Advertisement
২৯ মে ২০২৪

অনিয়ম ঠেকাতে শিক্ষক শিক্ষণে নয়া বিশ্ববিদ্যালয়

রাজ্যের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে থাকা শিক্ষক শিক্ষণ কলেজে অনিয়মের অন্ত নেই। এ বার অনিয়মের মোকাবিলায় শিক্ষক শিক্ষণের সব প্রতিষ্ঠানকেই একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে আনছে রাজ্য সরকার। সেই জন্য সরকারি প্রতিষ্ঠান ডেভিড হেয়ার ট্রেনিং কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে উন্নীত করা হয়েছে। সোমবার বিধানসভায় এই সংক্রান্ত বিল পাশ হয়।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১১ নভেম্বর ২০১৪ ০২:৫৭
Share: Save:

রাজ্যের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে থাকা শিক্ষক শিক্ষণ কলেজে অনিয়মের অন্ত নেই। এ বার অনিয়মের মোকাবিলায় শিক্ষক শিক্ষণের সব প্রতিষ্ঠানকেই একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে আনছে রাজ্য সরকার। সেই জন্য সরকারি প্রতিষ্ঠান ডেভিড হেয়ার ট্রেনিং কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে উন্নীত করা হয়েছে। সোমবার বিধানসভায় এই সংক্রান্ত বিল পাশ হয়। বিধানসভার বাইরে শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় জানান, আগামী শিক্ষাবর্ষ থেকে নতুন বিশ্ববিদ্যালয় কাজ শুরু করতে পারবে বলে তাঁদের আশা।

টাকা নিয়ে বেসরকারি বিএড কলেজে ভর্তি করানোর অভিযোগ তো আকছার ওঠে। এমনকী রাজ্যের বহু প্রাথমিক শিক্ষক শিক্ষণ প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধেও নিয়ম না-মেনে ছাত্রছাত্রী ভর্তি করার অভিযোগ বিস্তর। কল্যাণীর ভক্তবালা বিএড কলেজে ছাত্র ভর্তিতে তৃণমূল ছাত্র পরিষদ বা টিএমসিপি-র দাদাগিরি সম্প্রতি সংবাদমাধ্যমের শিরোনাম হয়েছে। সেই ঘটনায় অভিযুক্ত ছাত্রনেতার বিরুদ্ধে ব্যবস্থাও নিয়েছে টিএমসিপি। নতুন বিশ্ববিদ্যালয় তৈরি করে এই ধরনের ঘটনা রোখা যাবে বলে আশা করছে রাজ্য সরকার।

বিএড কলেজ তো বটেই, প্রাথমিক স্তরের শিক্ষক শিক্ষণের সব প্রতিষ্ঠানকেও নতুন বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ন্ত্রণে আনা হচ্ছে। সেই উদ্দেশ্যেই এ দিন ‘দ্য ওয়েস্ট বেঙ্গল ইউনিভার্সিটি অব টিচারস ট্রেনিং, এডুকেশনাল প্ল্যানিং অ্যান্ড অ্যাডমিনিস্ট্রেশন বিল, ২০১৪’ পেশ করা হয় বিধানসভায়। তাতে জানানো হয়েছে, সুপ্রিম কোর্ট নিযুক্ত বর্মা কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী শিক্ষক-শিক্ষিকাদের প্রশিক্ষণের মান উন্নত করা এবং সব শিক্ষক শিক্ষণ প্রতিষ্ঠানকে এক ছাতার তলায় আনার জন্য ডেডিড হেয়ার ট্রেনিং কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে উন্নীত করা হচ্ছে। সরকারি তো বটেই, সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত এবং যাবতীয় বেসরকারি শিক্ষক শিক্ষণ প্রতিষ্ঠানও এই বিশ্ববিদ্যালয়ের আওতায় আসবে।

প্রশ্ন উঠেছে, সব শিক্ষক শিক্ষণ প্রতিষ্ঠানই তো এখনও কোনও না কোনও বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে আছে। তা সত্ত্বেও ওই সব প্রতিষ্ঠানে ভর্তি-সহ নানা ক্ষেত্রে অনিয়ম ঠেকানো যায়নি। নতুন বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে সেই প্রবণতা কী ভাবে আটকাবে সরকার?

নতুন নিয়ন্ত্রক বিশ্ববিদ্যালয় চালু করায় শিক্ষক শিক্ষণ প্রতিষ্ঠানগুলিতে নজরদারি অনেকটাই বাড়ানো যাবে। ফলে টাকার বিনিময়ে এবং নিয়মনীতি না-মেনে ছাত্র ভর্তিতে রাশ টানা সম্ভব হবে বলে বিধানসভার বাইরে আশা প্রকাশ করেন শিক্ষামন্ত্রী।

প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তর মিলিয়ে রাজ্যে শিক্ষক শিক্ষণ প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা সাড়ে চারশোরও বেশি। কলকাতায় অবস্থিত বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে কাজ চালাতে দূরের কলেজগুলির সমস্যা হবে না?

বিধানসভার বাইরে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের ধারণাটা অনেক ব্যাপক। স্থানীয় ছেলেমেয়েরাই কেবল সেখানে পড়তে আসেন না।” তাঁর দাবি, তামিলনাডুর পরে পশ্চিমবঙ্গই দ্বিতীয় রাজ্য, যেখানে শিক্ষক শিক্ষণ প্রতিষ্ঠানগুলিকে নিয়ে পৃথক বিশ্ববিদ্যালয় চালু হচ্ছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE