এই সমাজ একদিন দেখেছে বাল্য বিধবার ওপর নির্মম অত্যাচার। দেখেছে সতীদাহ প্রথা। দেখেছে বিবধাদের একঘরে করে রাখার চিত্রও। কিন্তু আবার এই দেশের কিছু তথাকথিত ‘পিছিয়ে’ পড়া জাতিই শেখায় তাঁদের সম্মান করতে। অবশ্যই তাঁদের নিজেদের মতো করে।
তাঁরা মধ্যপ্রদেশের ‘গোন্দ’ উপজাতি। মধ্যপ্রদেশের মান্ডালা জেলায় তাঁদের বাস। সমাজ বিধবাদের অন্য চোখে দেখে। তাঁদের যোগ্য সম্মান দেয় না। এই প্রথাকে রুখতে বিধবা শব্দটিই নিজেদের অভিধান থেকে তুলে দিতে চায় এই উপজাতি। আর সেই জন্যই এমন অদ্ভূত নিয়ম বানিয়েছেন এই সম্প্রদায়ের মানুষরা।
‘গোন্দ’ প্রজাতির নিয়ম অনুযায়ী পরিবারের কোনও মহিলার স্বামী মারা যাওয়ার ১০ দিন পর অন্তেষ্টিক্রিয়া উপলক্ষে বাড়িতে লোকজন ডাকা হয়। সেখানে পরলৌকিক ক্রিয়া সম্পন্ন হওয়ার পর নারকেল ফাটিয়ে সকলের মধ্যে তা ভাগ করে দেওয়া হয়। এরপরেই পরিবারের বয়োজেষ্ঠ্য যিনি রয়েছেন তিনি পরিবারের অবিবাধিত পুরুষের সঙ্গে ওই বিধবা রমনীর বিয়ে দেন। এখানে বিবাহ হাতের বালা প্রদানের মাধ্যমে হয়ে থাকে। রুপোর এই বলাকে গোন্দরা বলেন ‘পাতো’। বিয়ের সময় বর বউয়ের হাতে পরিয়ে দেয় এই বালা। সাধারণত মৃত ব্যক্তির অবিবাহিত ভাইয়ের সঙ্গেই বিয়ে হয় বউদির। এঁকে বলে ‘দেবর পাতো’। তবে প্রয়োজন পড়লে বা ঘরে অন্য আর কোনও অবিবাহিত পুরুষ না থাকলে নাতির সঙ্গেও বিয়ে হতে পারে ঠাকুমার। একে বলে ‘নাতি পাতো’। সেই ক্ষেত্রে নাতিই হয়ে যাবে পরিবারের কর্তা।
তবে যে পুরুষদের খুব অল্প বয়সে বিয়ে হয় তাঁদের ক্ষেত্রে নিয়ম কিছুটা আলাদা। যৌবনে পৌঁছে আবার বিয়ে করতে পারেন তাঁরা। তবে যতদিন প্রথমা স্ত্রী বেঁচে থাকবেন ততদিন দ্বিতীয় স্ত্রীকে সতীন হিসাবে থাকতে হবে সংসারে।
তবে সদ্য বিধবা নারীদের মতামতকেও যথেষ্ট গুরুত্ব দেয় এই সমাজ। যদি কেউ বিয়ে করতে না চান তাহলে সেই মহিলাকে গ্রাম পঞ্চায়েতের তরফে পাতো বা রুপোর বালা দেওয়া হয়। এঁকে বলে ‘পঞ্চ পাতো’। সেই মহিলা নিজের খুশি মতো একাই থাকতে পারবেন। তবে তাঁকে থাকতে হবে সধবার মতোই।
আরও পড়ুন: সিঙ্গল মমদের যে প্রশ্নগুলি করবেন না...
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy