শানদার: তলোয়ারে বরণ মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে। রিয়াধের মুরাব্বা প্যালেসে। ছবি: এপি।
সৌদি রাজার সঙ্গে কাল চুক্তি করেছেন ৩৫ হাজার কোটি ডলারের। আর আজ ৪০টি মুসলিম দেশকে যুক্তি দিয়ে বোঝালেন, জঙ্গি দমনে কেন তাদের আমেরিকার পাশে থাকা প্রয়োজন। মুসলিম দেশের নেতাদের বললেন, ‘‘জঙ্গিদের তাড়ান। আপনাদের দেশ থেকে, ধর্মস্থান থেকে, এই পৃথিবী থেকে।’’ সেই সঙ্গে ইরানকে গোটা বিশ্বে একঘরে করে ফেলার ডাক দিলেন তিনি।
রবিবার এখানে এক বক্তৃতায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সরাসরি বললেন, ইসলামের সঙ্গে আমেরিকার কোনও লড়াই নেই। তাঁর মন্তব্য, ‘‘দু’টো বিশ্বাস, দু’টো ধর্ম বা দু’টো সভ্যতার মধ্যে লড়াই নেই। লড়াইটা ভালর সঙ্গে খারাপের।’’ বিশদে ট্রাম্প বোঝান, ‘‘মানুষের জীবন শেষ করে দেয় যে সব বর্বর অপরাধী, লড়াইটা তাদের সঙ্গে।’’
কূটনীতিকদের দাবি, এ যাত্রায় নিজের ‘মুসলিম-বিদ্বেষী’ তকমা যথাসম্ভব ঘোচানোর লক্ষ্য ছিল ট্রাম্পের। তাই মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারবারই ইসলামি সন্ত্রাসের কথা বলেছেন। ধর্মকে এর সঙ্গে গুলিয়ে ফেলেননি। উল্টে জানিয়েছেন, ইসলাম বিশ্বের অন্যতম সেরা ধর্ম।
গত কালই সপরিবার রিয়াধে এসেছেন ট্রাম্প। এখান থেকে এর পরে যাবেন ইজরায়েল ও প্যালেস্তাইন। তার পর বেলজিয়াম, ভ্যাটিকান ও সিসিলিতে। কিন্তু প্রথমেই সৌদি দেশে পা কেন? কূটনীতিকদের একাংশের দাবি, এর পিছনে কূটনীতির পাশাপাশি আমেরিকার অর্থনৈতিক এবং সামরিক স্বার্থও জড়িয়ে আছে। সৌদির সঙ্গে আমেরিকা গত কাল যে সব চুক্তি করেছে, তার মধ্যে শুধু অস্ত্র বিক্রির অঙ্কটাই ১১ হাজার কোটি ডলারের। দু’দেশের মধ্যে এত বড় অস্ত্র-চুক্তি এর আগে হয়নি। এ নিয়ে মন্তব্য করতে গিয়ে ট্রাম্পের বিদেশসচিব বলেন, ‘‘ইরানের ক্ষতিকারক প্রভাব রুখতেই এই চুক্তি। আমাদের বিশ্বাস, প্রতিরক্ষা সরঞ্জামের এই প্যাকেজ সৌদি আরব তথা গোটা উপসাগরীয় অঞ্চলে দীর্ঘস্থায়ী নিরাপত্তা এনে দেবে।’’
আরও পড়ুন: এই গরমে পাড়ি দিন উত্তরে
ট্রাম্পের সৌদি-সফরের আরও একটা কারণ রয়েছে বলে অনুমান কূটনীতিকদের। আর তা হল, এই ‘আরব ইসলামিক আমেরিকান সম্মেলন’। মনে করা হচ্ছে, সম্মেলনের মঞ্চ থেকেই নিজের সেই ‘নেতিবাচক’ ভাবমূর্তি শোধরানোর একটা চেষ্টা করতে পারেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। সম্মেলন শুরুর আগেই আজ মিশর, কাতার-সহ এক ঝাঁক আরব দেশের নেতার সঙ্গে আলাদা-আলাদা বৈঠক করেন ট্রাম্প।
পশ্চিম এশিয়ার ভূ-রাজনীতিতে সৌদির ভূমিকা বরাবরই গুরুত্বপূর্ণ। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ট্রাম্পের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘‘প্রথম বিদেশ সফর হিসেবে সৌদিকে বেছে নেওয়ার ক্ষেত্রে এ সব বিষয়ও কাজ করেছে প্রেসিডেন্টের মাথায়।’’ তাঁর দাবি, হোয়াইট হাউসে আসার আগে থেকেই রিয়াধের সঙ্গে সফর নিয়ে আলোচনা শুরু করে দিয়েছিলেন ট্রাম্প।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy