Advertisement
E-Paper

সরানো হল কল্যাণীর লিগ্যাল অফিসারকে

আসনের সংখ্যার চাইতে বেশি ছাত্র ভর্তি করার জন্য ভক্তবালা বিএড কলেজের বৈধতা খারিজ করেছিলেন কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য। এ বিষয়ে তাঁকে আইনি পরামর্শ দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের লিগ্যাল অফিসার অলোক ঘোষ। ওই কলেজে অবৈধ ছাত্রভর্তির তদন্তও করছিলেন অলোকবাবু। এর পরেই তাঁর যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন তৃণমূল ছাত্র পরিষদ নেতা শঙ্কুদেব পণ্ডা। সোমবার লিগ্যাল অফিসার পদ থেকে সরে যেতে হল অলোকবাবুকে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৫ জুলাই ২০১৪ ০৩:৫৪

আসনের সংখ্যার চাইতে বেশি ছাত্র ভর্তি করার জন্য ভক্তবালা বিএড কলেজের বৈধতা খারিজ করেছিলেন কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য। এ বিষয়ে তাঁকে আইনি পরামর্শ দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের লিগ্যাল অফিসার অলোক ঘোষ। ওই কলেজে অবৈধ ছাত্রভর্তির তদন্তও করছিলেন অলোকবাবু। এর পরেই তাঁর যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন তৃণমূল ছাত্র পরিষদ নেতা শঙ্কুদেব পণ্ডা। সোমবার লিগ্যাল অফিসার পদ থেকে সরে যেতে হল অলোকবাবুকে।

উপাচার্য রতনলাল হাংলুর বিশেষ আস্থাভাজন আধিকারিক হিসাবে বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিচিত অলোকবাবু। তাঁর পরামর্শেই ভক্তবালা কলেজে ছাত্রভর্তিতে অনিয়ম নিয়ে তদন্তের গতিপথ ঠিক হচ্ছিল। লিগ্যাল অফিসার হিসাবে তাঁর সঙ্গে আলোচনার পরেই কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের আওতাভুক্ত ওই বেসরকারি বিএড কলেজের নথিভূক্তি (‘অ্যাকাডেমিক অ্যাফিলিয়েশন’) বাতিল করেছিলেন উপাচার্য। ভক্তবালা কলেজ কর্তৃপক্ষের পাশাপাশি, তৃণমূল ছাত্র পরিষদের নেতা তন্ময় আচার্যের নামেও প্রতারিত ছাত্রছাত্রীরা অভিযোগ করেছিলেন উপাচার্যের কাছে।

এর পরেই ছাত্রনেতা শঙ্কুদেব পণ্ডা ভক্তবালা কলেজের ছাত্রভর্তির দুর্নীতি নিয়ে রাজ্য সরকারের তদন্ত দাবি করেন। সেই সঙ্গে কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের লিগ্যাল অফিসারের অপসারণের দাবিও তোলেন শঙ্কুদেব। তাঁর প্রশ্ন ছিল, “ওঁর (অলোকবাবুর) কী যোগ্যতা আছে লিগ্যাল অফিসারের পদে বসার? উনি তো আইন বিশেষজ্ঞ নন।”

এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে উপাচার্য তখন জানিয়েছিলেন, লিগ্যাল অফিসারের প্রথাগত আইনের ডিগ্রির কোনও প্রয়োজন থাকে না। প্রসঙ্গটি তখনকার মতো চাপা পড়েছিল।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে খবর, কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ে লিগ্যাল অফিসারের পদটি চালু হয়েছিল অলোকবাবুকে দিয়েই। গত নভেম্বরে বর্তমান উপাচার্য ইতিহাসের শিক্ষক অলোকবাবুকে ওই পদে বসান। কিন্তু শঙ্কুদেবের মন্তব্যের পর বিষয়টি নিয়ে কানাঘুষো শুরু হয়। শিক্ষক-কর্মীদের একাংশের দাবি, প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ ছিলেন অলোকবাবু। তাঁকে লিগ্যাল অফিসার পদে আনার পিছনে সেই কারণও সম্ভবত কাজ করেছিল। শিক্ষামন্ত্রী বদল হওয়ার পরে অলোকবাবুকে সরানোর জন্য রাজনৈতিক চাপ তৈরি হয়। এ দিনের সিদ্ধান্ত তারই পরিণাম বলে অনেকের ধারণা।

ভক্তবালা কলেজের অনুমোদন বাতিল করার সিদ্ধান্তটি নিয়ে অবশ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্দরেও নানা প্রশ্ন উঠেছিল। বিএড কলেজগুলির অনুমোদন যে হেতু এনসিটিই (ন্যাশনাল কাউন্সিল ফর টিচার্স এডুকেশন) দেয়। তাই এনসিটিই কোনও ব্যবস্থা নেওয়ার আগেই বিশ্ববিদ্যালয় কেন এমন সিদ্ধান্ত নিল, তা নিয়ে অনেকে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। উপাচার্য তখন বলেছিলেন, “কলেজ কর্তৃপক্ষকে প্রমাণ করতে হবে যে, তাঁরা নিরপরাধ। তবেই বিশ্ববিদ্যালয় ফের অনুমোদন দেবে।”

শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় শঙ্কুদেব পণ্ডার দাবি মেনে এক সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেন। কিন্তু দুর্নীতির অভিযোগ ওঠার পরেই উপাচার্য ভক্তবালা বি এড কলেজের দুর্নীতির তদন্তের জন্য চার সদস্যের অভ্যন্তরীণ কমিটি তৈরি করেছিলেন। সেই কমিটির নেতৃত্বেও ছিলেন আলোকবাবু। সেই কমিটি তদন্ত চালাচ্ছিল। তদন্ত ধামাচাপা দিতে লিগ্যাল অফিসার পদ থেকে সরানোর পর, তদন্ত কমিটির দায়িত্ব থেকেও অলোকবাবুকে সরানো হবে কিনা, এমন প্রশ্নও উঠছে। অলোকবাবু অবশ্য বলেন, “আমি ৩১ জুলাই পর্যন্ত লিগ্যাল অফিসারের দায়িত্বে আছি। তার মধ্যেই উপাচার্যকেরিপোর্ট দিয়ে দেব।”

উপাচার্য এ দিন সাংবাদিকদের সঙ্গে দেখা করেননি, ফোনও ধরেননি।

kalyani university legal officer alok ghosh
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy