Advertisement
০২ মে ২০২৪

সব জেনেই কি বৈঠকে ট্রাম্প-পুত্র

মার্কিন দৈনিকটির দাবি, গত বছর মে থেকে জুনের মাঝামাঝি ‘ব্যস্ত সময়ে’ গোল্ডস্টোন একটি ই-মেল করেন ট্রাম্প জুনিয়রকে। যাতে বলা হয়, খোদ রাশিয়ারই এক প্রতিনিধি তাঁর সঙ্গে মার্কিন ভোটের ব্যাপারে কথা বলতে চান।

ডোনাল্ড ট্রাম্প জুনিয়র

ডোনাল্ড ট্রাম্প জুনিয়র

সংবাদ সংস্থা
ওয়াশিংটন শেষ আপডেট: ১২ জুলাই ২০১৭ ০৪:০০
Share: Save:

ভোটের আগে রুশ আইনজীবীর সঙ্গে ডোনাল্ড ট্রাম্প জুনিয়রের বৈঠক অন্তত মাসখানেক আগে থেকেই ঠিক করা ছিল বলে আজ দাবি করল একটি মার্কিন দৈনিক। বৈঠকটির মধ্যস্থতা করেছিলেন প্রাক্তন ব্রিটিশ সাংবাদিক রব গোল্ডস্টোন। প্রকাশিত প্রতিবেদনটিতে এ-ও বলা হয়েছে যে, ওই বৈঠকে ডেমোক্র্যাট প্রার্থী হিলারি ক্লিন্টনকে ঘায়েল করার যথেষ্ট রসদ পাওয়ার সম্ভাবনা আছে জেনেই আলোচনায় রাজি হয়েছিলেন ডোনাল্ড-পুত্র।

ম্যানহাটনের ট্রাম্প টাওয়ারে বিতর্কিত ওই বৈঠকটি হয়েছিল ২০১৬-র ৬ জুন। গত কাল তা স্বীকার করেও জুনিয়র ট্রাম্প জানিয়েছিলেন, ওই আলোচনা একেবারেই ফলপ্রসূ হয়নি। তাঁর দাবি, ক্রেমলিন-ঘনিষ্ঠ আইনজীবী নাতালিয়া ভেসেলনিৎস্কায়া গোড়ায় হিলারি-বধের অস্ত্র তুলে দেওয়ার কথা বলেও আখেরে কিছুই দেননি। প্রায় আধঘণ্টা তা হলে কী নিয়ে কথা হয়েছিল বৈঠকে— গত কাল থেকেই এই প্রশ্নে সরগরম গোটা দুনিয়া। তারই মধ্যে আজ ফের বোমা ফাটাল ওই মার্কিন দৈনিক। গত শনিবার যারা ওই বৈঠকের কথা প্রথম ফাঁস করে দিয়ে ইতিমধ্যেই চাপে ফেলে দিয়েছে ট্রাম্প-শিবিরকে।

মার্কিন দৈনিকটির দাবি, গত বছর মে থেকে জুনের মাঝামাঝি ‘ব্যস্ত সময়ে’ গোল্ডস্টোন একটি ই-মেল করেন ট্রাম্প জুনিয়রকে। যাতে বলা হয়, খোদ রাশিয়ারই এক প্রতিনিধি তাঁর সঙ্গে মার্কিন ভোটের ব্যাপারে কথা বলতে চান। বিতর্কিত ওই বৈঠকের ব্যাপারে কথাবার্তা চলছে বলে জানতেন হোয়াইট হাউসেরও অন্তত তিন জন কর্মকর্তা। খবরটাও সেই সূত্রেই। অবশ্য মস্কো ঠিক কী ভাবে ট্রাম্প-শিবিরের প্রচারে সাহায্য করতে চায়, ই-মেলে তা স্পষ্ট করেননি গোল্ডস্টোন।

তার পর ভোটের ঠিক মুখে, তাদের সার্ভার হ্যাক হয়েছে বলে ব্যাপক সাড়া ফেলে দেয় ডেমোক্র্যাট শিবির। এ নিয়ে সরাসরি রাশিয়ার দিকেই আঙুল তোলেন হিলারি। তবে এর সঙ্গে আদৌ ট্রাম্প-টাওয়ারের ওই বৈঠকের কোনও সম্পর্ক আছে কি না, তা স্পষ্ট হয়নি। কিন্তু ওই বৈঠকের ঠিক সপ্তাহখানেকের মাথায় সার্ভার-হ্যাকিংয়ের অভিযোগ ওঠে বলেই এখন দুইয়ে-দুইয়ে চার করছেন মার্কিন কূটনীতিকদের একাংশ।

মার্কিন ভোটে রাশিয়ার হস্তক্ষেপ নিয়ে জাস্টিস ডিপার্টমেন্টের পাশাপাশি তদন্ত করছে কংগ্রেসের বিশেষ তদন্তকারী দল। সূত্রের খবর, তাদের বিশেষ নজর এখন জুনিয়র ট্রাম্পের মেল-বক্সের দিকেও।

প্রেসিডেন্ট তো বটেই, সম্প্রতি হামবুর্গে তাঁর প্রশ্নের উত্তরে মার্কিন ভোটে রুশ হস্তক্ষেপের অভিযোগ সরাসরি উ়ড়িয়ে দিয়েছেন ভ্লাদিমির পুতিনও। কিন্তু ছেলেকে জড়িয়ে নয়া বিতর্কে মুখ খুলতে চাইছেন না ট্রাম্প। টুইটারে যদিও আজ তাঁকে দিনভর অন্য নানা বিষয় নিয়ে কথা বলতে শোনা গিয়েছে। জুনিয়র ট্রাম্পের দাবি, তাঁর বাবা এই বৈঠকের ব্যাপারে কিছুই জানতেন না। হোয়াইট হাউসের ডেপুটি মিডিয়া-সচিব সারা হুকাবি স্যান্ডার্সও আজ সেই সুরে বলেন, ‘‘প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রভাব ফেলতে পারে, এমন অশুভ আঁতাঁতের সঙ্গে ট্রাম্প পরিবারের কেউ কোনও দিন জড়িত ছিলেন না।’’

কিন্তু গোল্ডস্টোনের ই-মেল যে অন্য কথা বলছে! গোড়ায় উড়িয়ে দিলেও, সংবাদমাধ্যমের চাপাচাপিতে ট্রাম্প-পুত্রকে ওই মেল পাঠানোর স্বীকার করে নিয়েছেন প্রাক্তন ওই ব্রিটিশ সাংবাদিক। তবে তিনিও বলছেন, প্রচারের কাজে লাগে এমন কোনও তথ্যই সে দিন দিতে পারেননি রুশ আইনজীবী। গোল্ডস্টোনের
দাবি, তার পর তিনি এক বারই ই-মেল করেছিলেন ট্রাম্প-পুত্রকে। নভেম্বরের ভোটে তাঁর বাবাকে বিজয়ী অভিনন্দন জানাতে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE