বারাসত পাইওনিয়ার ক্লাবের মণ্ডপ তৈরির কাজ চলছে।
কাউন্টডাউন শুরু হয়ে গিয়েছে। সাজো সাজো রব বারাসতে। সাজছে মধ্য কলকাতাও।
এ পুজোয় বারাসতের নবপল্লি সর্বজনীন বদলে যাবে বেঙ্গালুরুতে। কৃষ্ণলীলা পার্কে ঢুকলেই ম্যুরালে তিনটি বিশাল মন্দির। ১০৩ ফুট উঁচু ভেঙ্কটেশ মন্দিরে কৃষ্ণ-কালীর সহাবস্থান। মন্দিরগাত্রে কৃষ্ণলীলার নিদর্শন, জগন্নাথ এবং নরসিংহ মন্দির নজর কাড়বে। পার্কে থাকবে পরিবেশ সচেতনতার ভাবনা। কেএনসি রেজিমেন্টে এ বার মার্বেলে তৈরি প্যারিসের অপেরা হাউস। ভিতরে মার্বেলের উপরে কারুকাজ। সিলিং জুড়ে হাতে আঁকা ছবি ও অপরূপ প্রতিমা।
এ বারও জনসমুদ্র হবে বারাসত স্টেশন সংলগ্ন পাইওনিয়ার অ্যাথলেটিক ক্লাবে। কারণ, পুকুরের পাশে তৈরি হচ্ছে হিমাচলের কাংরা উপত্যকার মাশরুর রককাট টেম্পল। মূল মন্দিরে চামুন্ডার পাশে মহাভারত। পাণ্ডবদের বনবাসের সময়ে তৈরি এই মন্দিরের গা ভরা কারুকার্য। মাঠে বসবে মেলা।
সন্ধানীর থিম সূর্য। সূর্যমুখীর আকারের মণ্ডপে পাপড়ির মধ্যে প্রতিমা। রেণুর বদলে অসংখ্য মুখ। চাক থেকে ধেয়ে আসবে মৌমাছি। মাঠে বসবে মেলা। অন্যতম প্রাচীন পুজো রেজিমেন্ট প্লাইউড, ছোট-বড় চামচ দিয়ে রাজস্থানের মন্দির তৈরি করছে। প্রতিমার দু’পাশে শিল্পের নিদর্শন। নবপল্লি ব্যায়াম সমিতিতে রাজস্থানের মন্দিরে ১৪ হাত বিশাল ঠাকুরের সোনার জিভ, রূপোর মুকুট। শান্তির প্রতীক প্যারিসের গির্জার দেখা মিলবে বিদ্রোহীতে। তারাপীঠ, দক্ষিণেশ্বর এবং কালীঘাট প্রতিমায় তিন রূপ।
ছাত্রদলের মণ্ডপ হচ্ছে রামায়ণের নানা ঘটনা নিয়ে। খেজুর গাছের নানা উপকরণ দিয়ে মণ্ডপসজ্জা। আলোর থ্রি-ডিতে বাউল, বুদ্ধের নির্বাণ এবং শ্রীরামকৃষ্ণের কল্পতরু দেখানো হবে। ন’পাড়ার চেকপোস্টের কাছে পঞ্চপল্লির ঝিনুক ও পাথরকুচি দিয়ে দক্ষিণ ভারতীয় আদলে মণ্ডপ। ভিতরে রামায়ণের নানা দৃশ্য। প্রতিমার দু’ধারে মহিরাবণ বধ ও রামের চক্ষুদান। শতদল সঙ্ঘে তৈরি হচ্ছে ভেলরের স্বর্ণমন্দির। প্রতিমার দু’পাশে রামায়ণ-মহাভারতের গল্প। সাউথ ভাটরা পল্লিতে কামারপুকুর, জয়রামবাটিতে শ্রীশ্রী রামকৃষ্ণদেব এবং মা সারদার জন্মস্থান। বিহারের মিথিলার মৈথিলি শিল্পের কাজ দেখা যাবে তরুছায়াতে।
কেএনসি-র পুজো মণ্ডপে কাজ চলছে।
ছোটা ভীম, চুটকি, কালিয়া, ঢোলু-ভলুকে নিয়ে সাম্য সঙ্ঘে সদলবলে হাজির ছোটা ভীম। শক্তিমন্দিরে বসছে গোপাল ভাঁড়ের রথের মেলা। কয়েৎবেল, সুপারি, লবঙ্গ এলাচ, জলপাই দিয়ে তৈরি রাজস্থানের মন্দির তৈরি করছে বামনমুড়া ইয়ং স্টার ক্লাবে। এ ছাড়াও আগুয়ান সঙ্ঘে ২০০ বছরের পুরনো রাজবাড়ি, যুবগোষ্ঠীর বীরভূমের এক মন্দির, বালকবৃন্দ ক্লাবের বিষ্ণুপুরের টেরাকোটার মন্দির, কৈলাশনগর মৈত্রী সঙ্ঘে বিজ্ঞানের অগ্রগতির ফলে প্রাকৃতিক অবক্ষয়, নাইন স্টারে অজন্তা পাহাড় এবং মেঘদূত শক্তি সঙ্ঘে ‘পদ্মের গর্ভে দুর্গার জন্ম’-ও নজর কাড়বে। তবে শুধু আনন্দ নয় কালীপুজোয় বারাসতে চাঁদার জুলুম এবং গণ্ডগোলেরও অভিযোগ নেই বলে জানালেন পুলিশ সুপার তন্ময় রায়চৌধুরী।
অন্য দিকে, কালীপুজোয় মধ্য কলকাতা বরাবরই আলাদা জায়গা করে নিয়েছে। আমহার্স্ট স্ট্রিটের সাধারণ শ্রীশ্রী কালীপুজো এবং নব যুবক সঙ্ঘের পুজোর মধ্যে টক্কর চলছে এ বারও। সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউয়ের কলুটোলা থেকে মহাত্মা গাঁধী রোড সাজিয়ে তুলছে ৪৭ পল্লি সর্বজনীন। মহম্মদ আলি পার্কে তাদের মণ্ডপ। এই পুজোর বিশেষ আকর্ষণ হল ভোগ।
মধ্য কলকাতায় কলেজ স্ট্রিটের খেয়ালি খেলাঘরের পুজো এ বার ১৭৬ বছরে পা দিল। প্রাচীন এই পুজোয় মাতৃমূর্তি সনাতন। পটুয়াটোলা লেনের নব রবীন সঙ্ঘ এ বারও দর্শক টানবে। শিয়ালদহের বৈঠকখানা পল্লির পুজোয়ও অভিনবত্বের ছোঁয়া। গণেশচন্দ্র অ্যাভিনিউয়ের অনুকুল স্মৃতি সঙ্ঘের প্রধান আকর্ষণই হল অন্নকূট উৎসব। বৌবাজার থেকে শ্রদ্ধানন্দ পার্ক পর্যন্ত আলোর নানা কেরামতি দেখা যাবে একতা সঙ্ঘ, যুবশ্রী ও বালক সঙ্ঘের সৌজন্যে।
ছবি: সুদীপ ঘোষ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy