স্কুলে স্কুলে দুপুরের খাবার দেওয়া হলেও তার পুষ্টিমান নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে। এই অবস্থায় খাবারের মান বজায় রাখার জন্য মিড-ডে মিল প্রকল্পে কেন্দ্রীয় বরাদ্দ বাড়ানোর অনুরোধ জানালেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। শুধু খাবারের খাতে বরাদ্দ বৃদ্ধি নয়, এই প্রকল্পে পরিকাঠামো খাতেও কেন্দ্রীয় অনুদানের জন্য আর্জি জানান তিনি।
বৃহস্পতিবার কলকাতায় কেন্দ্রীয় সরকারেরই একটি অনুষ্ঠানে পার্থবাবু এই আবেদন জানান। অনুষ্ঠানে উপস্থিত কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রকের অধিকর্তা গয়া প্রসাদ পরে জানান, প্রতি বছরই মিড-ডে মিলের বরাদ্দ বাড়ানো হয়। তবে বর্ধিত বরাদ্দও পড়ুয়াদের পুষ্টিকর খাবার দেওয়ার জন্য যথেষ্ট নয় বলে রাজ্যের স্কুলশিক্ষা দফতরের কর্তারা জানান।
মিড-ডে মিল প্রকল্প বরাদ্দের ৭৫% কেন্দ্র এবং ২৫% দেয় রাজ্য। এখন এই প্রকল্পে প্রাথমিক স্তরে পড়ুয়া-পিছু তিন টাকা ৬৯ পয়সা এবং উচ্চ প্রাথমিকে পড়ুয়া-পিছু পাঁচ টাকা ৩৮ পয়সা কেন্দ্রীয় বরাদ্দ দেওয়া হয়। কিন্তু জ্বালানির খরচ ধরে এই অর্থের মধ্যে পুষ্টিকর খাবার দেওয়া কার্যত অসম্ভব বলে জানাচ্ছে রাজ্যের স্কুলশিক্ষা দফতর। তাই অনেক সময়েই ২৫ শতাংশের অতিরিক্ত টাকা খরচ করতে হয় রাজ্যকে। কিন্তু তাতেও কুলিয়ে ওঠা যায় না। এই পরিস্থিতিতে স্কুলশিক্ষা দফতরের দাবি, কেন্দ্রই বরাদ্দ বাড়িয়ে দিক।
পশ্চিমবঙ্গ, ত্রিপুরা, অসম-সহ উত্তর-পূর্বাঞ্চলের ন’টি রাজ্যে মিড-ডে মিলের বার্ষিক পরিকল্পনা ও বাজেট নিয়ে আলোচনার জন্য দু’দিনের কর্মশালার আয়োজন করেছে কেন্দ্র। বৃহস্পতিবার ছিল তার প্রথম দিন। সেখানেই বরাদ্দ বাড়ানোর আবেদন জানান বাংলার শিক্ষামন্ত্রী। অনুষ্ঠান থেকে বেরোনোর সময় সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে ফের তিনি বলেন, “বরাদ্দ না-বাড়ালে খাবারের মান ভাল হবে না। সেই জন্যই বরাদ্দ বাড়াতে অনুরোধ জানিয়েছি।”
পরিসংখ্যান দিয়ে পার্থবাবু জানান, দেশে প্রায় ১০ কোটি ছাত্রছাত্রী মিড-ডে মিল পায়। তার মধ্যে পশ্চিমবঙ্গে এই প্রকল্পের আওতায় থাকা পড়ুয়ার সংখ্যা এক কোটি ৩১ লক্ষ। তাই রাজ্যকে কেন্দ্রের কিছু বাড়তি বরাদ্দ দেওয়া উচিত বলে মনে করেন শিক্ষামন্ত্রী। তাঁর দাবি, রাজ্যে ৯৯.৯৭% প্রাথমিক এবং ৯৯.৮৫% উচ্চ প্রাথমিক স্কুলে মিড-ডে মিল চালু হয়ে গিয়েছে। বাকি মাত্র ৪০টি স্কুল। সেগুলিতেও এই প্রকল্প চালু করার ব্যাপারে কথাবার্তা চলছে।
কেন্দ্র কি স্কুলে দুপুরের খাবারের খাতে বরাদ্দ বাড়ানোর কথা ভাবছে? গয়া প্রসাদ বলেন, “বরাদ্দ প্রতি বছরই ৭.৫% হারে বাড়ানো হয়।” অনুষ্ঠানে তিনি জানান, অনেক সময় রাজ্যগুলির কাছে খরচ সংক্রান্ত তথ্য চেয়েও পাওয়া যায় না। পার্থবাবু অবশ্য পরে দাবি করেন, পশ্চিমবঙ্গের ক্ষেত্রে এই অভিযোগ খাটে না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy