Advertisement
৩০ এপ্রিল ২০২৪
Holi

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে হোলি খেলা বারণ পাকিস্তানে

ইসলামাবাদের কায়েদ-ই-আজম বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রছাত্রীদের সোৎসাহ হোলি খেলার ভিডিয়ো জনমাধ্যমে ভাইরাল হয়। মেহরান স্টুডেন্টস কাউন্সিল নামে একটি সাংস্কৃতিক সংগঠন অনুষ্ঠানটির আয়োজন করেছিল।

An image of Colours

—প্রতীকী চিত্র।

সংবাদ সংস্থা
ইসলামাবাদ শেষ আপডেট: ২২ জুন ২০২৩ ০৫:৪৫
Share: Save:

বিশ্ববিদ্যালয় এবং কলেজ ক্যাম্পাসে হোলি খেলা নিষিদ্ধ করল পাকিস্তান। ২০ জুন পাকিস্তানের উচ্চশিক্ষা কমিশন (এইচইসি) বিজ্ঞপ্তি জারি করে বলেছে, পড়ুয়াদের উচিত দেশের ‘সামাজিক-সাংস্কৃতিক মূল্যবোধ’ অক্ষুণ্ণ রাখা। হোলি খেলাকে দৃশ্যতই তার পরিপন্থী বলে মনে করছে প্রশাসন। এই নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছে পাকিস্তানেই।

সম্প্রতি ইসলামাবাদের কায়েদ-ই-আজম বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রছাত্রীদের সোৎসাহ হোলি খেলার ভিডিয়ো জনমাধ্যমে ভাইরাল হয়। মেহরান স্টুডেন্টস কাউন্সিল নামে একটি সাংস্কৃতিক সংগঠন অনুষ্ঠানটির আয়োজন করেছিল। ‘পাকিস্তানের সবচেয়ে বড় হোলি উদ্‌যাপন’ বলে প্রচারও করেছিল। বিশ্ববিদ্যালয়ের টুইটার হ্যান্ডলে তার ভিডিয়ো দেখে নেটিজেনদের একটা বড় অংশ তার সমর্থনে এগিয়ে আসেন। অনেকেই মন্তব্য করেন, ‘এই বহুত্ববাদী সংস্কৃতিই কায়েদ-ই-আজম চেয়েছিলেন। বিভাজন-জর্জরিত সময়ে এই রকম দৃষ্টান্তই তুলে ধরা উচিত। অবশেষে আশার আলো দেখা যাচ্ছে।’

অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ে কেন এমন করা যায় না, তা নিয়ে দুঃখ প্রকাশ করেন অনেকে। মনে রাখা যেতে পারে, মার্চ মাসে পঞ্জাব বিশ্ববিদ্যালয়ে হোলি খেলতে গিয়ে একটি কট্টরপন্থী ইসলামি ছাত্র সংগঠনের হাতে ১৫ জন হিন্দু পড়ুয়া আক্রান্ত হয়েছিলেন। সুতরাং মেহরান স্টুডেন্টস কাউন্সিলকে বাহবা দিয়ে অনেকেই মনে করিয়ে দেন, জমিয়তের মতো সংগঠন এই বিশ্ববিদ্যালয়ে দাঁত ফোটাতে পারেনি বলেই এই রকম অনুষ্ঠান করা যাচ্ছে। অনেকেই খুশি যে, মেয়েরাও যোগ দিয়েছেন হোলিতে। আবার কেউ প্রশ্ন তুলেছেন, নাচের ভিড়ে মেয়েরা সে ভাবে নেই কেন?

আবার একই সঙ্গে ভুরুও কুঁচকে গিয়েছে কারও কারও। এলজিবিটিকিউ-এর ‘গৌরবের মাসে’ (প্রাইড মান্থ) হোলির এই আয়োজন কী প্রমাণ করছে? প্রশ্ন তুলেছেন তাঁরা। বক্রোক্তি করে বলেছেন— ‘‘এ কী বেহায়াপনা? দু’তিন জন হিন্দুর জন্য গোটা ক্যাম্পাসে হোলি খেলতে হবে?’’ এইচইসি কার্যত এই দ্বিতীয় দলের সুরেই সুর মিলিয়েছে। ‘সংস্কৃতিগত, জাতিগত, ধর্মগত বৈচিত্র সমন্বয়ী এবং সহিষ্ণু সমাজ গড়ে তোলে’ বলে স্বীকার করেও বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ‘‘সবই একটা পরিমিতির মধ্যে থাকা ভাল। বাড়াবাড়ির প্রয়োজন নেই।’’ হোলির ওই অনুষ্ঠান ‘দেশের ইসলামি আত্মপরিচয়ের অবক্ষয়ের চিহ্ন’ বলে বর্ণনা করে বলা হয়েছে, ‘‘এতে দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হয়েছে।’’ পড়ুয়াদের প্রতি তাদের নির্দেশ, ‘‘দেশের আত্মপরিচয় এবং সামাজিক মূল্যবোধের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ যে কোনও অনুষ্ঠান থেকে দূরে থাকো।’’

যদিও দেশের মধ্যেই এই বিজ্ঞপ্তি নিয়ে তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েছে এইচইসি। মুখ খুলেছেন সাংবাদিক, গবেষক, সমাজকর্মী, অভিনেতারা। অনেকেরই অভিযোগ, দেশের ভাবমূর্তি যদি নষ্ট হয়েই থাকে, তা হলে টোকা পিএইচ ডি-র জন্য হচ্ছে। হোলির জন্য নয়। এর পর আর অন্য দেশকে ইসলামবিদ্বেষ নিয়ে সমালোচনা করার মুখ থাকবে কি? প্রশ্ন তাঁদের।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Holi Pakistan ban educational institution
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE