নরেন্দ্র মোদীর সফরের আগে ইতিবাচক বার্তা দিল চিন। সে দেশের বিদেশমন্ত্রী জানিয়েছেন, কয়েক মাস পরে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর সফরের অপেক্ষায় রয়েছেন তাঁরা। চিন মোদীকে উষ্ণ অভ্যর্থনা দিতে চাইছে। দু’দেশের সীমান্ত সমস্যা ‘নিয়ন্ত্রণের মধ্যেই রয়েছে’ বলে এ দিন দাবি করেছে বেজিং।
কিছু দিন আগে মোদীর অরুণাচল সফর নিয়ে ক্ষোভ জানাতে দেখা গিয়েছে চিনকে। কিন্তু মোদীর সফর নিয়ে আজ ভিন্ন সুরই শোনা গিয়েছে সে দেশের বিদেশমন্ত্রী ওয়াং ই-র কথায়। মোদী সম্ভবত ৬ মে চিনে আসছেন।
ওয়াং ই বলেন, “আমাদের প্রেসিডেন্টকে যে ভাবে আতিথেয়তা দেখিয়েছে ভারত, চিনের সরকার ও মানুষ ভারতের প্রধানমন্ত্রীকে সেটাই ফিরিয়ে দিতে চায়।” সেপ্টেম্বরে ভারত সফরের সময়ে গুজরাতে মোদীর পাশে বসে চরকা কেটেছিলেন প্রেসিডেন্ট শি চিনফিং। “সেই ছবি চিনের প্রত্যন্ত এলাকাতেও ছড়িয়ে পড়েছে”, মন্তব্য সে দেশের বিদেশমন্ত্রীর। চিনা প্রেসিডেন্ট এ বার মোদীকে তাঁর নিজের প্রদেশে নিয়ে যেতে পারেন, এমন সম্ভাবনা নিয়েও কূটনৈতিক স্তরে আলোচনা চলছে।
ভারতের প্রধানমন্ত্রীর আসন্ন সফরের তৎপরতার ভিতরে সীমান্ত সমস্যা মেটানোর প্রক্রিয়ায় গতি আনারও চেষ্টা হচ্ছে। জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল এ নিয়ে এই মাসের শেষে চিনের নিরাপত্তা উপদেষ্টা ইয়াং জেইচির সঙ্গে আলোচনা করবেন। দু’দেশের সীমান্তের টানাপড়েনের বিষয়ে সাংবাদিকদের কাছে চিনের বিদেশমন্ত্রী মন্তব্য করেছেন, “ভারত-চিন সীমান্ত সমস্যা উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া। অনেক বছর ধরে কথাবার্তা চলছে। কিছুটা এগোনোও গিয়েছে।” এর পরেই তাঁর ব্যাখ্যা, “বিষয়টা আসলে পাহাড়ে চড়ার মতো। ওপরে ওঠার সময়ে যাত্রা কঠিন হয়ে পড়ে।” তাঁর
ব্যাখ্যা, দু’দেশের মধ্যে সীমান্ত নিয়ে সমস্যা কিছুটা নিয়ন্ত্রণের মধ্যে রাখা সম্ভব হয়েছে।
যদিও ভারতীয় কূটনীতিকদের মতে, চিন অরুণাচল প্রদেশকে দক্ষিণ তিব্বতের অংশ হিসেবে দাবি করে সীমান্ত সমস্যা কেবল মাত্র ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের ২ হাজার কিলোমিটারের মধ্যে আটকে রয়েছে বলে দাবি করে। কিন্তু ভারত মনে করে, ১৯৬২-র যুদ্ধের পরে লাদাখ সহ মোট ৪ হাজার কিলোমিটার এলাকায় সমস্যা রয়েছে। এ সব জায়গায় ভারতের জমি চিন দখল করে রেখেছে।
সীমান্ত সমস্যাকে পাশে রেখেও দু’দেশের ভিতরে আর্থিক সম্পর্ককে জোরদার করে তুলতে এ দিন আগ্রহ দেখিয়েছে চিন। আর নরেন্দ্র মোদী চাইছেন সে দেশে ভারতীয় সামগ্রীর রফতানির অঙ্ককে আরও অনেকটাই বাড়িয়ে তুলতে। চিন এ দেশে একতরফা রফতানি চালিয়ে যেতে না পারে যাতে সে জন্য বিশেষ ভাবে তৎপর হয়েছেন তিনি। এ বার বেজিং সফরে একেই পাখির চোখ করতে চান মোদী।
চিনে সীমান্ত সমস্যা বাণিজ্যে আদৌ ছায়া ফেলবে কিনা, এখন সেটাই দেখার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy