Advertisement
৩০ এপ্রিল ২০২৪
নিউ হ্যাম্পশায়ার প্রাইমারি

প্রতিপক্ষকে প্রায় দ্বিগুণ ভোটে হারিয়ে চমকে দিলেন ট্রাম্প

রাজনীতির আঙিনায় তিনি ‘বহিরাগত’। প্রচারের শুরু থেকেই চূড়ান্ত ‘বিতর্কিত’। গত সপ্তাহে আইওয়া ককাসে ৬ হাজারেরও বেশি ভোটে হেরে বেশ খানিকটা ব্যাকফুটেও চলে গিয়েছিলেন। কিন্তু গত কাল নিউ হ্যাম্পশায়ার প্রাইমারিতে ভোটের ফল বুঝিয়ে দিল, রিপাবলিকানদের হয়ে হোয়াইট হাউস দখলের দৌড়ে আপাতত তিনিই সব চেয়ে এগিয়ে।

সংবাদ সংস্থা
ওয়াশিংটন শেষ আপডেট: ১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ ০১:৩২
Share: Save:

রাজনীতির আঙিনায় তিনি ‘বহিরাগত’। প্রচারের শুরু থেকেই চূড়ান্ত ‘বিতর্কিত’। গত সপ্তাহে আইওয়া ককাসে ৬ হাজারেরও বেশি ভোটে হেরে বেশ খানিকটা ব্যাকফুটেও চলে গিয়েছিলেন। কিন্তু গত কাল নিউ হ্যাম্পশায়ার প্রাইমারিতে ভোটের ফল বুঝিয়ে দিল, রিপাবলিকানদের হয়ে হোয়াইট হাউস দখলের দৌড়ে আপাতত তিনিই সব চেয়ে এগিয়ে। প্রতিপক্ষকে হারালেন দ্বিগুণ ভোটে।

তিনি ডোনাল্ড ট্রাম্প। সত্তর ছুঁইছুঁই নিউ ইয়র্কের ধনকুবের। স্বনামধন্য ব্যবসায়ী এবং এক সময় টিভির রিয়্যালিটি শোয়ে আলোড়ন ফেলে দেওয়া ব্যক্তিত্ব। মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সেমি-ফাইনাল রাউন্ড বলছে, এ বার তিনি স্বমহিমায় ভোটের ময়দানেও। নিউ হ্যাম্পশায়ারের ভোটে নিকটতম রিপাবলিকান প্রার্থী ওহায়োর গভর্নর জন কাসিচকে ৫০ হাজারেরও বেশি ভোটে হারালেন ট্রাম্প। কাসিচের সঙ্গেই যুগ্মভাবে দ্বিতীয় স্থানে থাকলেন ফ্লোরিডার সাবেক গর্ভনর জেব বুশ।

এই নিউ হ্যাম্পশায়ারেই মুখ পুড়ল ডেমোক্র্যাট শিবিরের অন্যতম প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী হিলারি ক্লিন্টনের। আইওয়া ককাসের ভোটে ভেরমন্টের সেনেটর বার্নি স্যান্ডার্সের সঙ্গে তাঁর লড়াই টাইয়ে শেষ হয়েছিল। কিন্তু এই প্রাইমারির ভোটে সেই স্যান্ডার্সের কাছেই পর্যদুস্ত হন প্রাক্তন মার্কিন বিদেশচিব হিলারি। ২২ শতাংশ বেশি ভোট পেয়ে জিতলেন স্যান্ডার্স।

এখনও ভোট বাকি সাউথ ক্যারোলাইনা, নেভাদা প্রাইমারিতে। তবু ট্রাম্প-স্যান্ডার্সকেই লড়াইয়ের প্রথম সারিতে রাখছেন মার্কিন কূটনীতিকদের একাংশ। এঁরা দু’জনই মার্কিন রাজনীতির বর্তমান ধারার ঘোরতর বিরোধী। ট্রাম্প তবু প্রথম থেকেই চাপে রাখতে চাইছেন স্যান্ডার্সকে। গত কাল ফল ঘোষণার পরেই তিনি বলেন, ‘‘উনি (স্যান্ডার্স) তো পারলে দেশটাকেই লাটে উঠিয়ে দেবেন! কিন্তু সেটা কিছুতেই হতে দেব না।’’ প্রতিশ্রুতি দেন, প্রেসিডেন্ট হয়েই চিন-জাপান ও মেক্সিকো থেকে দেশে কর্মসংস্থান ফিরিয়ে আনবেন তিনি। লড়বেন আইএসের বিরুদ্ধে। একই সঙ্গে মেক্সিকো থেকে অবৈধ অনুপ্রবেশ ঠেকানোর উপরেও জোর দেন তিনি।

আর হিলারি কী বলছেন! দেশের প্রথম মহিলা প্রেসিডেন্ট হওয়ার দৌড়ে আবারও পিছিয়ে পড়লেন প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিন্টনের স্ত্রী। তাঁর ঘনিষ্ঠ মহলের দাবি, নিউ হ্যাম্পশায়ার যে এ ভাবে তাঁর দিক থেকে মুখ ফেরাবে, হিলারি তা আঁচও করেননি। কারণ আট বছর আগে এই প্রাইমারির ভোটই তিনি হারিয়েছিলেন সতীর্থ ডেমোক্র্যাট প্রার্থী বারাক ওবামাকে। আবার ১৯৯২-এ এই নিউ হ্যাম্পশায়ার থেকেই ভোটে জিতে ঘুরে দাঁড়ান বিল। হিলারি তবু মচকাতে নারাজ। আগামী প্রাইমারির ভোটে জোর টক্কর দেওয়ার ইঙ্গিত দিয়েই তিনি বলেন, ‘‘আমরা সত্যিকারের সমাধান চাই। মানুষের জীবনে বদল আনতে চাই। প্রয়োজনে এক-একটা ভোটের জন্যও লড়ব।’

জেতার পরে সেনেটর বার্নির মুখেও বদলের কথা। ফল ঘোষণার পরে তিনি বলেন, ‘‘নিউ হ্যাম্পশায়ার ভোটের ফল বুঝিয়ে দিল, মানুষ এ বার সত্যিই মার্কিন রাজনীতিতে পরিবর্তন চাইছেন।’’

মানুষের মেজাজ বুঝতে চাইছেন রাজনীতিকরাও। পরের দু’টি ভোট সাউথ ক্যারোলাইনা এবং নেভাদায়। যেখানে ভোটারদের একটা বড় অংশ আফ্রো-আমেরিকান বা জন্মসূত্রে মেক্সিকান। গত দু’টি নির্বাচনে তাঁরা ঢালাও সমর্থন জানিয়েছিলেন ওবামাকে। আর হিলারি এ বার প্রথম থেকেই নিজেকে ওবামার উত্তরসূরি বলে প্রচার করে আসছেন। কিন্তু হিলারি কি ওবামার ভোটব্যাঙ্কের ভাগ পাবেন? আশা টিকিয়ে রাখছেন প্রাক্তন বিদেশসচিব।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE