে আসছেন তিনি। এমনকি নিয়ম ভেঙে নভেম্বর মাসে অবসর নেওয়া এক ব্যক্তিকে পরের বছর জানুয়ারি মাসে পদোন্নতি দেওয়ার অভিযোগ ওঠে কল্যাণময়বাবুর বিরুদ্ধে। শাসকদলেরই এক নেতার অভিযোগ, ‘‘পর্ষদের ইউনিয়ন, অন্য সমস্ত কর্তাকে কার্যত অন্ধকারে রেখে পদোন্নতির ফাইলে সই করছেন। যেটা নিয়ম বিরুদ্ধে।’’ এমনকি সিনিয়রিটির ভিত্তিতে পদোন্নতি না করে বাম আমলের তৈরি করা তালিকা মেনেই পদোন্নতি হচ্ছে বলে অভিযোগ ওই নেতার। গ্রেডেশন তালিকা প্রকাশ করছেন না প্রশাসক।

পর্ষদের এক কর্তা জানান, নিয়ম অনুযায়ী নির্বাচন না করিয়ে বোর্ড গঠন করা ছাড়া প্রশাসক বসিয়ে পর্ষদ চালানো যেতে পারে। কিন্তু তার সময়সীমা দু’বছর। তারপরে তাঁকে এক বছরের জন্যে মেয়াদ বাড়ানো হয়। অর্থাৎ ২০১৫ সালে শেষ হয় তাঁর কাজের মেয়াদ। কিন্তু ফের তাঁর কাজের মেয়াদ বাড়ানো হয়!

নিয়ম মতে পদে বহাল রাখতে হলে বিধানসভায় বিল পাশ করাতে হয়। কল্যাণময়বাবুরে পদে বহাল রাখাটা এতটাই ‘আবশ্যিক’ ছিল যে রাজ্য সরকার সেই বিল পাশ করানোর পথেই হাঁটে, এবং ২০১৬ পর্যন্ত মেয়াদ বৃদ্ধি করা হয় কল্যাণময়বাবুর।

কিন্তু নির্বাচন না করিয়ে কল্যাণময়বাবুকে প্রশাসক হিসাবে নিয়োগ করার সিদ্ধান্ত তো নিয়েছে বর্তমান তৃণমূল সরকার। তাহলে এই বিক্ষোভ করা মানে কি সরকারের, অর্থাৎ আখেরে তৃণমূলের বিরোধীতা করা নয়?

উত্তরে অন্য আরেক নেতার মন্তব্য, ‘‘সরকার বা দলের নয়, বিরোধীতা করা হচ্ছে প্রশাসকের কাজ কর্মের। সরকার তাঁর মেয়াদ বাড়াবে বলে সমস্ত অনাচার মেনে নিতে হবে, বিষয়টা কিন্তু তেমন নয়।’’

কী বলছেন প্রশাসক?

এ দিন তাঁকে ফোন করে পুরো বিষয়টি শোনানো হলে তিনি বলেন, ‘‘আমি মিটিংয়ে রয়েছি। এখন কথা বলতে পারছি না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

workers union revolt secondary education chairman
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE