Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪

রাইফেলের পরে আত্মঘাতী ড্রোন-বোমা কালাশনিকভের

প্রায় সাত দশক আগে কালাশনিকভ রাইফেল এনেছিল যে রুশ সংস্থা, এ বার তাদের হাত ধরেই বিশ্বের অস্ত্রবাজারে আসছে আত্মঘাতী ড্রোন। 

সংবাদ সংস্থা
মস্কো শেষ আপডেট: ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০২:২৫
Share: Save:

প্রায় সাত দশক আগে কালাশনিকভ রাইফেল এনেছিল যে রুশ সংস্থা, এ বার তাদের হাত ধরেই বিশ্বের অস্ত্রবাজারে আসছে আত্মঘাতী ড্রোন।

আবু ধাবির এক অস্ত্র প্রদর্শনীতে চলতি সপ্তাহে প্রথম এই আত্মঘাতী ড্রোন বা কেইউবি-র একটি ছোট সংস্করণ হাজির করেছে কালাশনিকভ গোষ্ঠী। বিশেষজ্ঞেরা মনে করছেন, ‘অগ্রজ’ কালাশনিকভের মতোই ‘দক্ষ ও অল্প দামি’ কেইউবি-র যুদ্ধের ধরন বদলে দেওয়ার ক্ষমতা রয়েছে।

যুদ্ধক্ষেত্রে আত্মঘাতী ড্রোনের ব্যবহার যদিও নতুন কিছু না। ইসলামিক স্টেট ঢের আগেই বিস্ফোরক ভরা ড্রোন পাঠিয়ে হামলা চালিয়েছে ইরাকের মসুল বা সিরিয়ার রাকার শত্রুঘাঁটিতে। যদিও সে সবই বাণিজ্যিকভাবে তৈরি সাধারণ ড্রোন। ‘জিপিএস গাইডেন্স সিস্টেম’-এর সাহায্যে যা নিয়ন্ত্রণ করা হয়। গত বছর এ ভাবেই সিরিয়ায় রুশ বায়ুসেনা ঘাঁটিতে হামলা চালিয়েছিল ওই জঙ্গিগোষ্ঠী। মার্কিন ও ইজ়রায়েলি সেনাবাহিনীর অস্ত্রভাণ্ডারেও নতুন সংযোজন আত্মঘাতী ড্রোন। পেন্টাগন নিজেই এই ধরনের ড্রোন তৈরি করছে। তবে তা খুব অল্প সংখ্যায়। কালাশনিকভের এক প্রতিনিধির মতে, সেই ড্রোনগুলির তুলনায় তাদের কেইউবি অনেক সস্তা ও দ্রুতগতির।

কম দাম, সহজসরল ব্যবহারের প্রক্রিয়া, সর্বোপরি তুখোড় দক্ষতার জন্য খুব দ্রুত বিশ্বের অস্ত্রবাজার দখল করে নিয়েছিল কালাশনিকভ। কখনও সরকারের বিরুদ্ধে লড়তে, কখনও সরকারের হয়ে লড়তে এক কথায় বেছে নেওয়া হয়েছে একে৪৭। মার্কিন প্রযুক্তিতে তৈরি অস্ত্রের বদলে সিরিয়া ও আফগানিস্তানের সেনাদের জন্য সেকেন্ডহ্যান্ড কালাশনিকভ কিনেছে পেন্টাগনও। প্রস্তুতকারক সংস্থা জানাচ্ছে, একে৪৭-এর মতোই কালাশনিকভ ড্রোন বা কেইউবি-ও নিয়ন্ত্রণ করা খুব সহজ। চার ফুট চওড়া এই ড্রোনের আকার অনেকটা কফি টেবিলের মতো। ৮০ মিটার প্রতি ঘণ্টা বেগে ৩০ মিনিট উড়তে পারবে প্রায় ৩ কেজি বিস্ফোরক সঙ্গে নিয়ে। ৪০ মাইল দূরে নিশানায় আঘাত করতে পারবে এটি। ইলিনয় বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্কের অধ্যাপক ও ‘ড্রোনস অ্যান্ড টেররিজম’ বইয়ের লেখক নিকোলাস গ্রসম্যানের মতে, ‘‘এই অস্ত্র হাতে পেলে বড় আধুনিক সামরিক বাহিনী ও ছোট মাপের বাহিনীর মধ্যে ফারাক মুছে যাবে।’’

সন্ত্রাসবাদীদের হাতে এই ড্রোন-বোমা গেলে তা কতটা মারাত্মক হতে পারে ভাবাচ্ছে বিশেষজ্ঞদের। সম্প্রতি ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোর উপরে হামলার জন্য এই ধরনের ড্রোন ব্যবহার করা হয়েছিল। কিছু দিন আগে লন্ডন, ডাবলিন, নিউ ইয়র্ক বিমানবন্দরের আশপাশে সন্দেহজনক ভাবে ড্রোনের ঘোরাফেরা দেখে তড়িঘড়ি বন্ধ করে দেওয়া হয় বিমানবন্দর। যা দেখে মনে করা হচ্ছে, ড্রোনের সাহায্যে হামলার হুমকি রুখতে প্রস্তুত নয় পশ্চিমী সেনা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

AK-47 Kalashnikov Group Suicide Drones
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE