বর্ধমানে এক নির্বাচনী জনসভায় রাষ্ট্রপতির নাম না-করে সারদার টাকা নেওয়ার অভিযোগ করেছিলেন রাজ্যের পরিবহণমন্ত্রী মদন মিত্র। স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী অফিসার (সিইও)-এর কাছে সেই বক্তৃতার সিডি চেয়ে পাঠাল নির্বাচন কমিশন। সেই সঙ্গে ওই সভার রিপোর্ট পাঠানোর জন্যও সিইও-কে নির্দেশ দিয়েছে তারা।
রবিবার তৃণমূলের জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলকে নিয়ে কেতুগ্রাম হাইস্কুলের মাঠের ওই সভায় যান মদনবাবু। ‘সিপিএমের কায়দায় ভোট’ করার ডাক দিয়ে সারদা প্রসঙ্গে চলে যান তিনি। নাম না-করে টেনে আনেন রাষ্ট্রপতি ও তাঁর পরিবারের কথা। বলেন, “সারদাকে টাকা তোলার অনুমতি কে দিয়েছে? হিম্মত থাকলে ইডি তা বার করুক। যারা অনুমতি দিয়েছে, তাদের মধ্যে রিজার্ভ ব্যাঙ্কও রয়েছে। তা হলে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের গভর্নরকে গ্রেফতার করা হবে না কেন? চিদম্বরমের (কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী) স্ত্রী নলিনীদেবী সারদার কালো টাকার হিসেব রাখতেন। তাঁরাই বা গ্রেফতার হবেন না কেন? ভারতের সর্বোচ্চ পদে যিনি রয়েছেন, তৎকালীন কংগ্রেসের নেতা, তাঁর ছেলেমেয়েরাও বীরভূমের মাটি থেকে সারদার টাকা নিয়েছেন। সারদার কত টাকা নিয়েছেন, তা ঘোষণা করতে হবে।”
মদনবাবুর এই বক্তৃতা নিয়ে শোরগোল পড়ে যায়। কোনও দল অভিযোগ না-করলেও কমিশন মঙ্গলবার সিইও-র কাছে রিপোর্ট চায়। সিইও-র দফতরের এক কর্তা জানান, বর্ধমানের জেলাশাসককে বলা হয়েছে, সে-দিন মন্ত্রী কী বলেছিলেন, দ্রুত তার সিডি পাঠান। জেলা প্রশাসনের রিপোর্টও চাওয়া হয়েছে।
কমিশনের নির্দেশ যখন রাজ্যে পৌঁছয়, ঘটনাচক্রে মদনবাবু তখন বীরভূমের কীর্ণাহারে সভা করছিলেন। রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়ের পৈতৃক বাড়ি ওখানেই। দেশের সাংবিধানিক সর্বোচ্চ পদে বসার পরেও ওই গ্রামে গিয়েছেন রাষ্ট্রপতি। কমিশনের নির্দেশ মদনবাবুকে জানানো হলে তাঁর প্রতিক্রিয়া, “নির্বাচন কমিশনের রিপোর্ট চাওয়ার অধিকার আছে। আমারও উত্তর দেওয়ার অধিকার আছে। ওরা জানতে চাইলে আমি উত্তর দেব। যা সত্যি, সেটাই বলব।”
মঙ্গলবারেও সাঁইথিয়ার আমোদপুরে চিদম্বরম এবং তাঁর পরিবারকে একহাত নেন। তাঁর অভিযোগ, সারদার যে কয়েক হাজার কোটি টাকা নয়ছয় হয়েছে, তার মূলে আছেন চিদম্বরম। তাঁকে গ্রেফতার করা হবে না কেন, প্রশ্ন তোলেন তিনি। মদনবাবু বলেন, “আমি রাষ্ট্রপতির বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ করিনি। কিন্তু সারদা যখন টাকা নয়ছয় করছিল, তখন দেশের অর্থমন্ত্রী কে ছিলেন? তাঁর বিরুদ্ধে তদন্ত হবে না কেন। আইনের ঊর্ধ্বে কেউ নয়। লালুপ্রসাদ যাদব, সঞ্জয় দত্ত-সহ অনেকেই জেলে গিয়েছেন। রাজনীতিতে জেলে যাওয়াটা স্টেটাস। পরোয়া করি না।”
তৃণমূল ভবনে এক সাংবাদিক বৈঠকের পরে দলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে এই নিয়ে প্রশ্ন করা হয়। তিনি বলেন, “আইন থাকলে কমিশন সিডি চেয়ে পাঠাতেই পারে। তবে আমি অভিযোগ নয়, তথ্যকে সমর্থন করি। মদনবাবু কী বলেছেন, তা আমি জানি না।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy