Advertisement
E-Paper

সংসদ-হাটে কি কালো হাঁড়ি ভাঙবে তৃণমূল

দু’দিন আগে কালো ছাতা। আজ কালো চাদর। সংসদে রুদ্ধশ্বাস কৌতুহল, এরপর কী? অন্য দলের এক সাংসদ মজা করে বাজি ধরছেন, “কাল দেখবেন শাড়ি।” অন্য এক জন বলছেন, “না, না টুপি!” কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতিশ্রুতি মাফিক বিদেশে গচ্ছিত কালো টাকা দেশে ফিরিয়ে আনার দাবিতে আগে কালো ছাতা নিয়ে সংসদের গেটের সামনের সিঁড়িতে ধর্নায় বসেন তৃণমূল সাংসদেরা।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৮ নভেম্বর ২০১৪ ০৩:১৩
সংসদের বাইরে কালো শাল গায়ে প্রতিবাদ তৃণমূল সাংসদদের। বৃহস্পতিবার নয়াদিল্লিতে। ছবি: পিটিআই।

সংসদের বাইরে কালো শাল গায়ে প্রতিবাদ তৃণমূল সাংসদদের। বৃহস্পতিবার নয়াদিল্লিতে। ছবি: পিটিআই।

দু’দিন আগে কালো ছাতা। আজ কালো চাদর। সংসদে রুদ্ধশ্বাস কৌতুহল, এরপর কী? অন্য দলের এক সাংসদ মজা করে বাজি ধরছেন, “কাল দেখবেন শাড়ি।” অন্য এক জন বলছেন, “না, না টুপি!”

কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতিশ্রুতি মাফিক বিদেশে গচ্ছিত কালো টাকা দেশে ফিরিয়ে আনার দাবিতে আগে কালো ছাতা নিয়ে সংসদের গেটের সামনের সিঁড়িতে ধর্নায় বসেন তৃণমূল সাংসদেরা। তাঁদের দর্শন, ‘কালো’ দিয়ে ‘কালো’ তোলা! তৃণমূল নেত্রীর নির্দেশেই এই অভিনব প্রতিবাদের পথ বেছে নিয়েছিলেন তাঁরা। কিন্তু এই ছাতাপর্ব লোকসভার ভিতরেও চলায় যারপরনাই ক্ষুব্ধ স্পিকার সুমিত্রা মহাজন। তিনি কড়া নির্দেশিকা দিয়েছেন, এ ভাবে চললে সংশ্লিষ্ট সাংসদদের সাসপেন্ড করা হতে পারে। এই নির্দেশ পাওয়ার পরেই লোকসভায় তৃণমূলের দলনেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় পরিকল্পনা নেন, এমন কিছু করতে হবে যাতে ‘কালো প্রতিবাদ’ অক্ষুণ্ণ থাকে, কিন্তু চোখের সামনে প্রতিবাদের ‘রঙ’ দেখেও স্পিকার কিছু বলতে না পারেন। স্থির হয়, আজ কালো চাদর জড়িয়ে আসবেন সব সাংসদ। পুরুষরা কালো চাদর পরবেন। মহিলা সাংসদেরা কালো চাদর তো নেবেনই, কালো শাড়ি পরলেও ভাল ।

দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল শুভেন্দু অধিকারীকে। সাংসদের উদ্যোগে গতকাল সন্ধ্যায় ৪০টি কালো চাদর কলকাতা থেকে দিল্লি এসে পৌঁছয়। তারপর তা বণ্টন করা হয় সাংসদদের মধ্যে। অনেকে কালো শাড়ির সঙ্গে (কাকলি ঘোষ দস্তিদার) কালো চাদর পরেছিলেন, আবার কেউ ধবধবে সাদা কুর্তা-পাজামার (ডেরেক ও ব্রায়েন) সঙ্গেই কালো শাল অঙ্গে জড়ান। আজ সকালে সংসদ শুরু হওয়ার আগে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দলের নেতারা সংসদে ঢোকার মুখের সিঁড়িতে সমবেত হন। দু’দিন আগে সেখানেই ছাতা হাতে দেখা গিয়েছিলে তাঁদের। তবে খুব দীর্ঘক্ষণ নয়, আজ স্লোগানের মেয়াদ ছিল মিনিট পাঁচেক। কালো টাকা ফেরত আনা, বিজেপির সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা, বিশেষ কর্পোরেট সংস্থাকে সুবিধা দেওয়ার মতো অভিযোগগুলোও আজ উঠে আসে তাঁদের স্লোগানে। গোটা দিনই সংসদে কালো চাদর জড়িয়ে ছিলেন তাঁরা।

তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ ডেরেক ও ব্রায়েন পরে বলেন, “গোটা চারেক চাদর বাড়তি হয়েছিল। সংসদীয় কর্মীরা চান। তাই দিয়ে দিয়েছি।” সংসদ চলবে ২৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত। তৃণমূলের আন্দোলন কিন্তু থামছে না। তৃণমূলের বোলপুরের সাংসদ অনুপম হাজরা জানাচ্ছেন, “এর পর কালো মাটির হাঁড়ি নিয়ে আসব।” সংসদের হাটে সেই হাঁড়ি ভাঙা হবে কি না, তা অবশ্য স্পষ্ট করেননি তৃণমূল নেতারা!

প্রণবকেই ঢাল করে পাল্টা চাল

কালো টাকা নিয়ে বিরোধীদের প্রশ্নের জবাবে প্রণব মুখোপাধ্যায়কে ঢাল করে পাল্টা আক্রমণে গেল নরেন্দ্র মোদী সরকার। কংগ্রেস-সহ বিরোধীদের অভিযোগ ছিল, লোকসভা ভোটের প্রচারে নরেন্দ্র মোদী একশো দিনের মধ্যে কালো টাকা দেশে ফেরানোর কথা বললেও কার্যক্ষেত্রে তা হয়নি। বরং আইনি গেরোর কথা বলে সরকার পিছিয়ে যাচ্ছে। জবাবে বৃহস্পতিবার প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী তথা বর্তমান রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়ের যুক্তিকেই ঢাল হিসেবে ব্যবহার করেন সংসদীয় মন্ত্রী বেঙ্কাইয়া নায়ডু। তিনি বলেন, “অর্থমন্ত্রী থাকার সময় বর্তমান রাষ্ট্রপতি কালো টাকা নিয়ে শ্বেতপত্র প্রকাশ করেন, তাতে যে সব আইনি সমস্যার কথা বলা হয়েছিল, আমরাও সেই একই কথা বলছি। যে তথ্য মিলেছে, তা সংসদেও প্রকাশ না করার শর্ত রয়েছে। শুধু কর আদায়ে সেই তথ্য ব্যবহার করা যাবে।” তাঁর আরও বক্তব্য, “আমরা কখনওই বলিনি, একশো দিনের মধ্যে সব কালো টাকা ভারতে ফিরে আসবে। আমরা বলেছিলাম, কালো টাকা ফেরনোর প্রক্রিয়া শুরু হবে।”

tmc parliament black money protest
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy