Advertisement
৩০ এপ্রিল ২০২৪

তিন রাজাপক্ষের চাপে ঘরে-বাইরে প্যাঁচে দিল্লি 

কূটনৈতিক সূত্রের বক্তব্য, ঘরোয়া রাজনৈতিক বাধ্যবাধকতার কারণে আজ তামিলদের ‘সাম্য’, ‘ন্যায়’ এবং ‘সম্মানের’ কথা এভাবে জোর দিয়ে বলতে হচ্ছে বিদেশ মন্ত্রককে।

দু’ভাই: প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপক্ষের শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপক্ষ। কলম্বোয়। এপি

দু’ভাই: প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপক্ষের শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপক্ষ। কলম্বোয়। এপি

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২২ নভেম্বর ২০১৯ ০১:৫৮
Share: Save:

শ্রীলঙ্কার নতুন রাজনৈতিক জমানা নিয়ে যথেষ্ট হিমসিম খাচ্ছে নয়াদিল্লি। এক দিকে চিনা কাঁটা, অন্য দিকে দেশের তামিল আবেগ— এই দু’টি বিষয়ই চাপ তৈরি করছে মোদী সরকারের উপর। আজ সাংবাদিক সম্মেলন করে পরিস্থিতি সামলানোর চেষ্টা করল বিদেশ মন্ত্রক।

গোতাবায়া রাজাপক্ষ শ্রীলঙ্কার নতুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পরে সাউথ ব্লকের প্রাথমিক দুশ্চিন্তা তৈরি হয়েছিল চিন প্রশ্নে। প্রকাশ্যেই চিন-পন্থা নিয়ে চলা এই রাজাপক্ষ পরিবারের সঙ্গে কূটনীতি এগোনোর ক্ষেত্রে নয়াদিল্লিকে যে বাড়তি পরিশ্রম করতে হবে, সেটাও স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে গত ক’দিনে সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপে। কিন্তু চিন-কাঁটার পাশাপাশি ভারতের অস্বস্তি আরও বাড়িয়ে মাহিন্দা রাজাপক্ষের পুত্র তথা গোতাবায়ার ভাইপো, সে দেশের রাজনীতিবিদ নমল রাজাপক্ষ বোমা ফাটিয়েছেন তামিলনাড়ুর নেতাদের বিরুদ্ধে। বংশগতভাবে তামিল-বিরোধী নমল বলেছেন, ‘‘শ্রীলঙ্কার তামিলদের জন্য কুমিরের কান্না বন্ধ করুন তামিলনাড়ুর রাজনীতিবিদরা।’’ এর পরে ডিএমকে, এমডিএমকে-র নেতারা শুধুমাত্র ক্ষোভই জানাননি, সংসদে বিষয়টি আলোচনার জন্য গতকাল নোটিসও দেওয়া হয়েছে।

আজ সাংবাদিক সম্মেলন করে এই অভ্যন্তরীণ তামিল ক্ষোভ সামলাতে বিবৃতি দিতে হয়েছে বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র রবীশ কুমারকে। তিনি বলেছেন, ‘‘বিদেশমন্ত্রী শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্টকে জানিয়েছেন যে, সে দেশের সরকার জাতীয় ঐক্য তৈরি করার প্রক্রিয়া এগিয়ে নিয়ে যাবে, এমনটাই আশা ভারতের। যে প্রক্রিয়ায়

সাম্য, ন্যায়, শান্তি ও সম্মান পাওয়ার জন্য তামিল সম্প্রদায়ের

আশা আকাঙ্ক্ষা মিটবে।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছেন, তিনি গোটা দেশেরই প্রেসিডেন্ট হয়ে উঠতে চাইছেন। কোনও জাত, সম্প্রদায়, ধর্মের বিভাজন দেখা হবে না।’’

কূটনৈতিক সূত্রের বক্তব্য, ঘরোয়া রাজনৈতিক বাধ্যবাধকতার কারণে আজ তামিলদের ‘সাম্য’, ‘ন্যায়’ এবং ‘সম্মানের’ কথা এভাবে জোর দিয়ে বলতে হচ্ছে বিদেশ মন্ত্রককে। আগামী ২৯ তারিখ গোতাবায়া আসছেন দিল্লি সফরে। তার আগে কূটনৈতিক পরিবেশ মেঘমুক্ত রাখার জন্য চেষ্টার কসুর করা হচ্ছে না সাউথ ব্লকের পক্ষ থেকে। গত কয়েক দিন ধরে প্রচার মাধ্যমে গোতাবায়ার সঙ্গে চিনের সুসম্পর্কের প্রিজমে ভারত-শ্রীলঙ্কা সম্পর্ক খতিয়ে দেখার বিষয়টিরও পরোক্ষে বিরোধিতা করেছে কেন্দ্র। বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্রের কথায়, ‘‘শ্রীলঙ্কা অথবা সেই অর্থে কোনও প্রতিবেশী রাষ্ট্রের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক কোনও তৃতীয় দেশের উপর নির্ভরশীল নয়। আমাদের বহুস্তরীয় সম্পর্কের ঐতিহাসিক এবং ভৌগলিক ভিত রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী তাঁর অভিনন্দনজ্ঞাপক টুইটে প্রথমেই জানিয়েছিলেন, শ্রীলঙ্কা সরকারের সঙ্গে সম্পর্ক গভীর করতে এবং গোটা অঞ্চলের নিরাপত্তার জন্য আমরা ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Sri Lanka Gotabaya Rajapaksa Mahinda Rajapaksa
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE