Advertisement
০১ এপ্রিল ২০২৩
lockdown

ব্রিটেনে ফের লকডাউন

অনেকের মতে, পরিস্থিতি ইতিমধ্যেই বেগতিক। হাসপাতালে শয্যা খালি না-পেয়ে অনেককেই ফিরে আসতে হচ্ছে। অক্সিজেন সঙ্কটের কথাও উঠে আসছে।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

সংবাদ সংস্থা
লন্ডন শেষ আপডেট: ০৬ জানুয়ারি ২০২১ ০৪:১২
Share: Save:

গণ টিকাকরণ শুরু হয়ে গেলেও নয়া স্ট্রেনের দাপটে ব্রিটেনে করোনা সংক্রমণ লাগামছাড়া ভাবে বেড়েই চলেছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে সোমবার রাতে ফের লকডাউন ঘোষণা করল ব্রিটিশ সরকার। তৃতীয় দফার এই লকডাউন চালু হবে বুধবার সকাল থেকে। ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি পর্যন্ত তা চলবে বলে মনে করা হচ্ছে। তত দিন সমস্ত স্কুল-কলেজ বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। পাশাপাশি আজই আসন্ন ভারত সফর বাতিল কথা জানিয়েছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। আগামী ২৬ জানুয়ারি প্রজাতন্ত্র দিবস উপলক্ষে তাঁর ভারতে আসার কথা ছিল।

Advertisement

করোনা আবহে স্কুল-কলেজ খুলে দেওয়ার সরকারি সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে কিছু দিন ধরেই প্রতিবাদ জানাচ্ছিলেন ব্রিটেনের শিক্ষক-অভিভাবকদের একটা বড় অংশ। তবে সেই কথায় আমল না-দিয়ে দিন দুই আগেও এই প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী জনসন বলেছিলেন, ‘‘স্কুলগুলি এখনও নিরাপদ। সব পড়ুয়াদের এ বার স্কুলে ফেরা উচিত।’’ কিন্তু পরিস্থিতির চাপে সেই মন্তব্যের ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে পুরোপুরি উল্টো সুরে গেয়ে লকডাউন ঘোষণা করতে বাধ্য হয়েছেন তিনি। স্কটল্যান্ড, ওয়েলস এবং উত্তর আয়ারল্যান্ডে ইতিমধ্যে লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে।

ক্রিসমাসের সময়ে ব্রিটেনে চতুর্থ পর্যায়ের লকডাউন উপেক্ষা করে অনেকেই উৎসবে যোগ দিয়েছিলেন। তার উপরে প্রচণ্ড সংক্রামক নয়া স্ট্রেনের দাপট তো রয়েইছে। সব মিলিয়ে নববর্ষের সূচনায় দেশে এক দিনে ৮০ হাজারের বেশি নতুন সংক্রমণ ধরা পড়ে। গত বছর এপ্রিলে ব্রিটেনে করোনার প্রথম ঢেউ আছড়ে পড়ার পরে এক দিনে এত বেশি সংক্রমণের ঘটনা ঘটেনি। সোমবারও ২৪ ঘণ্টায় ৫৮,৭৮৪ জন নতুন করে করোনা-আক্রান্ত হয়েছেন। মৃত ৪০৭ জন। এ দিন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন ২৬,৬২৬ জন। যা এপ্রিলের তুলনায় অন্তত ৪০ শতাংশ বেশি। প্রশাসনের একাংশের দাবি, পরিস্থিতি নাগালের বাইরে চলে যাওয়ার আগেই তড়িঘড়ি লকডাউন ঘোষণা করেছে সরকার। লকডাউন চলাকালীন আপাতত ব্যায়াম, চিকিৎসা বা অতিপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কেনাকাটা ছাড়া বাড়ির বাইরে বেরোনো নিষেধ। বাড়ি থেকেই সমস্ত কাজ করার পরামর্শ দিচ্ছে সরকার। ঘরোয়া পরিসরে সামাজিক মেলামেশাও বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে।

তবে অনেকের মতে, পরিস্থিতি ইতিমধ্যেই বেগতিক। হাসপাতালে শয্যা খালি না-পেয়ে অনেককেই ফিরে আসতে হচ্ছে। অক্সিজেন সঙ্কটের কথাও উঠে আসছে।

Advertisement

আশঙ্কার কালো মেঘের মধ্যেও আশার আলো দেখছেন প্রধানমন্ত্রী জনসন। সোমবার, লকডাউন ঘোষণার দিনেই ব্রিটেনে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজ়েনেকার তৈরি কোভিড-টিকা চ্যাডক্স-১ দেওয়া শুরু হয়েছে। জনসনের আশা, ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি সবচেয়ে ঝুঁকিবহুল ১৩ লক্ষ সত্তরোর্ধ্ব ব্রিটেনবাসীকে টিকা দেওয়া যাবে।

ব্রিটেনের এই অবস্থার জন্য করোনার নতুন স্ট্রেনকেই দায়ী করছেন বিশেষজ্ঞরা। দক্ষিণ আফ্রিকা এবং ব্রিটেনে খোঁজ পাওয়া এই স্ট্রেনটির মারণ ক্ষমতা কম হলেও সংক্রমণ ক্ষমতা আগের স্ট্রেনগুলির তুলনায় বহু গুণ বেশি। শুধু তাই নয়, ছাড়পত্র পাওয়া কোভিড-টিকাগুলি নতুন স্ট্রেনের মোকাবিলায় সক্ষম হবে কি না, তা নিয়েও ধন্দ বিজ্ঞানীরা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্রিটিশ বিজ্ঞানী বলেছেন, নয়া স্ট্রেনের ক্ষেত্রে এই টিকা কার্যকর কি না, সে বিষয়ে প্রশাসনের অন্দরেও অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে।

তবে ধন্দ থাকলেও টিকাকরণের তোড়জোড় শুরু হয়ে গিয়েছে বিশ্ব জুড়েই। করোনা-মোকাবিলায় এবং ভ্যাকসিন উৎপাদনে যৌথ ভাবে কাজ করার কথা ভাবছে জার্মানি ও রাশিয়া। আমেরিকা, কানাডার পরে মডার্নার টিকায় অনুমোদন দিয়েছে ইজ়রায়েল। প্রশাসন সূত্রের খবর, জানুয়ারির মধ্যে ৬০ লক্ষ মর্ডানার টিকা ইজ়রায়েলে পৌঁছবে বলে মনে করা হচ্ছে। টিকা দেওয়া চলছে চিনেও। দেশজ সংস্থা সিনোফার্মের তৈরি কোভিড-টিকার ফলাফলে খুবই খুশি চিন। আসন্ন ‘স্প্রিং ফেস্টিভ্যালের’ আগে দ্রুতগতিতে কয়েক লক্ষ দেশবাসীকে টিকা দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে তারা। সোমবার ওই সংস্থার দাবি, করোনার নতুন স্ট্রেন তাদের ভ্যাকসিনের কার্যকারিতায় কোনও প্রভাব ফেলতে পারবে না।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE
Popup Close
Something isn't right! Please refresh.