Advertisement
২৯ এপ্রিল ২০২৪

নামের ভুলে বোনের জন্য তিন মাস জেল খাটলেন দিদি!

পাসপোর্টে সোনা চোরাচালানকারী বোনের নামের সঙ্গে মিল থাকায় জেল খাটতে হল দিদিকে! টানা তিন মাস। পাসপোর্ট দেখে আদালত গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে লাকি আক্তার মুক্তার নামে। কিন্তু গত বছরের ১৭ নভেম্বর পুলিশ আদত অপরাধী ছোট বোন লাকি আক্তার মুক্তাকে গ্রেফতার না করে বড় বোন লাকিকে গ্রেফতার করে। তাঁকেই আদালতে তোলা হয়।তাঁর তিন মাসের জেল হয়। সেই থেকে তিনি জেলেই।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ ১৫:৪৩
Share: Save:

পাসপোর্টে সোনা চোরাচালানকারী বোনের নামের সঙ্গে মিল থাকায় জেল খাটতে হল দিদিকে! টানা তিন মাস।

আদালত ও পুলিশ সূত্রের খবর, ছোট বোন মুক্তা বেগম সোনা চোরাচালান মামলার অভিযুক্ত।তাঁর দিদির নাম লাকি।কিন্তু তাঁর ছোট বোন মুক্তা পাসপোর্টে তাঁর নামের সঙ্গে দিদির নামটিকেও জুড়ে দিয়েছিলেন।পাসপোর্টে তিনি হয়ে গিয়েছিলেন লাকি আক্তার মুক্তা।

পাসপোর্ট দেখে আদালত গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে লাকি আক্তার মুক্তার নামে। কিন্তু গত বছরের ১৭ নভেম্বর পুলিশ আদত অপরাধী ছোট বোন লাকি আক্তার মুক্তাকে গ্রেফতার না করে বড় বোন লাকিকে গ্রেফতার করে। তাঁকেই আদালতে তোলা হয়।তাঁর তিন মাসের জেল হয়। সেই থেকে তিনি জেলেই।

ঘটনা নাটকীয় মোড় নেয় গত বৃহস্পতিবার। ওই দিন লাকি আক্তার মুক্তা ঢাকার আদালতে আত্মসমর্পণ করে জানান, তিনিই প্রকৃত অভিযুক্ত। তাঁর দিদি একেবারেই নির্দোষ। দিদিকে মুক্তি দেওয়ার আর্জি জানান লাকি আক্তার মুক্তা। সেই আর্জি শুনে ঢাকার ১৬ নম্বর মহানগর বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক আবুল কাসেম নির্দোষ বড় বোন লাকিকে মুক্তির আদেশ দেন। জেলে পাঠান ছোট বোন মুক্তাকে। বিচারক তাঁর নির্দেশ দিতে গিয়ে বলেছেন, ‘‘আদত অভিযুক্ত লাকি আক্তার মুক্তা স্বেচ্ছায় আত্মসমর্পণ করায় এটি স্পষ্ট যে, আগে গ্রেফতার হওয়া লাকি মামলার আসামি নন।তাই তাঁকে মুক্তির আদেশ দেওয়া হল।আর মামলার প্রকৃত আসামি লাকি আক্তার মুক্তাকে পাঠানো হোক জেলে।’’

নিরপরাধ লাকি আদালতের ওই নির্দেশ শুনে কান্নায় ভেঙে পড়েন। কোনও অপরাধ না করেও জেল খাটার জন্য তিনি আইনেরই দ্বা্রস্থ হতে চান। চান সঠিক বিচারও।পুলিশ জানাচ্ছে, গত বছরের ১২ এপ্রিল এক কেজি সোনা সহ শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে গ্রেফতার হন লাকি আক্তার মুক্তা।পরে তাঁর নামে বিমানবন্দর থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়। গত ৯ জুলাই জামিন পান লাকি। এর পরই ছাড়া পান আদত অভিযুক্ত মুক্তা। বিষয়টি নিয়ে তখন সংবাদমাধ্যমে তুমুল হই চই হওয়ায়, গত ৩০ অগস্ট লাকি আক্তার মুক্তার জামিন বাতিল করে হাইকোর্ট। তার পর থেকেই তিনি পলাতক ছিলেন। পরে আদালত লাকি আক্তার মুক্তার নামে ফের গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে। সেই পরোয়ানার ভিত্তিতেই যাত্রাবাড়ী থানার পুলিশ নিরপরাধ লাকিকে গ্রেফতার করে জেলে পাঠায়।

কেন এমন হল?

পুলিশের বক্তব্য, ‘‘বড় বোনের নাম লাকি। আবার ছোট বোনের নামের এক জায়গায় লাকি রয়েছে। এই দু’জনের স্বামীদের নামেও কিছু মিল রয়েছে। বড় বোনের স্বামীর নাম হারুন দেওয়ান আর ছোট বোনের হারুন-অর-রশিদ। নামের মিল থাকায় লাকিকে গ্রেফতার করা হয়েছিল।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

sister jail home young it
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE