Advertisement
১৭ মে ২০২৪

দুর্গাপুজো বাড়ছে স্ক্যান্ডিনেভিয়াতেও

হেলসিঙ্কির সুমন চৌধুরী, শান্তিময় চক্রবর্তী আর অসলোর গোপা সেন, পল্লবীতা দাস— এই মুহূর্তে এঁদের ব্যস্ততা রীতিমত তুঙ্গে। জোরকদমে প্রস্তুতি চলছে কোপেনহাগেনের পুজোস্থল হারাল্ডসগেডেও। মার্কিন মুলুক বা ব্রিটেনের পুজোর কথা তো অনেকের জানা।

অশোক সেনগুপ্ত
শেষ আপডেট: ১২ অক্টোবর ২০১৫ ১৭:২৯
Share: Save:

হেলসিঙ্কির সুমন চৌধুরী, শান্তিময় চক্রবর্তী আর অসলোর গোপা সেন, পল্লবীতা দাস— এই মুহূর্তে এঁদের ব্যস্ততা রীতিমত তুঙ্গে। জোরকদমে প্রস্তুতি চলছে কোপেনহাগেনের পুজোস্থল হারাল্ডসগেডেও। মার্কিন মুলুক বা ব্রিটেনের পুজোর কথা তো অনেকের জানা। কিন্তু মাতোয়ারায় একবিন্দু পিছিয়ে নেই এই বাংলা থেকে বহু দূরে স্ক্যান্ডিনেভিয়ার বিত্তবান তিন দেশ ডেনমার্ক, ফিনল্যান্ড, নরওয়ে।

www.beninden.dk— মাউসে ক্লিক করতেই পর্দায় মা দূর্গার মুখ, সঙ্গে মনকাড়া ঢাকের বাদ্যি। পর্দায় একের পর এক ভেসে যাচ্ছে চিংড়ি আর ইলিশ মাছের বাটি-সহ পঞ্চব্যঞ্জনে সাজানো থালা, গাঁয়ের ক্ষেত, কুঁড়ে, মাথায় শুকনো ডালপালা নিয়ে বধূর সিলিউ়ড ছবি, কাশফুলের ঝাড়, ঝোপের ফাঁক দিয়ে দেখা চলন্ত ট্রেন, মায় কলকাতার দুই আইকন হাওড়া ব্রিজ আর ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল। কারণ এই ছবিগুলোই তো ওঁদের মনে গেঁথে আছে! ওঁদের মানে, ডেনমার্কের প্রবাসী বাঙালিদের।

২০১২-তে কোপেনহাগেনের প্রবাসী বাঙালিরা দুর্গাপুজো শুরু করে। স্থানীয় সাথী আর দূরের স্বজন— সবাইকে এক সূত্রে গেঁথেছে ওঁদের পুজো-সাইট। এতে উল্লেখ করা আছে তিন দিনের পুজোয় মাথাপিছু প্যাকেজ-খরচ কত, ১১ বছরের কমবয়সীদের কোনও খরচ নেই। ‘গঙ্গা আর পদ্মার সংস্কৃতির টানে’ তৈরি হয়েছে বিশেষ মেল আইডি durgapuja@beninden.dk। সাইটে ভাসছে উৎসবের অভিব্যক্তি—

‘‘কোন পুরাতন প্রাণের টানে

ছুটেছে মন মাটির পানে।।

চোখ ডুবে যায় নবীন ঘাসে,

ভাবনা বাসে পুর-বাতাসে।’’

ছন্দে মনের ভাব ফুটিয়ে তুলেছে নরওয়ের বাঙালিরাও। অসলোর সাইটে তাই ভাসছে ‘‘পুজো মানেই রঙের বাহার,/ পুজো হল আমার তোমার।।/ পুজো আনে হাসির ছোঁয়া।/ আদর আর আড্ডা ধোয়া।’’ পুজো নিয়ে জানতে চাইলে ক্লিক করতে পারেন www.oslopuja.com। কিছু জানাতে মেল করতে পারেন oslopuja@gmail.com-এ।

২০০৯-এ শুরু হয় অসলোর দুর্গাপুজো। কারণ, সেই স্মৃতিমেদুরত— 'nostalgia, thy name is durgapuja'। সাইটেও ওঁরা লিখেছেন, ‘‘দুর্গাপুজোর সঙ্গে বাঙালিয়ানার এক ওতপ্রোত সম্বন্ধ। নিজের শহর, নিজের মানুষের থেকে যে যত দূরেই থাকুক, বছরের এই সময় এই নাড়ীর টানকে উপেক্ষা করা প্রত্যেক বাঙালির জন্যই বেশ কষ্টদায়ক।’’ গোপা আর পল্লবীতা ছাড়াও কোমড় বেঁধে পুজো সফল করতে নেমে পড়েছেন নলিনাভ সেনগুপ্ত, উর্মিলা দত্ত, সুদীপা চক্রবর্তীর মত একঝাঁক উদ্যোগী। অসলোর সাই খুলতেই চোখে পড়বে দেবীর সুন্দর মুখ, মহালয়ার স্তোত্র। সঙ্গে শুনতে পাবে বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রর সেই জলদগম্ভীর পাঠ।

কলকাতা থেকে হেলসিঙ্কি— দূরত্ব প্রায় পৌনে নয় হাজার কিলোমিটার। সেখানে রাশটিলা মেট্রো স্টেশনের কাছে আসুকাস্তিলো কুলকুরিতে এবার হবে অষ্টাদশ দুর্গাপুজো। বাংলার পুজোর মত পঞ্জিকা মেনে নয়, বিদেশের অধিকাংশ পুজোর মত ফিনল্যান্ডের এই পুজোও হবে সপ্তাহান্তে, ২৩ থেকে ২৫ অক্টোবর। আছে গান-বাজনা, ছোটদের বসে আঁকো— এ সব। অর্থ সংগ্রহ হচ্ছে সিজন/ডে/সংস্কৃতি-সন্ধ্যার পাস মারফৎ। ফিনল্যান্ড সার্বজনীন পুজোর সাইটেও শুনবেন ঢাকের মন উদাস করা বাজনা। পুজো-অঞ্জলি-প্রসাদ-দ্বিপ্রাহরিক ও নৈশভোজ কবে ক’টায় সব জানিয়ে দেওয়া হয়েছে সাথীদের।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Durgapuja Scandinavia
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE