Advertisement
E-Paper

সোশ্যাল মিডিয়া নিয়ে দ্বন্দ্বের মুখ পাক কিশোরী

মুখ ছুঁচলো করে ঘাড় বেঁকিয়ে তাকানো! নিজস্বীর এই জনপ্রিয় ভঙ্গির নাম পাউট! এক্স, ওয়াই পেরিয়ে জেনারেশন জেড এখন এই কায়দায় সোশ্যাল মিডিয়ায় ছবি পোস্ট নিয়ে মেতে রয়েছে। কিন্তু বছর ১৫-র মেয়েটি মোবাইল ক্যামেরায় পাউট পোজ দিয়েও থমকে যায়।

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ২৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ ০৪:০২

মুখ ছুঁচলো করে ঘাড় বেঁকিয়ে তাকানো! নিজস্বীর এই জনপ্রিয় ভঙ্গির নাম পাউট! এক্স, ওয়াই পেরিয়ে জেনারেশন জেড এখন এই কায়দায় সোশ্যাল মিডিয়ায় ছবি পোস্ট নিয়ে মেতে রয়েছে।

কিন্তু বছর ১৫-র মেয়েটি মোবাইল ক্যামেরায় পাউট পোজ দিয়েও থমকে যায়। ফেসবুকে দেব, না দেব না? শেষমেশ সে ছবি মোবাইলেই রয়ে যায়। মেয়েটি জানে, তার দেশের কাকা-জেঠারা ওই ছবি দেখলে ছেড়ে কথা বলবে না।

দেশের নাম পাকিস্তান। জনসংখ্যার দুই তৃতীয়াংশের বয়স তিরিশের নীচে। ২০১৪ সালে এখানে স্মার্টফোনে থ্রি জি, মায় ফোর জি পরিষেবা পৌঁছেছে। বর্তমান প্রজন্মের অনেকে এই আধুনিকতার ছোঁয়া পেয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ার দৌলতে ডেটিং-প্রেম-লিভ ইনের মতো বিষয়ও এখন জলভাত। পশ্চিমী দুনিয়ার রিয়্যালিটি শো তারকা কিম কার্দাশিয়ানের আদলে বেশ জনপ্রিয় কান্দিল বালোচ। ২০১৪ থেকে পাক টেলিভিশনের জনপ্রিয় এই তারকা ফেসবুকে নিজস্বী পোস্ট করেন অক্লেশে। ভ্যালেনটাইন্স ডে না-পালনে প্রেসিডেন্টের সাবধানবাণী উপেক্ষা করে লাল পোশাকে পোস্ট করেন: ‘‘ওরা বাইরে পা ফেলা বন্ধ পারে। কিন্তু ভালবাসাতে আটকাবে কী করে?’’ ছেলেদের সঙ্গে হাজার হাজার মেয়েও বালোচের ভক্ত।

দেশে যতই আধুনিকতার হাওয়া উঠুক, ওই কিশোরীর মতো অনেকেই জানে, সোশ্যাল মিডিয়ায় ঘুরঘুর করলে কপালে জুটবে বাড়ির লোকের চোখরাঙানি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই কিশোরী বলে, ‘‘পাউট পোস্ট করার কথা ভাবতেই পারি না। সবাই অদ্ভুত চোখে দেখে।’’

শুধু পাউট নয়, বন্ধুবান্ধবদের সঙ্গে বাইরে ঘুরে বেড়ানোর ছবিও দিতে ভয় করে। তার কথায়, ‘‘আত্মীয় বা শিক্ষক-শিক্ষিকা, কেউ না কেউ সমালোচনা করবে। অপমান করবে। বলবে, ‘‘ইস দেখো তোমায় বেশ্যার মতো দেখাচ্ছে! হাসছো কেন ও ভাবে?’’ অগত্যা মেয়েটি নিজের প্রোফাইলের ছবিটাও পাল্টায় না। ‘‘সোশ্যাল মিডিয়ায় যখন প্রথম পা রেখেছিলাম, ভেবেছিলাম অনেক বন্ধু হবে। কিন্তু আমার মাত্র পাঁচ জন বন্ধু!’’

ইসলামাবাদের একটি বেসরকারি কো-এড সাধারণ স্কুলের ছাত্রী ওই কিশোরী। অনেকেই তার সঙ্গে একমত। ‘‘পুরো ব্যাপারটায় ধর্ম চলে আসে। আমরা ইসলামি দেশে বাস করি। মেয়েদের পা-হাত দেখানো ছবি ইসলামে আপত্তিকর। ছেলেদের সঙ্গে মেয়েদের কথা বলা নিয়েও নিষেধ রয়েছে,’’ বলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বছর ১৪-র এক কিশোর। বান্ধবীর সঙ্গে ছবি পোস্ট করে বেদম বকুনি খেয়েছিল সে।

আছে অন্য ঝক্কিও। এক কিশোরীর দাবি, ‘‘ছবি পোস্ট করলে আবার এমন কিছু লোক পিছনে পড়ে যায় যে বলার নয়। তারা অনলাইনে উল্টোপাল্টা ছবি পাঠায়।’’ তবে এ সব কিছুর মধ্যে রক্ষণশীল পরিবার বা সমাজের শাসানিকেই প্রত্যেকে দায়ী করছে না। ১৩-র এক কিশোরের সাফ কথা, ‘‘সাইবার দুনিয়া সমাজের নিয়ম পাল্টে দিতে পারে।’’ তার এক বান্ধবীর বক্তব্য, ‘‘অনলাইনে এই পরিসরটা প্রয়োজন। এখানে আমরা নিজেদের কথা বলতে পারি।’’ অনেকে তাই নাম ভাঁড়িয়ে প্রোফাইল খুলছে। পনেরো ছোঁয়া আর এক কিশোরী বন্ধুদের পরামর্শ দিয়েছে, ‘‘সব কিছুর জন্য সমাজকে দায়ী কোরো না। অনলাইন দুনিয়ায় আত্মবিশ্বাসী হতে শেখো। কাপুরুষের মতো কাটাবে না কিছু করে দেখাবে, সেটা তোমাকেই ঠিক করতে হবে।’’

international news pakistan social media
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy