আদিবাসী সমাজের সালিশি সভা বা বাইসিগুলি নিয়ে অবস্থান পরিষ্কার করুক রাজ্য, এই দাবিতে আজ, বৃহস্পতিবার রাজ্য সরকারের কাছে স্মারকলিপি দেবে ভারত জাকাত মাঝি পরগনা মহল। থাকবেন ওড়িশা, ঝাড়খণ্ড ও পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জেলার আদিবাসীরা। সংগঠনের দাবি, গত ২৩ জানুয়ারি বীরভূমের সুবলপুর গ্রামে এক আদিবাসী তরুণীকে গণধর্ষণের অভিযোগ প্রকাশ্যে আসার পরে আদিবাসীদের বাইসিগুলিকে সালিশি সভা বা খাপ পঞ্চায়েতের সঙ্গে এক করে দেখা হচ্ছে। খাপ ও সালিশি বেআইনি, সেখানে আদিবাসীদের নিজেদের সভা করার অধিকার রয়েছে ভারতের সংবিধানের পেসা আইন (১৯৯৬) অনুযায়ী। সংগঠনের আশঙ্কা, সালিশি সভার সঙ্গে এক করে দেখা হচ্ছে আদিবাসীদের বাইসিগুলিকে। তা বেআইনি বলা মানে, আদিবাসী সমাজের অধিকার খর্ব করা। এর প্রতিবাদে আজ মুখ্যমন্ত্রীর কাছে স্মারকলিপি দেবেন তাঁরা। প্রয়োজনে আন্দোলনেও নামবেন।
গত ২৩ জানুয়ারি বীরভূমের লাভপুরের সুবলপুর গ্রামে এক আদিবাসী মেয়েকে গণধর্ষণের অভিযোগ ছড়িয়ে পড়তেই বিভিন্ন মহলে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা যায়। ওই সংগঠনের দাবি, ঘটনার পরে ২৫ জানুয়ারি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও রাজ্যপাল এম কে নারায়ণন বলেছিলেন, সালিশি সভাগুলি বেআইনি। আদিবাসীদের সভাগুলি নিয়ে পরিষ্কার করে অবস্থান জানায়নি রাজ্য। ভারত জাকাত মাঝি পরগনা মহলের অভিযোগ, এই ভাবে তাঁদের সমাজের উপর আঘাত আনা হচ্ছে।
সংগঠনের দিশম মাঝি নিত্যানন্দ হেমব্রম বলেন, “ওই ঘটনায় আদিবাসীদের কোনও ভূমিকা ছিল না। যাদের এখন ধরা হয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে এখনও কোনও চার্জশিট দিতে পারেনি পুলিশ। আদিবাসী মোড়ল নির্দেশ দিয়েছেন বলে অভিযোগ করা হয়েছে। কিন্তু ওই সালিশি সভায় কোনও সাঁওতাল প্রতিনিধিই ছিলেন না। সেক্ষেত্রে সিবিআই তদন্তের দাবি জানাচ্ছি আমরা। আদিবাসীদের গ্রামসভাগুলি নিয়ে সরকারের অবস্থান পরিষ্কার করা হচ্ছে না। আমাদের ধারণা, গ্রামসভাগুলিকে বেআইনি করার চেষ্টা চলছে। বেআইনি ভাবে চলা খাপ পঞ্চায়েত ও অন্যান্য সালিশি সভাগুলির সঙ্গে আদিবাসীদের গ্রামসভাগুলি মিলিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। আমরা বিষয়টি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী ও রাজ্য সরকারের কাছে প্রতিবাদপত্র পেশ করব। তাঁরা যদি না মানেন তবে আন্দোলনে নামা ছাড়া আর কোনও রাস্তা খোলা থাকবে না।” প্রসঙ্গত, পেসা আইন (১৯৯৬) অনুযায়ী, নিজেদের মধ্যে সভা করে করে নিজস্ব নীতি নির্ধারণের অধিকার রয়েছে আদিবাসীদের।
লাভপুরের বিডিও জীবনকৃষ্ণ বিশ্বাস বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী আদিবাসীদের নিজস্ব সভা বন্ধ করতে হবে বলে এমন কোনও বিশেষ নির্দেশ আমাদের দেননি। তবে সাধারণ ভাবে সালিশি সভা বন্ধ করার জন্য যা প্রশাসনিক পদক্ষেপ নেওয়ার কথা, তা আমরা নিচ্ছি।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy