Advertisement
০৭ মে ২০২৪

কলেজ সমিতির সদস্যদের অন্তত স্নাতক হতে হবে: পার্থ

কলেজ পরিচালন সমিতির সদস্যদের ন্যূনতম শিক্ষাগত যোগ্যতা স্নাতক হওয়া উচিত বলে মনে করেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। পরিচালন সমিতিতে সরকার ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধিদের অন্তত স্নাতক হতেই হবে বলে রাজ্যের উচ্চশিক্ষা দফতর বিজ্ঞপ্তি জারি করছে বলেও সোমবার জানিয়ে দেন তিনি।তবে পার্থবাবুর এই মত বা সরকারি বিজ্ঞপ্তিতে আরাবুল ইসলামের মতো নেতাদের কলেজ পরিচালন সমিতির সভাপতি হওয়া আটকাবে না।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৯ অগস্ট ২০১৪ ০৩:৩৪
Share: Save:

কলেজ পরিচালন সমিতির সদস্যদের ন্যূনতম শিক্ষাগত যোগ্যতা স্নাতক হওয়া উচিত বলে মনে করেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। পরিচালন সমিতিতে সরকার ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধিদের অন্তত স্নাতক হতেই হবে বলে রাজ্যের উচ্চশিক্ষা দফতর বিজ্ঞপ্তি জারি করছে বলেও সোমবার জানিয়ে দেন তিনি।

তবে পার্থবাবুর এই মত বা সরকারি বিজ্ঞপ্তিতে আরাবুল ইসলামের মতো নেতাদের কলেজ পরিচালন সমিতির সভাপতি হওয়া আটকাবে না। কারণ, সংশ্লিষ্ট আইন অনুযায়ী কলেজ পরিচালন সমিতির সভাপতি-পদে যিনি বসেন, তাঁকে আসতে হয় নির্বাচনের মাধ্যমে। আর নির্বাচিত প্রতিনিধি হিসেবে তাঁর ন্যূনতম কোনও শিক্ষাগত যোগ্যতা আইনে নির্দিষ্ট করে দেওয়া নেই।

কিছু দিন আগে আশুতোষ কলেজে এক অনুষ্ঠানে এই প্রসঙ্গ তুলেছিলেন তৃণমূলের প্রবীণ সাংসদ সৌগত রায়। তাঁর আক্ষেপ, অষ্টম শ্রেণি পাশ করা অনেকেই কলেজের পরিচালন সমিতির সভাপতি হয়ে বসছেন। কলেজের শিক্ষিকাকে জলের জগ ছুড়ে মারার অভিযোগে ভাঙড়ের তৃণমূল নেতা আরাবুল ইসলাম তার কিছু দিন আগেই ছিলেন খবরের শিরোনামে। আরাবুল ভাঙড় কলেজের পরিচালন সমিতির সভাপতি। শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসের অন্দরে তিনি আবার পার্থবাবুরই ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত।

পার্থবাবু রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী হয়েছেন কয়েক মাস আগে। তার পরে কলেজে বহিরাগতদের প্রবেশ এবং ছাত্র সংসদের দাপাদাপির রাশ টানার চেষ্টায় কঠোর হওয়ার বার্তা দিয়েছেন। এমনকী তৃণমূল ছাত্র পরিষদের নেতাদের এই ব্যাপারে সংযত হতেও বলেছেন। এ দিন তিনি বলেন, “এ বার থেকে পরিচালন সমিতিতে সরকার এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধিদের স্নাতক হতেই হবে। শীঘ্রই এই ব্যাপারে সরকারি বিজ্ঞপ্তি জারি করা হবে।”

কিন্তু হঠাৎ এমন বিজ্ঞপ্তি জারি করার প্রয়োজন পড়ল কেন?

পার্থবাবুর দাবি, স্নাতক নন, এমন ব্যক্তিদেরও কোথাও কোথাও কলেজ পরিচালন সমিতিতে সরকারি বা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধি করা হয়েছে। আগামী দিনে যাতে তেমনটা না-হয়, সেই জন্যই সরকারের এই সিদ্ধান্ত। কিন্তু পরিচালন সমিতিতে সরকার বা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধিদের প্রভাব খুবই সামান্য। ১০ থেকে ১২ জনের পরিচালন সমিতিতে সভাপতির ক্ষমতাই সব চেয়ে বেশি। আর এ রাজ্যের ঐতিহ্য হল, কলেজ পরিচালন সমিতির সভাপতি বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই শাসক দলের নেতা-মন্ত্রী অথবা প্রভাবশালী সদস্য। সেই কারণেই স্কুলের চৌকাঠ না-পেরোনো অনেকেই অনায়সে কলেজ পরিচালন সমিতির সভাপতি হয়ে বসেন।

এই ব্যাপারে সরকারের কি কিছুই করণীয় নেই?

পার্থবাবুর জবাব, “সভাপতি নির্বাচিত প্রতিনিধি। তাই তাঁর ব্যাপারে সরকারের কিছু করণীয় নেই।”

তবে শিক্ষা প্রশাসনের সঙ্গে যুক্ত অনেকেই মনে করেন, এর জন্য প্রয়োজন রাজনৈতিক সদিচ্ছা। রাজনৈতিক দলগুলিও একটা অলিখিত নিয়ম মেনে চলতে পারে। দলের মধ্যেই সিদ্ধান্ত নেওয়া যেতে পারে যে, শিক্ষাগত যোগ্যতায় খুবই ঘাটতি রয়েছে, এমন কাউকে উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পরিচালনায় যুক্ত করা হবে না। কিন্তু তা না-করে উচ্চশিক্ষা দফতর যে-বিজ্ঞপ্তি জারি করতে চলেছে, বাস্তবে তার খুব একটা গুরুত্ব নেই। কারণ, সাধারণ ভাবে বিভিন্ন কলেজের পরিচালন সমিতিতে যাঁরা সরকার এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধি হন, তাঁদের শিক্ষাগত যোগ্যতা স্নাতক তো বটেই, অনেক ক্ষেত্রে তার থেকে বেশিও হয়। কোথাও যদি তা না-হয়ে থাকে, সেটা একেবারেই ব্যতিক্রম।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

college management board partha chattopadhyay
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE