Advertisement
E-Paper

ছাড়পত্র ছাড়াই টাকা তুলেছিল সারদা ট্যুরস, বলছে চার্জশিট

রিজার্ভ ব্যাঙ্কের কোনও নিয়মেই তারা বাজার থেকে টাকা তুলতে পারে না। রেজিস্ট্রার অব কোম্পানিজ (আরওসি) কিংবা সেবি (সিকিওরিটি এক্সচেঞ্জ বোর্ড)-ও বাজার থেকে টাকা তোলার জন্য তাদের কোনও দিন অনুমতি বা ছাড়পত্র দেয়নি। তা সত্ত্বেও সারদা ট্যুরস অ্যান্ড ট্রাভেলস সংস্থা বাজার থেকে ১২৫৯ কোটি টাকা তুলেছিল। তার মধ্যে তারা ৯৮৮ কোটি টাকা ফেরত দেয়নি আমানতকারীদের।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৪ নভেম্বর ২০১৪ ০৩:০৬

রিজার্ভ ব্যাঙ্কের কোনও নিয়মেই তারা বাজার থেকে টাকা তুলতে পারে না। রেজিস্ট্রার অব কোম্পানিজ (আরওসি) কিংবা সেবি (সিকিওরিটি এক্সচেঞ্জ বোর্ড)-ও বাজার থেকে টাকা তোলার জন্য তাদের কোনও দিন অনুমতি বা ছাড়পত্র দেয়নি। তা সত্ত্বেও সারদা ট্যুরস অ্যান্ড ট্রাভেলস সংস্থা বাজার থেকে ১২৫৯ কোটি টাকা তুলেছিল। তার মধ্যে তারা ৯৮৮ কোটি টাকা ফেরত দেয়নি আমানতকারীদের।

‘সারদা ট্যুরস অ্যান্ড ট্রাভেলস’ সংক্রান্ত মামলায় আদালতে সারদা গোষ্ঠীর কর্ণধার সুদীপ্ত সেন, ওই সংস্থার অন্যতম ডিরেক্টর দেবযানী মুখোপাধ্যায় এবং তৃণমূল কংগ্রেসের সাসপেন্ড হওয়া সাংসদ কুণাল ঘোষের বিরুদ্ধে চার্জশিট পেশ করে এই অভিযোগ করেছে সিবিআই।

চার্জশিটে তদন্তকারী সংস্থার আরও অভিযোগ, সারদা ট্যুরস অ্যান্ড ট্রাভেলস ২০১০ সালে বাজার থেকে টাকা তুলতে শুরু করে। যে-সব আমানতকারী ওই সংস্থায় টাকা রেখেছিলেন, তাঁদের ঝুঁকি বেড়ে যাওয়ার কারণও ব্যাখ্যা করা হয়েছে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার চার্জশিটে। সিবিআইয়ের বক্তব্য, সেবি-র কাছ থেকে ‘কালেক্টিভ ইনভেস্টমেন্ট স্কিম’ চালানোর কোনও অনুমতিও নেয়নি সারদা ট্যুরস অ্যান্ড ট্রাভেলস। আমানতকারীদের ঝুঁকি বেড়ে যায় সেই কারণেই। একই গোষ্ঠীর সংস্থা সারদা রিয়েলটি ইন্ডিয়া লিমিটেডকে সেবি নির্দেশ দিয়েছিল, বাজার থেকে টাকা তোলার ব্যবসা গুটিয়ে ফেলে আমানতকারীদের টাকা ফেরত দিতে হবে। কিন্তু ওই সংস্থা তা করেনি।

চার্জশিটে তদন্তকারী অফিসার দাবি করেছেন, সারদা গোষ্ঠী যে অবৈধ ভাবে বাজার থেকে টাকা তোলে, কুণাল বিলক্ষণ তা জানতেন। কিন্তু নিজের লাভের কথা ভেবেই তিনি সারদা গোষ্ঠীর সঙ্গে সম্পর্ক রেখে চলছিলেন। সারদা গোষ্ঠীর আর্থিক সঙ্কটে কুণাল ওই সংস্থাকে ৫০ লক্ষ টাকা ধার দেন। সিবিআই চার্জশিটে বলেছে, এর থেকেই বোঝা যাচ্ছে, তিনি নিছকই সারদা গোষ্ঠীর এক জন কর্মী বলে কুণাল যে-দাবি করে আসছেন, তা অসত্য। সংবাদমাধ্যমের ব্যবসায় ‘পরামর্শ’ দেওয়ার নামে কুণাল সারদা গোষ্ঠীর কাছ থেকে অন্যায্য ভাবে নানান সুযোগ-সুবিধা নিতেন বলেও চার্জশিটে দাবি করা হয়েছে। সিবিআইয়ের অভিযোগ, কুণাল বা তাঁর সংস্থা ‘স্ট্র্যাটেজি মিডিয়া প্লাস কমিউনিকেশন প্রাইভেট লিমিটেড’-এর সার্ভিস ট্যাক্স রেজিস্ট্রেশন নম্বর ছিল না। তারা সার্ভিস ট্যাক্সও দিত না বলে চার্জশিটে জানানো হয়েছে।

সারদার আর্থিক কেলেঙ্কারিতে কোন কোন প্রভাবশালী ব্যক্তি লাভবান হয়েছেন, তদন্ত করে তা জানানোর জন্য সিবিআই-কে নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। তদন্ত শুরু করার ৮৫ দিনের মাথায়, গত ২২ অক্টোবর সারদা মামলার প্রথম চার্জশিট পেশ করে ওই কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা। তাতে অবশ্য তেমন প্রভাবশালী কারও নাম ছিল না। তবে সারদা ট্যুরস অ্যান্ড ট্রাভেলসের বিরুদ্ধে মামলায় দাখিল করা সেই চার্জশিটে সারদার অন্য তিনটি সংস্থার নাম রাখা হয়েছে। সেগুলো হল সারদা রিয়েলটি, সারদা হাউসিং এবং সারদা গার্ডেন হোটেল অ্যান্ড রিসর্টস। সেই সঙ্গে চার্জশিটে আছে কুণালের সংস্থা স্ট্র্যাটেজি মিডিয়ার নামও। সিবিআই জানায়, ২০০৮ সালের ৫ মার্চ থেকে ২০১২ সালের ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত দেবযানী মুখোপাধ্যায় সারদা ট্যুরস অ্যান্ড ট্রাভেলস সংস্থার এগ্জিকিউটিভ ডিরেক্টর ছিলেন। সারদা-প্রধান সুদীপ্ত সেন এবং দেবযানী জেনেবুঝে সাধারণ মানুষের সঙ্গে প্রতারিত করেছেন বলে চার্জশিটে অভিযোগ করা হয়েছে।

এ দিন সুদীপ্ত, দেবযানী এবং কুণালকে সিবিআই আদালতে বিচারক অরবিন্দ মিশ্রের এজলাসে হাজির করানো হয়। অভিযুক্ত ওই তিন জনের আইনজীবীরা তাঁদের মক্কেলদের জামিনের আবেদন জানান। আইনজীবীদের অভিযোগ, সিবিআই চার্জশিটের পূর্ণাঙ্গ প্রতিলিপি তাঁদের দেয়নি। সিবিআইয়ের আইনজীবী অভিযুক্তদের জামিনের বিরোধিতা করেন। দু’পক্ষের সওয়াল শুনে বিচারক নির্দেশ দেন, কী কারণে চার্জশিটের পূর্ণাঙ্গ প্রতিলিপি অভিযুক্তদের দেওয়া হয়নি, ৫ নভেম্বর সকাল সাড়ে ১০টায় তদন্তকারী অফিসারকে আদালতে হাজির হয়ে তা জানাতে হবে। বিচারকের নির্দেশ, অভিযুক্তেরা আগামী ১০ নভেম্বর পর্যন্ত জেল-হাজতে থাকবেন।

sudipto sen saradha tours and travels saradha scam
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy