Advertisement
৩০ এপ্রিল ২০২৪
Chinese Spy Ship

একটি-দু’টি নয়, চার-চারটি চিনা জাহাজ ঘুরে বেড়াচ্ছে ভারতীয় উপকূলের কাছে! চিন্তা বাড়ছে দিল্লির

শ্রীলঙ্কার দক্ষিণে, ভারত মহাসাগরে, যে চারটি চিনা জাহাজ রয়েছে তাদের নাম— শিয়াং ইয়াং হং ০১, শিয়াং ইয়াং হং ০৩, ইউয়ান ওয়াং ০৩ এবং ডা ইয়াং হাও।

কলম্বোর অদূরে চিনা জাহাজ ‘শিয়াং ইয়াং হং-৩’।

কলম্বোর অদূরে চিনা জাহাজ ‘শিয়াং ইয়াং হং-৩’। —ফাইল ছবি।

সংবাদ সংস্থা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৫ মার্চ ২০২৪ ০৬:৪০
Share: Save:

ভারতীয় উপকূলের কাছাকাছি ঘুরে বেড়াচ্ছে বা সে দিকেই আসার পরিকল্পনা করছে একটি-দু’টি নয়, চার-চারটি চিনা জাহাজ। তাদের উদ্দেশ্য গুপ্তচরবৃত্তি বলেই অনুমান নয়াদিল্লির। দিন কয়েক পরে ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণ করতে পারে ভারত। এই সময়ে এলাকায় চিনা জাহাজের আনাগোনা ভারতকে চিন্তায় ফেলেছে। একই সঙ্গে এই জাহাজগুলিকে নোঙর করতে দেওয়া প্রসঙ্গে শ্রীলঙ্কার অবস্থান কী হবে, সে দিকেও নজর রাখছে ভারত।

শ্রীলঙ্কার দক্ষিণে, ভারত মহাসাগরে, যে চারটি চিনা জাহাজ রয়েছে তাদের নাম— শিয়াং ইয়াং হং ০১, শিয়াং ইয়াং হং ০৩, ইউয়ান ওয়াং ০৩ এবং ডা ইয়াং হাও। এদের মধ্যে শিয়াং ইয়াং হং ০১ ও ০৩ শ্রীলঙ্কার খুব কাছে চলে এসেছে। বাকি দু’টিরয়েছে কিছুটা দূরে। ইউয়ান ওয়াং ০৩ রয়েছে ইন্দোনেশিয়ার উপকূলের কাছে। ডা ইয়াং হাওয়ের অবস্থান ইন্দোনেশিয়া ও শ্রীলঙ্কার মাঝামাঝি একটি জায়গায়। জাহাজগুলির গতিপথ বিশ্লেষণ করে ভারতীয় গোয়েন্দারা অনুমান করছেন যে, সেগুলিও ভারতের দক্ষিণ-পূর্ব উপকূলের দিকেই এগিয়ে আসছে। সে ক্ষেত্রে শ্রীলঙ্কার বন্দরে তারা নোঙর ফেলার অনুমতি চাইতে পারে।

কয়েক দিন আগেই অবশ্য শিয়াং ইয়াং হং ০৩ জাহাজটি নোঙর করার জন্য কলম্বোর কাছে অনুমতি চেয়েছিল বেজিং। চিনের দাবি ছিল, এই জাহাজটি গবেষণা চালানোর জন্য এই অঞ্চলে এসেছে। শ্রীলঙ্কা তখন চিনকে সেই অনুমতি দেয়নি। কূটনৈতিক সূত্রের খবর, কিছু দিন আগেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী শ্রীলঙ্কার কাছে অনুরোধ জানিয়েছিলেন, তারা যেন কোনও বন্দরে চিনা জাহাজ নোঙর করার অনুমতি না দেয়। দেশের প্রবল আর্থিক সঙ্কটের সময়ে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেওয়া ভারতের প্রধানমন্ত্রীর এই অনুরোধের পরেই শ্রীলঙ্কা চিনা জাহাজ নিয়ে কড়া অবস্থান নিয়েছে বলে অনুমান কূটনৈতিক মহলের। এর মধ্যেই শ্রীলঙ্কা একটি জার্মান গবেষণা জাহাজকে খাদ্য ও জ্বালানি তুলতে কলম্বোয় নোঙর করাঅনুমতি দিয়েছিল। তাতেই আরও চটে যায় চিন।

সূত্রের খবর, আগামী কয়েক দিনের মধ্যে ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার পরিকল্পনা রয়েছে দিল্লির। সম্ভবত সে জন্যই ২৬ থেকে ২৮ মার্চ এব‌ং ৩-৪ এপ্রিল বঙ্গোপসাগর-ভারত মহাসাগরে ১৬০০ কিলোমিটার এলাকা ‘নো ফ্লাই জ়োন’ হিসেবে ঘোষণা করেছে দিল্লি। সেই সময়ে চিনা জাহাজ এখানে আসার উদ্দেশ্য যে ভারতীয় ক্ষেপণাস্ত্রের গতিবিধি সম্বন্ধে নজরদারি চালানো, সে বিষয়ে নয়াদিল্লির কোনও সন্দেহ নেই।

১১ মার্চ আন্তর্মহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণ করেছিল ভারত। তখন সাড়ে তিন হাজার কিলোমিটারের একটি এলাকাকে ‘নো ফ্লাই জ়োন’ হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছিল। সেই সময়ে চিনা জাহাজ শিয়াং ইয়াং হং ০১ বিশাখাপত্তনম থেকে মাত্র ৪৬০ নটিকাল কিলোমিটার দূরে ছিল। ঠিক একই সময়ে শিয়াং ইয়াং হং ০৩ ‘গবেষণা’র জন্য মলদ্বীপের মালেতে নোঙর ফেলেছিল। তারপরেই ১৩ মার্চ নির্ধারিত ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার কর্মসূচি থেকে সরে আসে ভারত। চিনা জাহাজের নজরদারি এড়াতেই ভারত তখন এই সিদ্ধান্ত নিয়েছিল বলে সূত্রের খবর।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Indian Ocean China India
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE