বেসরকারি বাসের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ হয় মাঝে-মধ্যে। কিন্তু সরকারি বাস চলছে প্রয়োজনীয় অনুমোদন ছাড়া (রুট পারমিট), এমন নালিশ সচরাচর ওঠে না। সেই অভিযোগই উঠেছে দুর্গাপুর থেকে আসানসোল এবং দুর্গাপুর থেকে বাঁকুড়ার গোবিন্দনগর রুটে চলাচলকারী দক্ষিণবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ সংস্থার (এসবিএসটিসি) দু’টি বাসের বিরুদ্ধে। বেসরকারি বাস মালিক সংগঠন তা লিখিত ভাবে জানিয়েছে মহকুমাশাসক এবং এসবিএসটিসি-র কাছে। এসবিএসটিসি কর্তৃপক্ষ অবশ্য জানান, ওই দু’টি বাস চালাতে দেওয়া হয়েছে দু’টি ফ্র্যাঞ্চাইজিকে। তারা অনুমতি নিয়েছে কি না, খোঁজ নিয়ে দেখা হবে।
‘দুর্গাপুর বাস মালিক কল্যাণ অ্যাসোসিয়েশন’-এর অভিযোগ, ২৫ ফেব্রুয়ারি থেকে দুর্গাপুর-আসানসোল রুটে হঠাৎ একটি সরকারি বাস চলতে শুরু করে। দিনে দু’বার যাতায়াত করে সেটি। বেসরকারি বাসের মালিকদের অভিযোগ, তাঁদের সঙ্গে কোনও আলোচনা ছাড়াই দু’টি বাসের চলাচলের সময়ের মাঝে নতুন এই বাসটি নামিয়ে দেওয়া হয়। ফলে, আগে-পরের বাসে যাত্রী সংখ্যা কমে যায়। এই বাস মালিকদের অভিযোগ, তাঁরা খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, রুটে চলাচলের জন্য প্রয়োজনীয় অনুমতি ছাড়াই চলছে এই নতুন বাস। বাস মালিক সংগঠনের তরফে অজয় বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, তাঁরা জেনেছেন, ওই রুটে বাসটি চলাচলের রুট পারমিট ছিল ২০০৭ সাল পর্যন্ত। তার পরে তা আর নবীকরণ করা হয়নি। ফলে অনুমোদন বাতিল হয়ে যায়। অথচ, হঠাৎ সেই রুটে আগের সময়সূচিতেই বাসটি চলতে শুরু করেছে। তিনি বলেন, “এই কাজ পুরোপুরি বেআইনি। পরিবহণ দফতরের স্পষ্ট নির্দেশ রয়েছে, সরকারি হোক বা বেসরকারি, সব বাসকেই রুট পারমিট নিতে হবে। আমরা সংশ্লিষ্ট জায়গায় অভিযোগ জানিয়েছি।”
বাস মালিক সংগঠনের তরফে জানানো হয়, একই ভাবে দুর্গাপুর থেকে বড়জোড়া, বেলিয়াতোড় হয়ে বাঁকুড়ার গোবিন্দনগর পর্যন্ত এসবিএসটিসি-র জেএনএনইউআরএম প্রকল্পের আরও একটি বাস চলতে শুরু করেছে সম্প্রতি। সেটিরও বৈধ অনুমতি নেই বলে দাবি বেসরকারি বাস মালিক সংগঠনের। অজয়বাবুর কথায়, “রুট পারমিট দেওয়ার দায়িত্বে রয়েছে রুট ট্রান্সপোর্ট অথরিটি। এই দুই বাসের কাছে ওই দফতরের কোনও কাগজপত্র নেই। শুধু এসবিএসটিসি-র তরফে দেওয়া অনুমোদন এবং একটি সময়সূচি রয়েছে।” প্রশাসনকে অবিলম্বে এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আর্জি জানিয়েছেন তাঁরা।
মহকুমাশাসকের দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ২৮ ফেব্রুয়ারি বাস মালিকদের পক্ষ থেকে বিষয়টি লিখিত ভাবে জানানো হয়। মহকুমাশাসক কস্তুরী সেনগুপ্ত জানান, প্রশাসনের তরফে বিষয়টি এসবিএসটিসি কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। আঞ্চলিক পরিবহণ দফতরের এক আধিকারিক বলেন, “সরকারি যা নিয়ম আছে, তা মেনেই সব বাস চলাচল করতে হবে। তা না হলে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির সৃষ্টি হবে।” এসবিএসটিসি কর্তৃপক্ষ জানান, ওই বাস দু’টি সরাসরি তাঁরা নিজেরা চালান না। ফ্র্যাঞ্চাইজিকে দেওয়া হয়েছে। বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখার আশ্বাস দেন সংস্থার এক আধিকারিক।
এই ঘটনার পরে ওই দুই রুটে যাতায়াতকারী মানুষজন অবশ্য ভুগছেন অন্য সংশয়ে। তাঁদের দাবি, একটি অতিরিক্ত বাস রাস্তায় নামায় ভিড়ে গাদাগাদি করে যাতায়াতের সমস্যা সামান্য হলেও মিটেছিল। কিন্তু এ সবের জেরে বাসগুলি উঠে গেলে ফের আগের পরিস্থিতি তৈরি হবে। বাসগুলি প্রয়োজনীয় অনুমোদন জোগাড় করে চলাচল করুক, এমনই দাবি করেছেন তাঁরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy