Advertisement
E-Paper

বাংলাদেশে পাবনার একটি ধর্মীয় আশ্রমে আশ্রমিককে কুপিয়ে খুন

বাংলাদেশে পাবনার একটি ধর্মীয় আশ্রমের সেবককে শুক্রবার ভোরে কুপিয়ে খুন করল দুষ্কৃতীরা। নিহতের নাম নিত্যরঞ্জন পাণ্ডে (৬২)। চার দশক ধরে তিনি পাবনার হেমায়েতপুরে অনুকূলচন্দ্র ঠাকুর সেবাশ্রমের দেখাশোনা করতেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১১ জুন ২০১৬ ০৯:২২
পড়ে রয়েছে নিত্যরঞ্জন পাণ্ডের (ইনসেটে) দেহ।—নিজস্ব চিত্র

পড়ে রয়েছে নিত্যরঞ্জন পাণ্ডের (ইনসেটে) দেহ।—নিজস্ব চিত্র

বাংলাদেশে পাবনার একটি ধর্মীয় আশ্রমের সেবককে শুক্রবার ভোরে কুপিয়ে খুন করল দুষ্কৃতীরা। নিহতের নাম নিত্যরঞ্জন পাণ্ডে (৬২)। চার দশক ধরে তিনি পাবনার হেমায়েতপুরে অনুকূলচন্দ্র ঠাকুর সেবাশ্রমের দেখাশোনা করতেন।

প্রতিদিনের মতো শুক্রবার সকালেও হাঁটতে বেরিয়েছিলেন নিত্যরঞ্জন। সেই সময় আশ্রমের অদূরে পাবনা মানসিক হাসপাতালের সামনে তাঁর উপর হামলা চালায় দুষ্কৃতীরা।

আগের খুনগুলির মতো একই কায়দায় ঘাড়ে-গলায় কোপ মেরে নিত্যরঞ্জনকে খুন করে চম্পট দেয় তারা। নিহত নিত্যরঞ্জনের বাড়ি গোপালগঞ্জ জেলার আরুয়াপাড়ার কংশুর গ্রামে। গ্রামবাসীরা জানিয়েছেন, অত্যন্ত শান্ত ও নির্বিরোধী স্বভাবের মানুষ ছিলেন নিত্যবাবু। ‘ঋত্বিক’ হিসেবে মানুষকে দীক্ষা দিতেন তিনি। বছরে তিন-চার বার নিজের বাড়িতে আসতেন। নিহতের স্ত্রী দুলুরানি পাণ্ডে বলেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমার স্বামীর হত্যাকাণ্ডের সুবিচার চাই। আমাদের নিরাপত্তা চাই।’’ নিত্যবাবুর ছেলে স্কুলশিক্ষক। দুই মেয়েও রয়েছে তাঁর।

খুনের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান পুলিশ ও র‌্যাবের কর্তারা। পাবনার পুলিশ সুপার আলমগির কবির বলেন,

‘‘ডায়াবেটিসে আক্রান্ত নিত্যরঞ্জন নিয়মিত হাঁটতেন। আততায়ীরা সেই সুযোগটিই নিয়েছে।’’ অনুকূলচন্দ্র ঠাকুর সেবাশ্রমের সাধারণ সম্পাদক যুগলকিশোর ঘোষ বলেন, ‘‘কারও সঙ্গে নিত্যবাবুর শত্রুতা ছিল বলে কেউ শোনেনি।’’ এ দিন তাঁর খুনের খবর পেয়ে আশ্রমে যান রাজশাহিতে ভারতের সহকার হাইকমিশনার অভিজিৎ চট্টোপাধ্যায়। নিত্যরঞ্জনের হত্যার পিছনেও জঙ্গিদের হাত রয়েছে বলে মনে করছেন স্থানীয়রা। তবে এএসপি সেলিম খান বলেন, ‘‘তদন্ত চলছে। সব দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’

সম্প্রতি বাংলাদেশে এই ধরনের হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন একের পর এক সংখ্যালঘু মানুষ। গত ২১ ফেব্রুয়ারি খুন হন পঞ্চগড় জেলার সন্তগৌড়ীয় মঠের অধ্যক্ষ যজ্ঞেশ্বর রায়। গত রবিবার নাটোরে গলা কেটে খুন করা হয় বৃদ্ধ খ্রিস্টান ব্যবসায়ী সুনীল গোমেজকে। এর পর গত মঙ্গলবার ঝিনাইদহে খুন হন হিন্দু পুরোহিত আনন্দগোপাল গঙ্গোপাধ্যায়। সংখ্যালঘু ছাড়াও বাংলাদেশে খুন হয়েছেন একাধিক মুক্তমনা ব্লগার, লেখক, সমকামী অধিকার আন্দোলনের কর্মী এবং অধ্যাপক। গত রবিবারই খুন হয়েছেন জঙ্গি দমনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেওয়া পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারের স্ত্রী। কখনও জঙ্গি সংগঠন আইএস, কখনও বা আল কায়দার নামে এই সব হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করা হয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বুধবার দাবি করেছেন, রাজনৈতিক মদতেই বিচ্ছিন্ন ভাবে এই সব হত্যাকাণ্ড ঘটানো হচ্ছে। বিএনপি ও জামাতে ইসলামি এই চক্রান্তের পিছনে রয়েছে বলে যথেষ্ট তথ্যপ্রমাণ তাঁর হাতে রয়েছে। বাংলাদেশের গোয়েন্দাদের দাবি, জামাতের ছাত্র সংগঠন ইসলামি ছাত্র শিবির ও জেএমবি (জামাতুল মূজাহিদিন বাংলাদেশ) জঙ্গিরা হত্যাকাণ্ড চালিয়ে আইএস-এর নামে দায় স্বীকার করছে। বৃহস্পতিবার থেকে বাংলাদেশ জুড়ে সাত দিনের জঙ্গি দমন অভিযান শুরু করেছে পুলিশ ও ‌র‌্যাব (র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটেলিয়ন)। দু’দিনে প্রায় ৯০০ জন সন্দেহভাজনকে আটক করা হয়েছে। আর সেই অভিযানের দ্বিতীয় দিনই খুন হয়ে গেলেন নিত্যরঞ্জন পাণ্ডে।

Bangladesh ashram worker Killed
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy