—প্রতীকী চিত্র।
বছর নয়েকের ছেলেকে নাকি বকাবকি করেছিলেন মা। তাতে রাগ দেখিয়ে দেশান্তরি হল সে। ন’বছরের সেই বাংলাদেশি বালকের ভারতযাত্রা প্রশ্ন তুলে দিল— মিতালী এক্সপ্রেসের মতো ট্রেনে যে তল্লাশি হয়, তা কি নিশ্ছিদ্র নয়? তাই যদি হবে, তা হলে সেই বালক কী ভাবে ট্রেনের দুই কামরার মাঝে ভেস্টিবিউলের উপরে সারা রাত লুকিয়ে থেকে সীমান্ত পেরোতে পারে?
ছেলেটি প্রথম নজরে আসে বাংলাদেশ সীমান্ত পার হয়ে হলদিবাড়ি স্টেশনে। তাকে ভেস্টিবিউলের মধ্যে দেখে অবাক হয়ে যান স্থানীয়েরা। পরে বিএসএফ ও আরপিএফ তাকে উদ্ধার করে এনজেপি পর্যন্ত নিয়ে আসে। দিনের শেষে ফ্ল্যাগ মিটিং করে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো হয় ওই নাবালককে।
রেল সূত্রের খবর, ভারত-বাংলাদেশ মিতালী এক্সপ্রেসে নিরাপত্তা তল্লাশি চালানো হয় সীমান্তের জিরো পয়েন্টে। তার পরেও কী ভাবে এত বড় ঘটনা ঘটল, তা খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন বিএসএফ আধিকারিকেরা। জানা গিয়েছে, মিতালী এক্সপ্রেস সোমবার রাতে ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট থেকে এনজেপির দিকে রওনা হয়। এ দিন সকালে প্রথামাফিক জ়িরো পয়েন্টে ট্রেনটির তল্লাশি হয়। কিন্তু হলদিবাড়ি স্টেশনে ট্রেনটি ঢুকতেই স্থানীয়রা দেখেন, ভেস্টিবিউলের উপরের দিকে দুই কামরার ছাদের মাঝে মুড়ে থাকা রাবার টিউবের ভিতরে বিপজ্জনক ভাবে ঢুকে রয়েছে একটি বাচ্চা ছেলে। খবর পেয়ে বিএসএফ এবং আরপিএফ জওয়ানেরা ছেলেটিকে উদ্ধার করে এনজেপিতে নিয়ে আসে। আরপিএফের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘বাচ্চাটিকে জিজ্ঞেস করে জানতে পারি, তার বাবা নেই। তার মা তাকে বকেছিল। তাতেই অভিমান করে ঢাকার পরিচিত এক কাকুর সাহায্যে সে ভেস্টিবিউলে সেঁধিয়ে যায়।’’
এনজেপি আসার পরে ছেলেটি কার জিম্মায় থাকবে, তা নিয়ে শুরু হয় দায় ঠেলাঠেলি। আরপিএফ সূত্রে দাবি, জিআরপি বাচ্চাটিকে নিতে চায়নি। যদিও, শিলিগুড়ি রেল পুলিশ সুপার সেলভা মুরুগান বলেন, ‘‘আমাদের এ বিষয়ে কেউ কিছু জানায়নি।’’ এ রকম উদ্ধার হওয়া বাচ্চাদের রাখার পরিকাঠামো আরপিএফের নেই। কেন তবে বাচ্চাটিকে শিশু সুরক্ষা কমিটির হাতে দেওয়া হল না? রেল সূত্রে দাবি, আন্তর্জাতিক অনুপ্রবেশ যে হেতু বিএসএফ দেখে, তাই এই বিষয়টিও তাদেরই দেখতে বলা হয়।
উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক সব্যসাচী দে বলেন, ‘‘বাচ্চাটিকে নিরাপদে ওর দেশে পাঠানো হয়েছে। মিতালী এক্সপ্রেসে এ রকম কোনও ঘটনায় যাবতীয় নজরদারি সীমান্তরক্ষী বাহিনী চালায়।’’ ট্রেনের উঁচু ভেস্টিবিউল টিউবে বাচ্চাটি নিজে কী ভাবে পৌঁছল, তা নিয়েও রয়েছে সন্দেহ।
বিএসএফের নর্থ বেঙ্গল ফ্রন্টিয়ার বিভাগের এক জনসংযোগ আধিকারিক বলেন, ‘‘ছেলেটি অসদুদ্দেশ্যে আসেনি। নেহাতই নাবালক। কী ভাবে ঘটল আমরা দেখছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy