ইরান-ইজ়রায়েল যুদ্ধ পরিস্থিতি। — ফাইল চিত্র।
মার্কিন প্রেসিডেন্টের দাবি, ইরানের পারমাণবিক কেন্দ্রে আক্রমণ করে ভাল করেছে ইজ়রায়েল। তিনি বলেন, আমার সমর্থকেরা ইরানকে পারমাণবিক অস্ত্র পেতে দেখতে চান না।
ট্রাম্পের দাবি, আক্রমণের আগে ইরান পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির কাছাকাছি ছিল। তবে বিগত কয়েক দিন তা থেকে দূরে থেকেছে ইরান।
আলোচনার সমস্ত দরজা ইরানের জন্য বন্ধ হয়েছে বললেও নিজের সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে পরে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, ইরান দেখা করতে চায়। তা করা যেতেই পারে। এখনও দরজা বন্ধ করে দেওয়া হয়নি।
আলোচনার বার্তা দিলেও একই সঙ্গে ট্রাম্পের হঁশিয়ারি, ইরানের বিরুদ্ধে কী ভাবে পদক্ষেপ নেওয়া হবে সে সম্পর্কে যথেষ্ট ভাবনা চিন্তা করা হলেও এখনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। এই প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে ট্রাম্পের কথায় উঠে আসে মার্কিন সামরিক সম্পদ ব্যবহারের ‘সম্ভাবনা’র কথাও। যদিও ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতোল্লা খামেনেই দাবি করেছেন, ইরান কোনও পরিস্থিতিতেই আত্মসমর্পণ করবে না।
আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের দাবি, হোয়াইট হাউসে গিয়েও আলোচনায় বসতে চেয়েছিল তেহরান। তবে ট্রাম্পের বক্তব্য, এখন অনেক দেরি হয়ে গিয়েছে। গত সপ্তাহের থেকে এখন পরিস্থিতি অনেক বদলে গিয়েছে। ইরান আর হামলা প্রতিরোধ করার মতো পরিস্থিতিতে নেই বলেও মনে করছেন তিনি।
ইরানে বা ইরানের কোনও পরমাণুকেন্দ্রে আমেরিকা হামলা চালানোর কোনও পরিকল্পনা ছিল কি না, তা নিয়েও বুধবার প্রশ্ন করা হয় ট্রাম্পকে। তবে সেই নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি তিনি। কথা প্রসঙ্গে ট্রাম্প এ-ও বলেন, “আমি কী করতে চলেছি, তা কেউই জানে না।”
জম্মু ও কাশ্মীর থেকে ইরানে যাওয়া পড়ুয়াদের নিয়ে বুধবার রাতেই দিল্লিতে ফিরে আসার কথা। অন্তত ১১০ জন ভারতীয় পড়ুয়াকে ইরান থেকে দেশে ফিরিয়ে আনা হচ্ছে। তাঁদের মধ্যে ৯০ জনই জম্মু ও কাশ্মীরের। সূত্রের খবর, কাতারের রাজধানী দোহা থেকে একটি বিমানে তাঁদের দেশে ফেরানো হচ্ছে।
সংযুক্ত আরব আমিরশাহির প্রেসিডেন্টের সঙ্গে ফোনে কথা বললেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। ক্রেমলিনের দাবি, ইরান এবং ইজ়রায়েলের পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়েছে তাঁদের। পশ্চিম এশিয়ার সংঘর্ষ থামাতে রাশিয়া যে মধ্যস্থতা করতে তৈরি, তা সংযুক্ত আরব আমিরশাহির প্রেসিডেন্টকে জানিয়েছেন পুতিন।
সব শেষে খামেনেই স্পষ্ট জানিয়েছেন, আমেরিকার মধ্যস্থতা মানবে না ইরান। খামেনেই বলেন, ‘‘ইরান ‘চাপিয়ে দেওয়া’ যুদ্ধ কিংবা শান্তি, কোনওটাই মেনে নেবে না।’’
ইজ়রায়েলের পাশাপাশি ট্রাম্পকেও বার্তা দিয়েছেন ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা। তিনি বলেন, ‘‘সকলের জেনে রাখা উচিত, ইরান আত্মসমর্পণ করবে না। আমেরিকা কোনও রকম হামলা করলে ভয়ঙ্কর পরিণতির জন্য তৈরি থাকতে হবে।’’ ট্রাম্পের হুমকি প্রসঙ্গে খামেনেই আরও বলেন, ‘‘যারা ইরানের ইতিহাস জানে, তাদের এটাও জানা উচিত, ইরানিরা হুমকিকে ভাল ভাবে নেয় না।’’
বুধবার দুপুর সাড়ে ৩টের পর পরই ভাষণ দিতে শুরু করেন খামেনেই। তিনি বলেন, ‘‘ইজ়রায়েল অনেক বড় ভুল করেছে। এর জন্য ওদের শাস্তি পেতে হবে।’’
আইডিএফ বিবৃতি দিয়ে দাবি করল, বুধবার ইরানের অন্তত ৪০টি ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা, গুদাম এবং সামরিক স্থাপনায় হামলা চালিয়েছে ইজ়রায়েল। তবে ক্ষয়ক্ষতির হিসাব এখনও স্পষ্ট নয়।
আর কিছু ক্ষণেই জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেবেন ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতোল্লা আলি খামেনেই। গত শুক্রবারের পর এই প্রথম জনসমক্ষে ভাষণ দিতে চলেছেন তিনি।
আমেরিকা নাক গলালে ‘সর্বাত্মক যুদ্ধ’ শুরু হবে! হুঁশিয়ারি দিয়ে এমনটাই জানালেন ইরানের বিদেশমন্ত্রকের এক মুখপাত্র। সম্প্রতি ট্রাম্পের বেশ কিছু মন্তব্যের পর জল্পনা শুরু হয়েছিল, আমেরিকা ইজ়রায়েলের সঙ্গে হাত মিলিয়ে সরাসরি যুদ্ধে যোগ দিতে পারে। সেই আবহেই আমেরিকাকে ইঙ্গিত করে বার্তা দিল ইরান।
ইরানের পারমাণবিক শক্তি সংস্থা জানিয়েছে, ইজ়রায়েলের একের পর এক হামলার পরেও সে দেশের ভূগর্ভস্থ পরমাণু কেন্দ্রগুলির কোনও ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। বরং দ্বিগুণ উৎসাহে কাজ করছেন বিজ্ঞানীরা। সমস্ত ভূগর্ভস্থ পরমাণু কেন্দ্রে আগের মতোই কাজ চলছে।
ট্রাম্প আত্মসমর্পণের কথা বলার পর থেকেই মুহুর্মুহু বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যাচ্ছে তেহরানে। এমনটাই জানিয়েছে ইরানের সংবাদমাধ্যমগুলি। বুধবার সকাল থেকে তেহরানের সাধারণ নাগরিকদের সেখান থেকে সরে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছে ইজ়রায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী। মঙ্গলবার রাতেও তেহরানের পশ্চিম ও পূর্ব প্রান্তের একাধিক বহুতলে বোমা হামলা হয়েছে বলে জানিয়েছে সংবাদসংস্থা এপি। আতঙ্কে তেহরান ছাড়তে শুরু করেছেন সেখানকার বাসিন্দারা।
সংঘর্ষের আবহে ইরানের নাগরিকদের জন্য ভিসার মেয়াদ পেরোনোর পরেও অতিরিক্ত সময় থাকার জরিমানায় ছাড় দিল সংযুক্ত আরব আমিরশাহি। ইরান-ইজ়রায়েল সংঘাতের কারণে আকাশসীমা বন্ধ থাকার কারণে যাঁরা যাঁরা দেশে ফিরতে পারেননি, তাঁদের সুবিধার্থেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
ইরান-ইজ়রায়েল যুদ্ধে সরাসরি যোগ দেবে আমেরিকা? হোয়াইট হাউসের তরফে এ ব্যাপারে কোনও ইঙ্গিত দেওয়া না-হলেও ট্রাম্পের সাম্প্রতিক কিছু মন্তব্যের পরে আমেরিকার যুদ্ধে যোগের জল্পনা বেড়েছে। ইরান-ইজ়রায়েল সংঘাতে প্রথম থেকেই ইজ়রায়েলের পাশে দাঁড়িয়েছে আমেরিকা। ইরানের এ-ও দাবি, ইজ়রায়েলকে সব রকম ভাবে সাহায্য করছেন ট্রাম্প। যদিও মার্কিন প্রেসিডেন্ট দাবি করে আসছেন, তিনি যুদ্ধ নয়, শান্তি চান! শুধু তা-ই নয়, মঙ্গলবার ইরানকে হুঁশিয়ারি দেওয়ার পর ট্রাম্প হোয়াইট হাউসে মার্কিন গোয়েন্দাদের সঙ্গে বৈঠক করেন বলে খবর। সেই বৈঠকে আমেরিকার পরবর্তী পদক্ষেপ কী হবে, তা নিয়েও আলোচনা হয়েছে বলেই জানা গিয়েছে। মঙ্গলবার ট্রাম্পের সঙ্গে ইজ়রায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর ফোনে কথা হয়। নেতানিয়াহুও চান, আমেরিকা এই যুদ্ধে সামরিক হস্তক্ষেপ করুক, যাতে ইরান তাদের পরমাণু কর্মসূচি বন্ধ করে দেয়।
রাতভর ইজ়রায়েলি বায়ুসেনাঘাঁটি লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে ইরানও। এমনটাই জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আল জ়াজ়িরা। বুধবার ভোরে ইরানের ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে মধ্য ইজ়রায়েলের একটি এলাকায় আগুনও লেগে গিয়েছে বলে খবর। ইরানের ফার্স নিউজ় এজেন্সি জানিয়েছে, শুধু তা-ই নয়, উত্তর ইজ়রায়েলে অবস্থিত মেরন বিমানঘাঁটি লক্ষ্য করেও আঘাত হানা হয়েছে। তবে ঘটনায় ক্ষয়ক্ষতির কোনও খবর পাওয়া যায়নি।
আইডিএফ জানিয়েছে, গত কয়েক ঘণ্টায় ইরানে হামলা চালিয়েছে ৫০টিরও বেশি ইজ়রায়েলি বিমান। তেহরানের একটি সেন্ট্রিফিউজ় কারখানায় আঘাত হানা হয়েছে। ওই সেন্ট্রিফিউজ় কারখানা ইরানের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণের একটি গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র। বুধবার সেখানে হামলা চালিয়েছে ইজ়রায়েল। শুধু তা-ই নয়, বেশ কয়েকটি অস্ত্র তৈরির কারখানা লক্ষ্য করে হামলা হয়েছে। আইডিএফ এক বিবৃতিতে আরও জানিয়েছে, তাদের যুদ্ধবিমানগুলি ইরানের ভূমি থেকে ভূমি এবং ভূমি থেকে আকাশে নিক্ষেপযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্র তৈরির কারখানাগুলিতেও আক্রমণ করেছে।
সংবাদসংস্থা এপি জানিয়েছে, গত পাঁচ দিনে ইজ়রায়েলের হামলায় ইরানে এখনও পর্যন্ত ৫৮৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন অন্তত ১৩২৬ জন। এমনটাই জানাচ্ছে বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন।
রাষ্ট্রপুঞ্জ নিয়ন্ত্রিত আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থা (আইএইএ) মঙ্গলবার জানিয়েছে, ইজ়রায়েলি বিমানহানায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ইরানের নাতানজ় পরমাণুকেন্দ্র। আর তা থেকে তেজস্ক্রিয় বিকিরণ ছড়ানোর আশঙ্কা রয়েছে। মঙ্গলবার গভীর রাতেও ইজ়রায়েলে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে ইরান। মঙ্গলবার রাত ১২টা ৪০ মিনিট নাগাদ পর পর কয়েকটি ক্ষেপণাস্ত্র ইজ়রায়েলের দিকে ছুটে আসে। সঙ্গে সঙ্গে বাজতে শুরু করে সাইরেন। এক নাগাড়ে অন্তত ১৫টি ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হয়। তার পর প্রায় ৪০ মিনিটের বিরতির পর ফের দ্বিতীয় হামলা শুরু হয়। দ্বিতীয় ধাপে মধ্য ইজ়রায়েল এবং ওয়েস্ট ব্যাঙ্ক লক্ষ্য করে অন্তত ১০টি ক্ষেপণাস্ত্র ধেয়ে আসে। তবে এখনও পর্যন্ত ওই ঘটনায় ক্ষয়ক্ষতির কোনও খবর পাওয়া যায়নি।
অন্য দিকে, ইরানি ভূখণ্ডের অভ্যন্তরে আক্রমণ অব্যাহত রেখেছে ইজ়রায়েলও। বুধবার ভোরে ইজ়রায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ)তেহরান সংলগ্ন এলাকা ছেড়ে বাসিন্দাদের সরে যাওয়ার নির্দেশ দেয়। তার কিছু ক্ষণ পরেই তেহরানে নতুন করে বোমা হামলার খবর পাওয়া গিয়েছে। কারাজ় শহরেও বিস্ফোরণের খবর পাওয়া গিয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy