দালালদের দাপট থেকে ক্রেতা ও কৃষকদের রেহাই দিতে ন্যাশনাল ডেয়ারি ডেভেলপমেন্ট বোর্ডের (এনডিডিবি) সঙ্গে গাঁটছড়া বাঁধল রাজ্য সরকার। বৃহস্পতিবার নবান্নে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে এনডিডিবি-র চেয়ারম্যান নন্দকুমারের বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে, সরাসরি কৃষকদের কাছ থেকে সব্জি ও ফল কিনে ক্রেতাদের কাছে ন্যায্য দামে পৌঁছে দিতে একটি কোম্পানি গঠন করা হবে। এনডিডিবি ছাড়াও কেন্দ্রীয় সরকারের অধীন স্মল ফার্মার্স এগ্রি-বিজনেস কনসর্টিয়াম (এসএফএসি) ও একটি রাজ্য সরকারি সংস্থা ওই যৌথ উদ্যোগের সদস্য হবে।
নবান্ন সূত্রের খবর, ‘পাইলট প্রজেক্ট’ হিসেবে পুজোর আগেই কলকাতা ও সল্টলেকে সব্জি ও ফলের বেশ কিছু খুচরো বিপণি চালুর পরামর্শ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। এনডিডিবি তা মেনে নিয়েছে। সরকারের পরিকল্পনা, ধাপে ধাপে বৃহত্তর কলকাতার বিভিন্ন এলাকায় ওই বিপণি খোলা হবে। ভবিষ্যতে কলকাতার বাইরে পুলিশ কমিশনারেটগুলিতে তা ছড়িয়ে দেওয়া হবে।
দিল্লিতে মাদার ডেয়ারির তত্ত্বাবধানে ‘সফল’ নামে সব্জি, ফল ও ডেয়ারিজাত দ্রব্যের যে খুচরো বিপণি চলছে, অনেকটা সেই আদলই হবে এ রাজ্যে। এক সপ্তাহের মধ্যে কোম্পানি তৈরির খসড়া চূড়ান্ত করতে বলা হয়েছে কৃষি বিপণন দফতরকে। নবান্ন সূত্রের খবর, গত বছরের সেপ্টেম্বরে রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠকে রাজ্যে কৃষি পণ্যের ব্যবসায় বেসরকারি পুঁজি টানতে ‘বৃহৎ কৃষক বাজার যোজনা’ নামে একটি প্রকল্প গৃহীত হয়েছিল। উদ্দেশ্য ছিল, বেসরকারি বিনিয়োগ কাজে লাগিয়ে ক্রেতাদের কাছে ন্যায্য মূল্যে কৃষি পণ্য পৌঁছে দেওয়া। কিন্তু সরকার যতটা আশা করেছিল বেসরকারি উদ্যোগীরা তেমন সাড়া দেননি ওই প্রকল্পে। তাই কোনও ঝুঁকি না নিয়ে এ বার সরাসরি কেন্দ্রীয় সংস্থার সঙ্গেই হাত মিলিয়ে ওই প্রকল্প বাস্তবায়িত করার লক্ষে মাঠে নামছে রাজ্য সরকার।
কী ভাবে কাজ করবে প্রস্তাবিত ওই নতুন কোম্পানি? রাজ্য সরকারের এক মুখপাত্র বলেছেন, নতুন সরকার ক্ষমতায় আসার পরে রাজ্যের বিভিন্ন ব্লকে কৃষক বাজার তৈরির কাজ শুরু হয়েছে। হুগলি, উত্তর ২৪ পরগনা, বর্ধমান, নদিয়ায় বেশ কিছু কৃষক বাজার তৈরির কাজ শেষের মুখে। ওই বাজারগুলিকে কেন্দ্র করেই কৃষক গোষ্ঠীর কাছ থেকে ফসল কিনবে নতুন কোম্পানি। তার পরে ওই পণ্যের প্রক্রিয়াকরণ ও প্যাকেজিং করা হবে। ‘কুল চেন’ থেকে রিটেল চেন, এমনকী, পণ্য পরিবহণের কাজেও বেসরকারি উদ্যোগীদের সামিল করা হবে।
এ দিন দুপুরেই নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে সংখ্যালঘু উন্নয়ন ও মাদ্রাসা শিক্ষা দফতরের বৃত্তি, ঋণ ও পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, রাজ্য জুড়ে ৫০০টি মার্কেটিং হাব তৈরি হচ্ছে। এক সপ্তাহের মধ্যে ৫০টির উদ্বোধন হয়ে যাবে। স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মেয়েরা ওই সব হাবে দোকান পাবেন। যাঁরা দোকান পাবেন, তাঁদের ব্যবসা চালানোর পাশাপাশি দোকানগুলি রক্ষণাবেক্ষণও করতে হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy