মাসের শেষ দিন। হাতে টাকা পয়সা হয়তো খুব একটা নেই। কিন্তু হাতে সময় আছে কিঞ্চিৎ বেশি— এক সেকেন্ড! ঘড়ি কাল আপনাকে ২৪ ঘণ্টার চেয়ে এক সেকেন্ড বেশি সময় উপহার দেবে। এমনটাই জানিয়েছেন নাসার বিজ্ঞানীরা।
রাত এগারোটা বেজে ঊনষাট মিনিট ঊনষাট সেকেন্ডের পর ঘড়িতে কাল বারোটা বাজবে না। এগারোটা বেজে ঊনষাট মিনিট ষাট সেকেন্ডে এসে খানিক থামবে ঘড়ি। তার পর বাজবে বারোটা। ক্যালেন্ডার পৌঁছে যাবে পরের মাসে।
এই অতিরিক্ত এক সেকেন্ডটি আসলে কী?
বৈজ্ঞানিক পরিভাষায় এর নাম ‘লিপ সেকেন্ড’। পৃথিবী নাকি দিন দিন অলস হয়ে পড়ছে। নাসার বিজ্ঞানীরা বলেছেন, পৃথিবী এখন নিজের অক্ষের চার পাশে ঘুরতে বেশি সময় নিচ্ছে। এর মূল কারণ, পৃথিবী, চাঁদ আর সূর্যের মধ্যে মাধ্যাকর্ষণের ফলে দড়ি টানাটানি অবস্থা। আর এই ধীর গতিতে পরিক্রমণ করার জন্যই কোনও কোনও বছরে লিপ সেকেন্ডটি যোগ করা হয়।
বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, পৃথিবীর নিজের অক্ষের চার পাশে ঘুরতে যতটা সময় লাগে, তাই এক দিনের মাপ। সাধারণত, তা ২৪ ঘণ্টা বা ৮৬৪০০ সেকেন্ড। কিন্তু বর্তমানে ৮৬৪০০ সেকেন্ডের পরিবর্তে নিজের অক্ষ পরিক্রমণ করতে পৃথিবীর সময় লাগছে ৮৬৪০০.০০২ সেকেন্ড। বিজ্ঞানীদের কথা অনুযায়ী গণ্ডগোলটি হচ্ছে ১৮২০ সাল থেকে।
এই অতিরিক্ত দুই মিলি সেকেন্ড বা এক সেকেন্ডের এক হাজার ভাগের দুই ভাগকে হিসেবে মেলানোর জন্যই এত ঝক্কি বিজ্ঞানীদের! প্রতি বছর যদি এই দুই মিলি সেকেন্ডের গরমিলটা চলতে থাকে, তখন এক সময় তা জমতে জমতে এক সেকেন্ড হয়। যা লিপ সেকেন্ড হিসেবে যোগ করা হয় কোনও একটি দিনে।
সাধারণত ৩০ জুন বা ৩১ ডিসেম্বর যোগ করা হয় লিপ সেকেন্ডটি। প্রথম লিপ সেকেন্ড যোগ করা হয়েছিল ১৯৭২ সালে। ২০০০ সালের পর এই নিয়ে চতুর্থ বার লিপ সেকেন্ড যোগ হবে কোনও বছরের একটি মাসে।
তবে এর ফলে কম্পিউটারে সমস্যা দেখা দিতে পারেও মন্তব্য করেছেন কম্পিউটার বিজ্ঞানীরা। বলেছেন, কোনও কোনও কম্পিউটারে ষাট সেকেন্ডটি দেখানোর পরিবর্তে ঊনষাট সেকেন্ডটি দু’বার দেখাতে পারে। এর ফলে কম্পিউটারে সমস্যাও দেখা দিতে পারে বলে জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। তবে তা ঠিক কী, সে বিষয়ে তাঁরা নির্দিষ্ট করে কিছু বলতে পারেননি।
সমস্যা যাই হোক, কাল যদি রাত বারোটার আগে ঘুমিয়ে পড়তে পারেন, তা হলে আপনি ঘুমোনোর জন্য অন্তত অতিরিক্ত এক সেকেন্ড পেয়ে যাবেন। তাই বা কম কী!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy