Advertisement
E-Paper

ঘূর্ণিঝড় দুর্বল, উজ্জ্বল বর্ষা-ভাগ্য

দড়ি টানাটানির খেলায় আবার পটবদল! আরবসাগরের যে ঘূর্ণিঝড় বর্ষাকে পশ্চিমে বেঁধে রেখে পূর্ব ভারতকে প্রায় শুকিয়ে মারতে বসেছিল, সেই নানৌকের জোর কমতেই পরিস্থিতি ঘুরে গেল। দক্ষিণবঙ্গে প্রশস্ত হল বৃষ্টির পথ। রবিবার মৌসম ভবন সূত্রের খবর, নানৌক শক্তি খুইয়ে দুর্বল হয়ে পড়েছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৬ জুন ২০১৪ ০৩:২৯

দড়ি টানাটানির খেলায় আবার পটবদল! আরবসাগরের যে ঘূর্ণিঝড় বর্ষাকে পশ্চিমে বেঁধে রেখে পূর্ব ভারতকে প্রায় শুকিয়ে মারতে বসেছিল, সেই নানৌকের জোর কমতেই পরিস্থিতি ঘুরে গেল। দক্ষিণবঙ্গে প্রশস্ত হল বৃষ্টির পথ।

রবিবার মৌসম ভবন সূত্রের খবর, নানৌক শক্তি খুইয়ে দুর্বল হয়ে পড়েছে। অন্য দিকে বঙ্গোপসাগরে তৈরি হওয়া একটি ঘূর্ণাবর্ত মৌসুমি বায়ুকে টেনে আনতে শুরু করেছে পূর্ব ভারতের দিকে। এই জোড়া আশীর্বাদের দৌলতে চলতি সপ্তাহে দক্ষিণবঙ্গে বর্ষা হাজির হতে পারে বলে আবহবিদদের অনুমান। আলিপুর আবহাওয়া দফতরের অধিকর্তা গোকুলচন্দ্র দেবনাথ এ দিন বলেন, “বুধবার নাগাদ দক্ষিণবঙ্গে বর্ষা ঢুকতে পারে। তা ছড়াবে উত্তরবঙ্গের সব জেলাতেও।”

অর্থাৎ একটানা নাকাল করা গরমের হাত থেকে রেহাই মেলার আশা। বস্তুত আগামিকাল, মঙ্গলবার থেকেই আবহাওয়া মোলায়েম হয়ে ওঠার সম্ভাবনা দেখছে হাওয়া অফিস। বর্ষা আগমনীর বার্তালাভের সঙ্গে সঙ্গে কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গের বিস্তীর্ণ অঞ্চল এ দিন বর্ষার আমেজও পুইয়েছে খানিকটা। বিকেলে আকাশ কালো করে বৃষ্টি নেমেছে। তরতরিয়ে নেমে এসেছে থার্মোমিটারের পারদ। আলিপুরের তথ্য: এ দিন বেলা আড়াইটেতে কলকাতায় তাপমাত্রা ছিল ৩৭.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তিন ঘণ্টা বাদে, বিকেল সাড়ে পাঁচটায় তা দাঁড়িয়েছে ২৫.১ ডিগ্রিতে!

এবং দফায় দফায় বৃষ্টির সুবাদেই পরিস্থিতি এমন সহনীয় হয়ে উঠেছে। যদিও বর্ষা আসার প্রাক্কালে যে বৃষ্টি হওয়াটা স্বাভাবিক, এ দিনের ধারাপাত সেই ‘প্রাক বর্ষার’ বৃষ্টি নয় বলেই জানিয়েছেন আবহবিদেরা। তাঁদের ব্যাখ্যা: দখিনা বাতাস ও উত্তরবঙ্গে একটি ঘূর্ণাবর্তের অবস্থিতির কারণে দক্ষিণবঙ্গের পরিমণ্ডলে যথেষ্ট জলীয় বাষ্প বিরাজ করছিল, তাপমাত্রা বৃদ্ধির ফলে যা বায়ুমণ্ডলের উপরিস্তরে উঠে বজ্রগর্ভ উল্লম্ব মেঘ তৈরি করেছে। আর তা থেকেই এ দিনের মুষলধার বর্ষণ। প্রসঙ্গত, গত ক’দিন ধরে বিকেলের দিকে এমন মেঘের প্রভাবেই কলকাতা ও আশপাশে ঝড়-জল হয়েছে।

নির্ঘণ্ট অনুযায়ী, দক্ষিণবঙ্গে বর্ষা হাজির হওয়ার কথা ৮ জুন। তবে মৌসুমি বায়ু এ বছর তুলনায় দুর্বল থাকায় আবহবিজ্ঞানীরা আগেই জানিয়ে রেখেছিলেন, কেরল থেকে দক্ষিণবঙ্গে বর্ষার পৌঁছতে দেরি হবে। কত দেরি হবে, তা অবশ্য নিশ্চিত ভাবে বলা যায়নি। মৌসম ভবনের বক্তব্য, পেরু উপকূলে প্রশান্ত মহাসাগরের উষ্ণতাবৃদ্ধি (এল নিনো)-সহ নানা কারণে ভারতীয় ভূখণ্ডে বর্ষা পরিস্থিতি ঘোরালো, মৌসুমি বায়ুর গতি-প্রকৃতি অনেক বেশি খামখেয়ালি। তাই কেরলেও বর্ষা এসেছে দেরিতে ১ জুনের জায়গায় ৬ জুন। তার পরে আরবসাগরের নানৌকের টান কাটিয়ে সে আর দক্ষিণ ভারত ছেড়ে নড়তে পারছিল না।

অবশেষে অচলাবস্থার অবসান ঘটেছে। শক্তি হারিয়ে আরবসাগরের উপরেই প্রায় বিলীন হয়ে গিয়েছে নানৌক। তার সঙ্গে উজ্জ্বল হয়েছে বঙ্গের বর্ষা-ভাগ্য। আবহাওয়া অফিসের খবর, দিন দুয়েক আগে মধ্য বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণাবর্তটি এ দিন বাংলাদেশ উপকূলের কাছে চলে এসেছে। তার টানে বঙ্গোপসাগরের উপরে সক্রিয় হয়ে উঠেছে মৌসুমি বায়ু। নানৌকের বিপরীতমুখী আকর্ষণ না-থাকায় এ বার সে অবাধে পূর্ব ভারতের দিকে ছুটবে বলে আবহাওয়া দফতরের আশা। আলিপুরের খবর: আজ, সোমবারই দক্ষিণবঙ্গে প্রাক-বর্ষার বৃষ্টি-পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে। আগামিকাল মঙ্গলবার বিভিন্ন এলাকায় বিক্ষিপ্ত ভাবে প্রাক-বর্ষার বৃষ্টি শুরু হওয়ার সম্ভাবনা।

তিন দিনের মধ্যে দক্ষিণবঙ্গের দরজায় বর্ষার করাঘাত শোনার অপেক্ষায় রয়েছে হাওয়া অফিস।

rain in west bengal
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy