শিলিগুড়ি-জলপাইগুড়ি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের বহু কোটি টাকা আর্থিক দুর্নীতির তদন্ত তিন মাসের মধ্যে শেষ করতে রাজ্য সরকারকে নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট। সোমবার কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি মঞ্জুলা চেল্লুর ও বিচারপতি অসীম বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চ ওই রায় দেন।
এ দিন সেই মামলায় রাজ্য সরকারের জিপি (গভর্নমেন্ট প্লিডার) অভ্রতোষ মজুমদার আদালতে জানান, আর্থিক দুর্নীতি নিয়ে পাঁচটি মামলা দায়ের হয়েছে। একটি মামলার তদন্ত শেষ হলেও, এক জন আইএএস অফিসার সেই মামলায় জড়িত থাকায় তাঁর বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে অনুমতি চাওয়া হয়েছে। বাকি মামলাগুলির তদন্ত এখনও শেষ হয়নি। বিচারপতি বন্দ্যোপাধ্যায় জিপি-র কাছে জানতে চান, ওই আইএএস অফিসারের ব্যাপারে অনুমতি কবে চাওয়া হয়েছে? জিপি জানান, গত মার্চে। বিচারপতি বন্দ্যোপাধ্যায় জানতে চান, কেন্দ্রীয় সরকারকে এই ব্যাপারে কি মনে করিয়ে দেওয়া হয়েছে? জিপি জানান, গত জুনে মনে করানো হয়েছে। প্রধান বিচারপতি জিপি-র কাছে জানতে চান, তদন্ত শেষ করতে কত সময়ের প্রয়োজন? জিপি জানান, তিন মাস। তা শুনে প্রধান বিচারপতি রাজ্য সরকারকে নির্দেশ দেন, তিন মাসের মধ্যে সব মামলার তদন্ত শেষ করতে।
এসজেডিএ-র চেয়ারম্যান তথা উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব বলেন, “রায়ের প্রতিলিপি এখনও পাইনি। তবে এটুকু বলতে পারি, মুখ্যমন্ত্রী দুর্নীতির সঙ্গে আপস করেন না বলেই কিন্তু এসজেডিএ-র নয়ছয়ের কথা জানার পরেই এফআইআর করতে নির্দেশ দেন।” এই অবস্থায়, রাজ্যের উপরে চাপ বাড়াচ্ছে বামেরাও। সোমবার শিলিগুড়িতে বড় মাপের মিছিল করে এসজেডিএ-র সামনে গিয়ে বিক্ষোভ দেখান বামেরা। নেতৃত্বে ছিলেন প্রাক্তন পুরমন্ত্রী অশোক ভট্টাচার্য সহ অনেকেই। অশোকবাবুর অভিযোগ, এসজেডিএ কাণ্ডে সংস্থার প্রাক্তন সিইও তথা মালদহের জেলাশাসক গোদালা কিরণকুমারকে গ্রেফতারের পরে শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনারকে বদলি করা হয়। গোদালা কিরণকুমার জামিনও পেয়ে যান। তাই মুখ্যমন্ত্রীর আচরণ এ ক্ষেত্রে নিরপেক্ষ নয় বলেই ধারণা তৈরি হয়েছে।
তৃণমূলের জেলা নেতা কৃষ্ণ পালের অবশ্য দাবি, বাম আমলে এসজেডিএ কী করেছে, তা এখন বোঝা যাচ্ছে। তদন্ত করে উত্তরায়ণে জমি লেনদেনে বড় মাপের অনিয়মের অভিযোগ মিলেছে। এসজেডিএ-র বিভিন্ন প্রকল্পে সব মিলিয়ে অন্তত ৮৪ কোটি টাকা দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। গত বছর ১৬ মে মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে শিলিগুড়ির প্রধাননগর থানায় অভিযোগ দায়ের হয়। গ্রেফতার হন ইঞ্জিনিয়ার মৃগাঙ্কমৌলি সরকার, সপ্তর্ষি পাল, ঠিকাদার শঙ্কর পাল, সুব্রত দত্ত সহ ১৩ জন। এই মামলায় তৃণমূল বিধায়ক রুদ্রনাথ ভট্টাচার্য, তৃণমূলের প্রাক্তন ডেপুটি মেয়র রঞ্জন শীলশর্মা, মাটিগাড়া-নকশালবাড়ির কংগ্রেস বিধায়ক শঙ্কর মালাকার, জলপাইগুড়ির প্রাক্তন তৃণমূল জেলা সভাপতি চন্দন ভৌমিক সহ অনেককেই জেরা করে পুলিশ। বর্তমানে মামলাটি সিআইডি তদন্ত করছে। পৃথক ভাবে তদন্ত করছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy