Advertisement
E-Paper

কালবৈশাখীর বাধা সেই পশ্চিমী ঝঞ্ঝা

যে সময়ের যা, সেটা এ বার হচ্ছে না ঠিকঠাক! বারবার ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেও শীত স্থায়ী ভাবে তেমন দাপট দেখাতে পারেনি। আগাম হাজির হয়ে বসন্তও দখিনা হাওয়ার দাক্ষিণ্য তেমন পাচ্ছে না। স্বাভাবিক নিয়মে শীত নিজের সময়ে দাপট দেখাতে পারলে, বসন্তে দখিনা হাওয়া উতল হলে এত দিনে কালবৈশাখীর ভূমিকাটাও হয়ে যাওয়ার কথা।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১০ মার্চ ২০১৪ ০৪:২২

যে সময়ের যা, সেটা এ বার হচ্ছে না ঠিকঠাক!

বারবার ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেও শীত স্থায়ী ভাবে তেমন দাপট দেখাতে পারেনি। আগাম হাজির হয়ে বসন্তও দখিনা হাওয়ার দাক্ষিণ্য তেমন পাচ্ছে না। স্বাভাবিক নিয়মে শীত নিজের সময়ে দাপট দেখাতে পারলে, বসন্তে দখিনা হাওয়া উতল হলে এত দিনে কালবৈশাখীর ভূমিকাটাও হয়ে যাওয়ার কথা। কিন্তু বাধা সেই পশ্চিমী ঝঞ্ঝা। চৈত্র আসতে চলল, পশ্চিমী ঝঞ্ঝার যে বিরামই নেই!

আর বিরামহীন পশ্চিমী ঝঞ্ঝার জন্য আবহাওয়াও স্থিতিশীল হচ্ছে না। রাতের তাপমাত্রা স্বাভাবিকের থেকে নেমে যাচ্ছে। গায়ে চাদর চাপাতে হচ্ছে। আবার দিনের বেলা গরমের জন্য চালাতে হচ্ছে পাখা। ওড়িশা ও পশ্চিমবঙ্গ উপকূলে ঘূর্ণাবর্তের জন্য রবিবার থেকে জলীয় বাষ্প ঢুকছে দক্ষিণবঙ্গে। তাতে মাঝেমধ্যে আকাশে মেঘ জমছে। পরিস্থিতি তখন গুমোট হয়ে যাচ্ছে। বসন্তের দখিনা হাওয়ায় তাই কোনও জোরই নেই।

আবহবিদেরা বলছেন, এই পরিস্থিতি থেকে মুক্তি দিতে পারে কালবৈশাখী। কিন্তু তার জন্য যে-প্রাকৃতিক পরিস্থিতি তৈরি হওয়া দরকার ছিল, সেটাও এই মুহূর্তে অনুপস্থিত। উপগ্রহ-চিত্রে দেখা যাচ্ছে, জম্মু-কাশ্মীরের দরজায় ফের একটি পশ্চিমী ঝঞ্ঝা এসে উপস্থিত হয়েছে। তার ফলে কাশ্মীর উপত্যকা, হিমাচলপ্রদেশ এবং উত্তরাখণ্ডের পাহাড়ে বৃষ্টি কিংবা তুষারপাতের পূর্বাভাস দিয়ে রেখেছে দিল্লির মৌসম ভবন। গত তিন মাস ধরে ওই তিন পাহাড়ি রাজ্যে পশ্চিমী ঝঞ্ঝার প্রকোপে তুষারপাত আর বৃষ্টি হয়েই চলেছে। ফলে সেখানে আবহাওয়া স্থিতিশীল হতে পারছে না।

তিন পাহাড়ি রাজ্য থেকে উত্তুরে হাওয়া কোনও বাধা না-পেয়ে মধ্য ভারত হয়ে চলে আসছে পূর্ব ভারতে। মধ্যপ্রদেশ, ছত্তীসগঢ়ে প্রায় এক মাস ধরে এমন একটি বায়ুপ্রবাহ স্থিতিশীল রয়েছে, যা আরবসাগর ও বঙ্গোপসাগর থেকে জলীয় বাষ্প টেনে নিচ্ছে। সেই বায়ুপ্রবাহ এখনও রয়ে গিয়েছে। আর ওই বায়ুপ্রবাহই উত্তর ভারতের ঠান্ডা হাওয়া টেনে নিয়ে বৃষ্টিপাত ঘটাচ্ছে। গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গে বৃষ্টি তেমন না-হলেও উত্তর ভারতের হাওয়া এসে পৌঁছেছে এখানেও। ফলে রাতের তাপমাত্রা স্বাভাবিকের থেকে নীচেই থেকে যাচ্ছে। দিনটা রোদ-ঝলমলে থাকলেও সর্বোচ্চ তাপমাত্রা কিন্তু এই সময়ের স্বাভাবিকের থেকে নীচেই থাকছে। উত্তুরে হাওয়ার দাপটে দখিনা বাতাস হাল ছেড়ে দিয়েছে।

অবিরাম পশ্চিমী ঝঞ্ঝা এবং মধ্য ভারতের অস্বাভাবিক বায়ুপ্রবাহের জেরে সাঁওতাল পরগনা এলাকায় তাপমাত্রা তেমন বাড়তে পারছে না। কালবৈশাখীর উৎসের মূল রসায়নটাই লুকিয়ে আছে সাঁওতাল পরগনা এলাকার তাপমাত্রার মধ্যে। সেখানে তাপমাত্রা মাত্রা না-ছাড়ালে বাতাসও তেমন ভাবে গরম হয়ে উঠতে পারে না। আর বাতাস গরম না-হলে দেখা মেলে না কালবৈশাখীর। কারণ, গরম বাতাস উপরের দিকে উঠলে তবেই সেখানে জলীয় বাষ্পপূর্ণ বাতাস ঢুকতে পারে। আর এ ভাবেই তৈরি হয় কালবৈশাখীর অনুকূল পরিস্থিতি।

এক আবহবিদের কথায়, “উত্তুরে হাওয়ার তীব্রতা না-কমলে এই অঞ্চলে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা বাড়ার কোনও সম্ভাবনা নেই।

কালবৈশাখী তাই দূর-অস্ত্!

kalboisakhi western disturbences weather
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy