বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ভোট চেয়ে ফ্লেক্স। ছবি: উদিত সিংহ।
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের সঙ্গে দলবল নিয়ে টিএমসিপি-র রাজ্য সভাপতি অশোক রুদ্রের দেখা করা নিয়ে বিতর্ক এখনও টাটকা। তার মধ্যেই আর এক বিশ্ববিদ্যালয়ে জোড়া বিতর্কে জড়াল তৃণমূল প্রভাবিত দু’টি কর্মী সংগঠন।
শুক্রবার বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ামক ভবনে সংগঠনের বার্ষিক সাধারণ সভা করে ‘বর্ধমান ইউনির্ভাসিটি কর্মচারী সমিতি’। সেখানেই ছুটি নিয়ে হাজির ছিলেন আইএনটিটিইউসি অনুমোদিত সংগঠনের আড়াইশো কর্মী। কাজ ফেলে এত জন সম্মেলনে চলে গেলেন কী ভাবে? সমিতির সাধারণ সম্পাদক শ্যামাপ্রসাদ বন্দ্যোপাধ্যায়ের জবাব, ‘‘কর্মচারীরা তো কাজের দিনেই সম্মেলন করবেন।’’ সভায় ছিলেন সংগঠনের রাজ্য সভাপতি শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। তাঁর যুক্তি, ‘‘স্বীকৃত এবং রেজিস্টার্ড ইউনিয়নের বার্ষিক সাধারণ সভার সময়টায় সদস্যদের কাজ থেকে ছাড় দেওয়াটাই দেশের সব শ্রমিক সংগঠনের নিয়ম। ফলে, কর্মীরা ছুটি নিয়ে ভাল করেছেন। বিকেল ৩টেয় সভা শেষ হওয়ার পরে আর এক-দেড় ঘণ্টায় কী-ই বা কাজ করতেন তাঁরা!’’ যদিও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের দাবি, সাধারণত এ ধরনের সভা করার আগে অনুমতি নিতে হয়। কিন্তু এ ব্যাপারে তাঁদের কিছু জানানো হয়নি। কর্মীরা লিখিত ভাবে ছুটির আবেদনও করেননি।
দ্বিতীয় বিতর্কের কারণ ‘সারা বাংলা তৃণমূল শিক্ষাবন্ধু সমিতি’র বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় শাখার একটি ফ্লেক্স। বুধবার থেকে তা ঝুলছে রাজবাটি ক্যাম্পাসের প্রশাসনিক ভবনের সামনে। সেখানে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি দিয়ে সরাসরি ‘জোড়াফুলে’ ভোট দেওয়ার আবেদন করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো স্বশাসিত প্রতিষ্ঠানে নিয়মবিরুদ্ধ রাজনৈতিক প্রচার কেন— প্রশ্ন তুলেছেন বাম প্রভাবিত বিশ্ববিদ্যালয় কর্মচারী সংগঠন। সংগঠনের সভাপতি আকাশ চট্টোপাধ্যায়ের ক্ষোভ, ‘‘কর্মসচিবের কাছে লিখিত আপত্তি জানিয়েছিলাম। কিন্তু ফ্লেক্স সরেনি।’’ উপাচার্য স্মৃতিকুমার সরকার বলেন, “যা বলার এস্টেট অফিসার বলবেন।” এস্টেট অফিসার দীপেন্দ্রনারায়ণ দে বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মসচিব বলবেন।” কর্মসচিব দেবকুমার পাঁজা বলেন, “এখনও ওই ফ্লেক্স দেখিনি। কেউ টাঙিয়ে থাকলে নিয়ম-বহির্ভূত। উপাচার্যের সঙ্গে কথা বলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” শিক্ষাবন্ধু সমিতির বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক সীতারাম মুখোপাধ্যায়ের মন্তব্য, “কলকাতায় আছি। ফিরে দেখছি।” এ নিয়ে মুখ খোলেননি শোভনদেববাবু। তৃণমূলের এক শীর্ষ নেতা মানছেন, ‘‘বিশ্ববিদ্যালয়ে এমন ফ্লেক্স লাগানো যায় না।’’ বিরোধীরা শিক্ষাঙ্গনে ‘অনভিপ্রেত উপস্থিতি’র অভিযোগে বিঁধতে ছাড়ছেন না শাসক দলকে। সিধো-কানহো-বীরসা বিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের প্রধান গৌতম মুখোপাধ্যায়কে সরানোর দাবিতে এ দিনই উপাচার্য দীপকরঞ্জন মণ্ডলের কাছে স্মারকলিপি দেওয়ার (দিয়েছে ‘পুরুলিয়া নাগরিক সমাজ’) উদ্যোগের মধ্যেও ‘নাক গলানোর প্রবণতা’ই দেখছেন তাঁরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy