Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
taliban

Taliban: তালিবান সরকারকে বৈধ প্রমাণ করতে রাষ্ট্রপুঞ্জের মঞ্চে মরিয়া লড়াই চিন-পাকিস্তানের

আমেরিকার ছেড়ে যাওয়া গুরুত্বপূর্ণ ভূখণ্ডটির বাণিজ্যিক তথা কৌশলগত আধিপত্য দখলে বেজিংও প্রবল ভাবে আগ্রহী।

রাষ্ট্রপুঞ্জে প্রতিনিধি পাঠানোর দাবি জানিয়ে সাংবাদিক বৈঠক করলেন তালিবােনর কার্যনির্বাহী বিদেশমন্ত্রী আমির খান মুত্তাকি। বৃহস্পতিবার কাবুলে।

রাষ্ট্রপুঞ্জে প্রতিনিধি পাঠানোর দাবি জানিয়ে সাংবাদিক বৈঠক করলেন তালিবােনর কার্যনির্বাহী বিদেশমন্ত্রী আমির খান মুত্তাকি। বৃহস্পতিবার কাবুলে। রয়টার্স ।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২১ ০৬:৩৪
Share: Save:

রাষ্ট্রপুঞ্জের চলতি সাধারণ অধিবেশনের মঞ্চকে কাজে লাগিয়ে তালিবান সরকারকে আন্তর্জাতিক বৈধতা দিতে ঝাঁপিয়ে পড়েছে পাকিস্তান এবং চিন। পাকিস্তান যেহেতু নিরাপত্তা পরিষদের সদস্য নয়, তাই তারা পিছন থেকে চিনকে এ ব্যাপারে কাজে লাগাচ্ছে। তবে এখনও পর্যন্ত তারা খুব একটা সফল হয়নি বলেই মনে করছে কূটনৈতিক শিবির।

কূটনৈতিক সূত্রের মতে, আমেরিকার ছেড়ে যাওয়া গুরুত্বপূর্ণ ভূখণ্ডটির বাণিজ্যিক তথা কৌশলগত আধিপত্য দখলে বেজিংও প্রবল ভাবে আগ্রহী। তালিবান সরকার গড়ার পর চিনই প্রথম আগ বাড়িয়ে তাদের স্বীকৃতি দিয়েছিল। তাই কখনও সার্ক বিদেশমন্ত্রীর বৈঠকে তালিবানের প্রতিনিধিত্ব দাবি করে, কখনও তাদের দেশের বাইরে যাওয়ার নিষেধাজ্ঞায় দীর্ঘ ছাড়ের দাবি তুলে, আবার কখনও বা সাধারণ অধিবেশনে তালিবান দূতকে হাজির করাতে অক্লান্ত ভাবে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে চিন।

গোটা প্রক্রিয়াটির দিকে সতর্ক নজর রাখছে নয়াদিল্লি। ভিতরে ভিতরে প্রতিরোধ গড়ার জন্য বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর এবং তাঁর প্রতিনিধিদল অন্য দেশগুলির সঙ্গে দৌত্যে সক্রিয়। রাষ্ট্রপুঞ্জের সাধারণ অধিবেশনের ফাঁকে সার্ক বিদেশমন্ত্রীদের বৈঠক হওয়ার পরম্পরা রয়েছে। এ বারে পাকিস্তান চাপ দেয় তালিবান প্রতিনিধিকেও ওই বৈঠকে রাখার জন্য। তৎক্ষণাৎ অন্য সদস্য রাষ্ট্রগুলিকে পাশে নিয়ে তার বিরোধিতা করে ভারত। সম্প্রতি তাজিকিস্তানে এসসিও-র বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ভারতের অবস্থান স্পষ্ট করে দিয়ে জানিয়েছিলেন, তালিবান সরকারে আফগানিস্তান সমাজের সর্বস্তরের প্রতিনিধিত্ব নেই। মহিলাদের প্রতিনিধিত্ব নেই। এই সরকারকে এখনই স্বীকৃতি দেওয়া চলে না। সেই অবস্থানকেই রাষ্ট্রপুঞ্জের সাধারণ সম্মেলনের দৌত্যগুলিতে সামনে নিয়ে এসেছে ভারত। সব মিলিয়ে ভেস্তে গিয়েছে সার্ক-এর বিদেশমন্ত্রীর বৈঠক।

এর পর চিন প্রবল চেষ্টা শুরু করে তালিবান প্রতিনিধিকে রাষ্ট্রপুঞ্জের সাধারণ অধিবেশনে যোগ দেওয়ানোর। তা হলে বকলমে তালিবানের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি মিলবে। কিন্তু সেই উদ্যোগও এ বার সফল হচ্ছে না। রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদের কাছে চিন অনুরোধ জানিয়েছিল, তালিবান নেতাদের দেশের বাইরে যাওয়ার নিষেধাজ্ঞায় ১৮০ দিনের ছাড় দিতে। পাশাপাশি রাষ্ট্রপুঞ্জের মহাসচিব আন্তোনিয়ো গুতেরেসের কাছে তালিবান নেতৃত্ব চিঠি লিখে বলেন যে, তালিবানের অন্যতম মুখপাত্র সুহেল শাহিনকে রাষ্ট্রপুঞ্জে দূত করে পাঠাতে চান তারা। বিষয়টি গুতেরেস পাঠিয়েছেন রাষ্ট্রপুঞ্জের ‘ক্রেডেনশিয়াল কমিটি’তে যার অন্যতম সদস্য চিন। কিন্তু সেখানে চিনের লাগাতার দৌত্য সত্ত্বেও এ বারের সাধারণ সম্মেলনে বিষয়টিকে আটকানো গিয়েছে বলেই দাবি করছে ভারতীয় সূত্র। চিনের কথা অনুযায়ী তালিবান নেতাদের দেশের বাইরে যাওয়ার ক্ষেত্রে ১৮০ দিনের ছাড়ও দেওয়া হয়নি। দেওয়া হয়েছে শর্ত সাপেক্ষে ৯০ দিনের ছাড়। নিরাপত্তা পরিষদ সূত্রে জানানো হয়েছে, দোহায় পরবর্তী শান্তি আলোচনাকে লক্ষ্য হিসেবে রেখে তালিবান নেতাদের সুযোগ দেওয়া হয়েছে, যাতেতাঁরা চাইলে কাতার গিয়ে আলোচনা করতে পারেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

taliban UNO
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE