হ্যানয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তাঁর আসার কিছু আগে পৌঁছে যান কিম জং উনও। রয়টার্স
যাত্রা শুরু করেছিলেন গত শনিবার। উত্তর কোরিয়ার শাসক কিম জং উন তাঁর প্রিয় বিলাসবহুল ট্রেনে চড়ে আজ পৌঁছে গিয়েছেন ভিয়েতনামে। আর এক জন যাত্রা শুরু করেন আজ। ভিয়েতনামের পথেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের এয়ার ফোর্স ওয়ানকে এগোতে দেখা গিয়েছে। কাতারে সে বিমান তেল ভরতে থেমেছিল বলে দাবি সংবাদমাধ্যমের। মঙ্গলবার সন্ধেয় ট্রাম্পও পৌঁছে যান ভিয়েতনাম। আগামিকাল থেকে শুরু হবে দুই রাষ্ট্রনেতার বৈঠক। গত বছর জু মাসে সিঙ্গাপুরের পরে এই নিয়ে দ্বিতীয় বার আলোচনায় বসতে চলেছেন তাঁরা।
আলোচনা শুরুর আগে বোন কিম ইয়ো জংয়ের সঙ্গে হ্যানয়ের উত্তর কোরিয়া দূতাবাসে আজ ঘুরে আসেন কিম জং উন। পিয়ংইয়্যাংয়ের শাসককে দেখতে সেখানে ভিড় ছিল দেখার মতো। এখানকার মেলিয়া হোটেল থেকে দূতাবাস পর্যন্ত অল্প রাস্তাও কিম তাঁর কনভয় নিয়েই পৌঁছন। হর্ষধ্বনির মাধ্যমে স্বাগত জানানো হয় তাঁকে। ৫০ মিনিট সেখানে কাটিয়ে চলে যান কিম। হ্যানয়ে কিম পৌঁছনোর পরে সেখানে চলে আসেন মার্কিন বিদেশসচিব মাইক পম্পেয়ো। তিনি দেখা করবেন ওয়াশিংটনে উত্তর কোরিয়ার বিশেষ প্রতিনিধি স্টিফেন বিগানের সঙ্গে।
কিম-ট্রাম্পের দ্বিতীয় এই বৈঠক ঘিরে এখন দারুণ উত্তেজনা হ্যানয়ে। ‘কিম জং ইয়াম’ আর ‘ডার্টি ডোনাল্ড’— চুলের ছাঁট থেকে শুরু করে বার্গারে ঘুরে বেড়াচ্ছে এই সব নাম। এক সপ্তাহ আগে থেকেই নিজের সেলুনে বিনামূল্যে ট্রাম্প আর কিমের চুলের অনুকরণে ভিয়েতনামবাসীর চুল কেটে দিচ্ছেন দুয়োং লে তুয়ান। অন্তত ৬০০ জন ইতিমধ্যেই চুল কাটিয়েছেন তাঁর সেলুনে। আমেরিকা আর ভিয়েতনামের যুদ্ধে দুই কাকাকে হারিয়েছিলেন দুয়োং। তিনি চান, কিম-ট্রাম্পের ঐতিহাসিক আলোচনা যেন শান্তির বার্তা বয়ে আনে।
ভিয়েতনামের তথ্য সংক্রান্ত উপমন্ত্রী ফাম হং হাই আমেরিকা-উত্তর কোরিয়ার শীর্ষ সম্মেলন উপলক্ষে বিশেষ ডাকটিকিট প্রকাশ করেছেন। তাতে উত্তর কোরিয়া আর আমেরিকার পতাকার ছবি হাতের আকৃতিতে করমর্দন করছে দেখানো হয়েছে।
ইতিমধ্যে চিনের বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র লু কাং জানিয়েছেন, বেজিংয়ের আশা, পরমাণু নিরস্ত্রীকরণ নিয়ে দুই দেশের মধ্যে ইতিবাচক কথা হবে। আর সেটা করতে হলে দুই দেশকেই নিজেদের অবস্থান থেকে কিছুটা সরে মাঝামাঝি জায়গায় এসে আলোচনা করতে হবে।
হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র সারা স্যান্ডার্স জানিয়েছেন, বুধবার সন্ধ্যায় কিমের সঙ্গে একক আলোচনায় বসবেন ট্রাম্প। তার পরে থাকবে নৈশভোজে। যেখানে হাজির থাকবেন অন্য অতিথি এবং দোভাষীরা। বৃহস্পতিবার আরও এক প্রস্ত বৈঠক হবে দুই নেতার। এ বারও আলোচনা জুড়ে থাকবে পরমাণু নিরস্ত্রীকরণের প্রসঙ্গ। যেমনটা ছিল সিঙ্গাপুরের ঐতিহাসিক বৈঠকেও।
বিশ্বের সব দেশই চায় উত্তর কোরিয়া অবিলম্বে পরমাণু অস্ত্র পরিহার করুক। কিন্তু পিয়ংইয়্যাং বরাবরই জানিয়েছে, পরমাণু নিরস্ত্রীকরণের কথা তারা তখনই ভাববে, যখন আমেরিকার তরফ থেকে আর আশঙ্কা থাকবে না। বেশ কিছু নিষেধাজ্ঞা রয়েছে উত্তর কোরিয়ার উপরে। আর তাই কিমের দেশ সর্বত্র অবাধ বাণিজ্যে অংশ নিতে পারছে না বলে দাবি তাদের। নিষেধাজ্ঞার তালিকা কমলে নিরস্ত্রীকরণে সক্রিয় হবে পিয়ংইয়্যাং। আগের বারের বৈঠকে এই নিয়ে আলোচনার পরে দুই নেতা ঘোষণাপত্রে সই করলেও সে ভাবে বিশদে কিছু উঠে আসেনি নিরস্ত্রীকরণ প্রসঙ্গে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy