সারদা গোষ্ঠীর ৩৮৮টি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের খোঁজ পাওয়া গিয়েছিল আগেই। ওই গোষ্ঠীর কর্ণধার সুদীপ্ত সেনের ছেলে শুভজিৎকে জেরা করে সারদার আরও ৭০টি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের হদিস পেয়েছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট বা ইডি। তাদের দাবি, ওই সব অ্যাকাউন্ট শুধু পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন ব্যাঙ্কে নয়, অন্যান্য রাজ্যেও রয়েছে। তার মধ্যে কয়েকটি অ্যাকাউন্ট ওড়িশাতেও রয়েছে বলে ইডি-র তরফে বৃহস্পতিবার আদালতে জানানো হয়।
ইডি-ই এর আগে সারদার ৩৮৮টি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের সন্ধান পেয়েছিল। ওই কেন্দ্রীয় সংস্থা বৃহস্পতিবার আদালতে জানায়, পরবর্তী কালে তদন্ত চালিয়ে সারদার নতুন ওই অ্যাকাউন্টগুলির খোঁজ মিলেছে। ইডি-র পক্ষ থেকে এ দিনই সারদা গোষ্ঠীর আর্থিক কেলেঙ্কারির তদন্তে অগ্রগতির একটি রিপোর্ট কলকাতার নগর ও দায়রা আদালতের (বিচার ভবন) মুখ্য বিচারক মহম্মদ মুমতাজ খানের আদালতে জমা দেওয়া হয়েছে। সেই রিপোর্টেই সারদার নতুন ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টগুলির হদিস মেলার কথা জানিয়েছেন ইডি-র তদন্তকারীরা।
ইডি সূত্রের খবর, নতুন খোঁজ পাওয়া ওই সব অ্যাকাউন্টের বেশ কয়েকটি সুদীপ্ত, তাঁর ছেলে শুভজিৎ এবং সারদা গোষ্ঠীর অন্যতম ডিরেক্টর দেবযানী মুখোপাধ্যায়ের নামে খোলা হয়েছিল। এ ছাড়া অন্যান্য ভুয়ো সংস্থার নামেও কিছু অ্যাকাউন্ট খোলা হয়েছে বলে ইডি-র সন্দেহ। আগে সারদা গোষ্ঠীর যে-৩৮৮টি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের হদিস পাওয়া গিয়েছিল, তার মধ্যে ২৮০টিই ছিল ভুয়ো। ইডি-র দাবি, কর ফাঁকি দেওয়ার জন্যই ওই সব অ্যাকাউন্ট খোলা হয়েছিল।
সারদা গোষ্ঠীর ব্যবসা ওড়িশা, অসম, ত্রিপুরা, বিহারেও ছড়িয়েছিল বলে ইডি আগেই জানিয়েছে। এ দিন তদন্তকারীরা জানান, ওড়িশায় বিভিন্ন মামলার মধ্যে অবৈধ উপায়ে টাকা পাচারের অভিযোগও আছে। সেই ঘটনায় একটি পৃথক মামলা দায়ের করে সুদীপ্তকে নিজেদের হেফাজতে নেওয়ার কথা ভাবছেন তাঁরা।
সারদার নতুন ৭০টি অ্যাকাউন্টের কথা জানা গেল কী ভাবে? ইডি সূত্রের খবর, শুভজিৎকে জেরা করে ওই সব অ্যাকাউন্টের হদিস মিলেছে। একই সঙ্গে ওই কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার দাবি, নতুন খোঁজ পাওয়া অ্যাকাউন্টগুলিতে মোটা টাকার নগদ লেনদেন হয়েছে। ওই সব অ্যাকাউন্টে কখন, কী ভাবে, কোথা থেকে কত আর্থিক লেনদেন হয়েছে, সেই ব্যাপারে ব্যাঙ্কগুলির কাছ থেকে রিপোর্ট চেয়েছে ইডি। তদন্তকারীদের ধারণা, অ্যাকাউন্টগুলিতে এখনও নগদ টাকাও থাকতে পারে।
শুভজিৎ তাঁর আইনজীবী মারফত জামিনের আর্জি জানান। জামিনের বিরোধিতা করে ইডি-র আইনজীবী অভিজিৎ ভদ্র ও ভাস্করপ্রসাদ বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, শুধু পশ্চিমবঙ্গে নয়, ভিন্ রাজ্যেও নানা ভাবে টাকা পাচার করেছেন অভিযুক্তেরা। সেই টাকার কিছ হদিস মিললেও অনেকটাই জানা যায়নি। অভিযুক্তকে জামিন দেওয়া হলে তথ্যপ্রমাণ লোপাট করে দেওয়া হতে পারে।
বিচারক জামিনের আবেদন নাকচ করে ২৭ জুন এই মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করেছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy