Advertisement
০২ মে ২০২৪

নেব না অস্ট্রেলিয়ার শরণার্থী, খাপ্পা ট্রাম্প

মার্কিন সংবাদমাধ্যমের দাবি যদি মানতে হয়, তা হলে গত শনিবার টেলিফোনে রীতিমতো কথা কাটাকাটি হয়েছে দুই রাষ্ট্রনেতার। এবং সেই কথোপকথনে নাকি আচমকা দাঁড়ি পড়েছে দু’জনের এক জন মাঝপথে ফোন কেটে দেওয়ায়।

সংবাদ সংস্থা
ওয়াশিংটন শেষ আপডেট: ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ০৩:০৩
Share: Save:

মার্কিন সংবাদমাধ্যমের দাবি যদি মানতে হয়, তা হলে গত শনিবার টেলিফোনে রীতিমতো কথা কাটাকাটি হয়েছে দুই রাষ্ট্রনেতার। এবং সেই কথোপকথনে নাকি আচমকা দাঁড়ি পড়েছে দু’জনের এক জন মাঝপথে ফোন কেটে দেওয়ায়।

এতটাই নাকি সে দিন মেজাজ হারিয়েছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প! ফোনের অন্য প্রান্তে ছিলেন আমেরিকার ‘বন্ধু রাষ্ট্র’ অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী ম্যালকম টার্নবুল। বারাক ওবামার আমলের একটি চুক্তি অনুযায়ী, অস্ট্রেলিয়া থেকে অন্তত ১২৫০ জন শরণার্থীকে নেওয়ার কথা আমেরিকার। সম্প্রতি ট্রাম্প যে সাতটি দেশের নাগরিকদের আমেরিকায় ঢোকা নিষিদ্ধ করেছেন, এই শরণার্থীদের অনেকেই সেই দেশগুলির নাগরিক।

ট্রাম্প নাকি তাই অস্ট্রেলীয় প্রধানমন্ত্রীর কোনও যুক্তিই শোনেননি। উল্টে রেগে গিয়ে ফোনটা দড়াম করে রেখে দেন। ঠিক ছিল, দু’জনের কথা হবে এক ঘণ্টার ওপর। তা শেষ হয় মাত্র ২৫ মিনিটে। ট্রাম্প পরে নাকি এ-ও বলেন, প্রেসিডেন্ট হওয়ার পরে যত জন রাষ্ট্রপ্রধানের সঙ্গে তিনি কথা বলেছেন, তার মধ্যে সব চেয়ে খারাপ কথোপকথন এটাই।

এর পরে রাগী টুইটও করেছেন ট্রাম্প— ‘‘ভাবতে পারেন! অস্ট্রেলিয়া থেকে হাজার হাজার বেআইনি অভিবাসী নিতে রাজি হয়েছিল ওবামা প্রশাসন! কেন? এই বোকা বোকা চুক্তিটা আমি খতিয়ে দেখব।’’ মার্কিন সংবাদপত্রের দাবি, টার্নবুলকে খোঁচা দিয়ে ট্রাম্প অভিযোগ করেন, তিনি আমেরিকায় ‘নতুন বস্টন বম্বার’দের পাঠাতে চাইছেন। প্রসঙ্গত, ২০১৩-য় বস্টন ম্যারাথনে বিস্ফোরণ ঘটানো দুই জঙ্গিরই জন্ম হয়েছিল কিরগিজস্তানে।

মেয়ে ইভাঙ্কার সঙ্গে ট্রাম্প। হোয়াইট হাউসে। ইভাঙ্কা আর তাঁর স্বামী জ্যারেড কুশনারই এখন ট্রাম্পের সঙ্গে রয়েছেন। ছেলে ব্যারনের পড়াশোনার জন্য স্ত্রী মেলানিয়া হোয়াইট হাউসে আসেননি। ছবি: এএফপি।

সংবাদমাধ্যমে চর্চা শুরুর পরের দিকে কিছুটা বিতর্ক এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টাই করেছে দুই সরকার। অস্ট্রেলীয় প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘‘ওই টেলি-কথোপকথন নিয়ে আর বাড়তি কিছু বলব না। আমাদের খোলাখুলি কথা হয়েছে।’’ পরে এক রেডিও সাক্ষাৎকারে ট্রাম্পের ফোন কেটে দেওয়ার গল্পটা উড়িয়ে দিয়েছেন টার্নবুল। উল্টে দাবি করেছেন, চুক্তি মেনে চলতে রাজি হয়েছেন ট্রাম্প।

বরং কিছুটা দোলাচল রয়েছে আমেরিকার ব্যাখ্যায়। অস্ট্রেলীয় চ্যানেলে পাঠানো হোয়াইট হাউসের বিবৃতিতে প্রথমে বলা হয়েছিল, ‘চুক্তিটি নিয়ে এগোনো হবে কি না, প্রেসিডেন্ট তা বিবেচনা করছেন।’ কিন্তু হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র শন স্পাইসার দাবি করেছিলেন, চুক্তি মানতে রাজি হয়েছেন ট্রাম্প। এর পর আজ এক বিবৃতিতে মার্কিন বিদেশ মন্ত্রক বলেছে, ‘অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে পুরনো বন্ধুত্বের কথা ভেবেই প্রেসিডেন্ট ওই চুক্তি মেনে নিতে রাজি হয়েছেন।’ যদিও ট্রাম্প আর এ নিয়ে আর কোনও টুইট করেননি।

যে শরণার্থীদের নিয়ে মতবিরোধ, তাঁরাও কিন্তু অস্ট্রেলিয়ার মূল ভূখণ্ডে জায়গা পাননি। লাগোয়া বিভিন্ন দ্বীপের শিবিরে তাঁরা রয়েছেন। সংখ্যাটা প্রায় ১৬০০। ওবামা আমলের চুক্তি অনুযায়ী আমেরিকাকে এঁদের অন্তত ১২৫০ জনকে জায়গা দিতে হবে বলে অস্ট্রেলীয় প্রশাসনের দাবি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Malcolm Turnbull Donald Trump
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE