রাজ্য মানবাধিকার কমিশনে চেয়ারম্যান-পদ প্রায় সাড়ে পাঁচ মাস ধরে খালি পড়ে আছে। ওই দায়িত্ব নেওয়ার জন্য রাজ্য সরকারের তরফে কয়েক জনকে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তাঁদের কেউ রাজি হননি বলে সরকারের পক্ষ থেকে কলকাতা হাইকোর্টে জানানো হয়েছে। এই অবস্থায় কমিশনের ওই শীর্ষ পদ পূরণ করতে রাজ্য সরকার কী ব্যবস্থা নিচ্ছে, তিন সপ্তাহের মধ্যে হাইকোর্টে তাদের তা জানাতে হবে।
শুক্রবার হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি অরুণ মিশ্রের ডিভিশন বেঞ্চ একটি জনস্বার্থের মামলার পরিপ্রেক্ষিতে এই নির্দেশ দিয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি অশোককুমার গঙ্গোপাধ্যায়ের পদত্যাগের পরে গত ৬ জানুয়ারি থেকে রাজ্য মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যানের পদটি শূন্য রয়েছে। ফলে কাজকর্ম ব্যাহত হচ্ছে। ফয়সালা না-হওয়ায় বহু আবেদন জমে যাচ্ছে।
বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় সুপ্রিম কোর্টে থাকাকালীন এক ইন্টার্নকে যৌন হেনস্থা করেছিলেন বলে পরে অভিযোগ ওঠে। সেই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তিনি রাজ্য মানবাধিকার কমিশনের শীর্ষ পদে থাকতে পারেন কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন ও বিতর্কের ঝড় বয়ে যায়। অভিযোগ অস্বীকার করেও তিনি ওই পদে ইস্তফা দেন। তার পরে রাজ্য পুলিশের অবসরপ্রাপ্ত ডিজি নপরাজিত মুখোপাধ্যায় অস্থায়ী ভাবে কমিশনের চেয়ারম্যান-পদে বসেন। কিন্তু কমিশন কার্যত অকেজো হয়ে পড়েছে বলে বিনোদ সিংহ নামে এক ব্যক্তি হাইকোর্টে জনস্বার্থের মামলা করেন। তিনি আবেদনে বলেন, এক জন পুলিশ অফিসার অস্থায়ী ভাবে ওই পদ সামলাচ্ছেন। এর ফলে কমিশন প্রায় অকেজো হয়ে পড়েছে। এ ব্যাপারে উচ্চ আদালতের হস্তক্ষেপ চাওয়া হয়েছে আবেদনে।
মামলাটি এ দিন প্রধান বিচারপতি মিশ্র ও বিচারপতি জয়মাল্য বাগচীর ডিভিশন বেঞ্চে ওঠে। কেন এত দিন মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান-পদ ফাঁকা পড়ে রয়েছে, সরকারের কাছে তা জানতে চায় ডিভিশন বেঞ্চ। রাজ্যের জিপি (গভর্নমেন্ট প্লিডার) অশোক বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, ওই পদের দায়িত্ব নেওয়ার জন্য সরকারের তরফে বেশ কয়েক জন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতির সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। কিন্তু তাঁদের কেউই ওই দায়িত্ব নিতে রাজি হননি। এমনকী কলকাতা হাইকোর্টের অবসরপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি জে এন পটেল প্রথমে জানিয়েছিলেন, তিনি মানবাধিকার কমিশনের শীর্ষ পদের দায়িত্ব গ্রহণ করবেন। কিন্তু পরবর্তী কালে তিনিও জানিয়ে দিয়েছেন, ওই পদের দায়িত্ব তিনি নিতে পারছেন না।
ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়েছে, তিন সপ্তাহ পরে এই মামলার ফের শুনানি হবে। সেই সময় সরকারকে জানাতে হবে, তারা কী ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy