Advertisement
E-Paper

ডাক্তারের অভাবে বন্ধ ক্যান্সার চিকিৎসাকেন্দ্র

চিকিত্সকের অভাবে চার বছর ধরে পুরসভার ক্যান্সার চিকিত্সাকেন্দ্র বন্ধ পড়ে রয়েছে। ফলে প্রতিদিনই রায়গঞ্জ সহ উত্তর দিনাজপুরের নানা এলাকার ক্যান্সারে আক্রান্তেরা কেমোথেরাপি সহ নানা চিকিত্সার জন্য কলকাতা ও শিলিগুড়ির বিভিন্ন হাসপাতালে যেতে বাধ্য হচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৮ জানুয়ারি ২০১৬ ০২:০৯

চিকিত্সকের অভাবে চার বছর ধরে পুরসভার ক্যান্সার চিকিত্সাকেন্দ্র বন্ধ পড়ে রয়েছে। ফলে প্রতিদিনই রায়গঞ্জ সহ উত্তর দিনাজপুরের নানা এলাকার ক্যান্সারে আক্রান্তেরা কেমোথেরাপি সহ নানা চিকিত্সার জন্য কলকাতা ও শিলিগুড়ির বিভিন্ন হাসপাতালে যেতে বাধ্য হচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। দীর্ঘদিন চিকিত্সাকেন্দ্র বন্ধ থাকলেও কেন রোগী-স্বার্থে চিকিত্সক নিয়োগ করে সেটি চালু করা হচ্ছে না, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে পুরসভার বিরোধী দল তৃণমূল।

তৃণমূল সূত্রের খবর, কিছু দিন আগে তৃণমূল সাংসদ তথা দলের জেলা পর্যবেক্ষক শুভেন্দু অধিকারী রায়গঞ্জে এসে দলীয় নেতা কর্মীদের পুরসভার বিরুদ্ধে আন্দোলনে নামার নির্দেশ দেন। সব ঠিক থাকলে, আগামী সপ্তাহে জানুয়ারি তৃণমূলের কর্মী সমর্থকেরা নাগরিক পরিষেবা সংক্রান্ত নানা দাবিতে পুরসভা ঘেরাও করে চেয়ারম্যানকে স্মারকলিপি জমা দেবেন। ওই দিন পুরসভা কর্তৃপক্ষের কাছে অবিলম্বে ক্যান্সার চিকিত্সা কেন্দ্রটি চালুর দাবি জানানো হবে।

এ ব্যাপারে পুরসভার চেয়ারম্যান রায়গঞ্জের কংগ্রেস বিধায়ক মোহিত সেনগুপ্ত ফোন না ধরায় তাঁর বক্তব্য জানা যায়নি। ভাইস চেয়ারম্যান তথা রায়গঞ্জ শহর কংগ্রেস সভাপতি রণজকুমার দাসের দাবি, আমরা দীর্ঘ দিন ধরে চেষ্টা করলেও কোনও চিকিত্সক কাজে যোগ দিতে রাজি না হওয়ায় চিকিত্সাকেন্দ্রটি চালু করা সম্ভব হচ্ছে না। তবে কিছুদিন আগে কেমোথেরাপি বিশেষজ্ঞ রায়গঞ্জের এক চিকিত্সকের সঙ্গে আমাদের কথা হয়েছে। আশা করছি, শীঘ্রই তাঁকে নিয়োগ করে কেন্দ্র চালু করা হবে।

পুরসভার স্বাস্থ্য পরিষেবা দেখভাল করার দায়িত্বপ্রাপ্ত কংগ্রেস কাউন্সিলর পবিত্র চন্দের দাবি, কেন্দ্রটি দীর্ঘ দিন ধরে বন্ধ থাকায় পরিকাঠামো বেহাল। চিকিত্সক নিয়োগ করার পাশাপাশি পরিকাঠামোর উন্নয়ন না হলে পরিষেবা দেওয়া সম্ভব নয়। পুরসভা সূত্রে খবর, ক্যান্সার রোগীর হয়রানি রুখতে মোহিতবাবুর উদ্যোগে ২০০৭ সালের ৯ ডিসেম্বর পুরসভার প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের একটি ঘরে চিকিত্সাকেন্দ্রটি চালু হয়। পুরসভার তরফে মালদহের এক ক্যান্সার রোগ বিশেষজ্ঞ চিকিত্সককে নিয়োগ করে কেন্দ্রটি চালু করা হয়। তিনি সপ্তাহে এক দিন ওই কেন্দ্রে এসে রোগীদের কেমোথেরাপি-সহ তাঁদের চিকিত্সা করে প্রয়োজনীয় পরামর্শ ও ওষুধ লিখে দিতেন। প্রয়োজনে রোগীদের উন্নত চিকিত্সার জন্য বাইরের হাসপাতালেও রেফার করে দেওয়া হত। পবিত্রবাবু জানান, কেন্দ্রটি চালু থাকাকালীন প্রতি সপ্তাহে গড়ে ২০ জন কেন্দ্রটিতে আসতেন। তাঁর দাবি, ২০১১ সালের ডিসেম্বরে ব্যক্তিগত কারণে চিকিত্সক ইস্তফা দেন। সেই থেকে চিকিত্সকের অভাবে কেন্দ্রটি বন্ধ। জেলায় বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক নেই, পাশাপাশি বাইরের চিকিত্সক রায়গঞ্জে এসে কাজ করতে রাজি না হওয়ায় পুর কর্তৃপক্ষ বহু চেষ্টা করেও কেন্দ্রটি চালু করতে পারেননি।

জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, জেলার কোনও সরকারি হাসপাতাল ও নার্সিংহোমে ক্যান্সার চিকিত্সার পরিকাঠামো না থাকায় জেলায় বর্তমানে কত জন আক্রান্ত রয়েছেন, সরকারি ভাবে সেই তথ্য নেই। স্বাস্থ্য দফতরের অনুমান, নয়টি ব্লক মিলিয়ে কয়েক হাজার আক্রান্ত রয়েছেন।

জেলা তৃণমূল সভাপতি অমল আচার্যের দাবি, প্রতিদিনই জেলার বহু রোগী চিকিত্সার জন্য কলকাতা ও শিলিগুড়ি যেতে গিয়ে হয়রানির শিকার হচ্ছেন। তাঁদের অনেক টাকাও খরচ হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘‘পুরসভার চিকিত্সাকেন্দ্র চালু থাকলে রোগীদের যেমন হয়রানির মুখে পড়তে হত না, তেমনি দুঃস্থদের টাকাও বেঁচে যেত।’’

পুরসভার বিরোধী দলনেতা তথা রায়গঞ্জ শহর তৃণমূল সভাপতি প্রিয়তোষ মুখোপাধ্যায়ের দাবি, তাঁরা দু’বছরে পুরসভার একাধিক বৈঠকে কেন্দ্রটি চালুর দাবি করে লাভ হয়নি। তিনি বলেন, ‘‘আমরাও শুনেছি চিকিত্সকের অভাবে নাকি কেন্দ্রটি চালু করতে পারছেন না পুর কর্তৃপক্ষ। রোগীদের স্বার্থে চার বছরে এক জন চিকিত্সককেও নিয়োগ করে কেনও কেন্দ্র চালু করা সম্ভব হল না, আমরা দলের তরফে আন্দোলনে সে কথাই পুর কর্তৃপক্ষের কাছে জানতে চাইব।’’

doctor cancer hospital closed
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy