Advertisement
০৩ মে ২০২৪

মৃত্যুর দরজায় দাঁড়িয়ে দিন গুনছে ৭৫ হাজার শিশু!

আর মাত্র কয়েকটা মাস। আসন্ন মৃত্যুর জন্য অপেক্ষা করছে প্রায় ৭৫ হাজার শিশু। খাবার নেই, জল নেই, শৈশব তো কোন ছার!

সংবাদ সংস্থা
আবুজা শেষ আপডেট: ০৫ ডিসেম্বর ২০১৬ ০৩:৪৫
Share: Save:

আর মাত্র কয়েকটা মাস। আসন্ন মৃত্যুর জন্য অপেক্ষা করছে প্রায় ৭৫ হাজার শিশু। খাবার নেই, জল নেই, শৈশব তো কোন ছার!

নাইজেরিয়া। পশ্চিম আফ্রিকার সবচেয়ে জনবহুল দেশ। বোকো হারামের তাণ্ডবে আজ প্রায় শ্মশানে পরিণত হয়েছে তেল সমৃদ্ধ এই দেশ। ২০০২ সালে ধর্মনিরপেক্ষ নাইজেরীয় সরকারের বিরুদ্ধে অস্ত্র ধরে বোকো হারাম। ২০০৯-এ সেই সংঘাত চরমে পৌঁছয়। নাইজেরিয়ার প্রেসিডেন্ট মহাম্মাদু বুহারির দাবি, বোকো হারাম জঙ্গিদের থেকে নাইজেরিয়ার বিস্তীর্ণ অংশ পুনরুদ্ধার করা হয়েছে। তবে গত কয়েক বছরের ভয়ঙ্কর যুদ্ধ ও জঙ্গিদের অত্যাচারে প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত কুড়ি হাজার মানুষ। দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন অন্তত ২৬ লক্ষ। এখন নাইজেরিয়ার বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে শুধু দুর্ভিক্ষের হাহাকার।

খাবার নেই, জল নেই, মিলছে না ন্যুনতম ওষুধও। হাড় জিরজিরে শিশুগুলো যেন নাইজেরিয়ার উপর দিয়ে বয়ে চলা ঝড়ের নগ্ন চিহ্নমাত্র। রাষ্ট্রপুঞ্জের এক কর্তা পিটার লান্ডবার্গ জানাচ্ছেন, এই ভয়াবহ দুর্ভিক্ষের প্রভাব ক্রমাগত সংক্রমণের মতো ছড়িয়ে পড়ছে দেশ জুড়ে। তাঁর দাবি, ২০১৭ সালের মধ্যে নাইজেরিয়ার প্রায় এক কোটি চার লক্ষ মানুষের যথাযথ মানবিক সাহায্যের প্রয়োজন। তাদের মধ্যে অন্তত ৪০ লক্ষের অবস্থা বেশ গুরুতর। আর মৃত্যুর দরজায় দাঁড়িয়ে দিন গুনছে দেশের প্রায় ৭৫ হাজার শিশু। এই পরিস্থিতিতে অসহায় রাষ্ট্রপুঞ্জও। লান্ডবার্গের কথায়, এই সমস্যার সমাধানের জন্য যে পরিমাণ অর্থ প্রয়োজন, তা রাষ্ট্রপুঞ্জের কাছে নেই। আর তাই আন্তর্জাতিক বন্ধু-দেশগুলোর কাছেই বারবার সাহায্যের জন্য আবেদন জানাচ্ছে তারা।

বোরনো প্রদেশের রাজধানী মাইদুগুরি, যার আজ অন্যতম পরিচয় বোকো হারামের জন্মস্থান হিসেবে, সেখানেও ভয়ঙ্কর খারাপ অবস্থার মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন মানুষ। দেশের বিভিন্ন এলাকা ছেড়ে পালানো মানুষ ঠাঁই নিয়েছেন সেখানকার শরণার্থী শিবিরে। নাইজেরিয়ার নজরদারি সংস্থা ও নিরাপত্তা সূত্রের খবর, ওই শরণার্থী শিবিরগুলিতে খাদ্যাভাবে দিনে অন্তত ১০ জন মানুষের মৃত্যু হচ্ছে। বোকো হারামের কবল থেকে নাইজেরীয় সেনা দেশের বেশ কিছু অংশ মুক্ত করতে পারলেও কিছু সূত্রের খবর, দেশের উত্তর পূর্বের বেশ কিছু জায়গায় এখনও যথেষ্ট সক্রিয় রয়েছে বোকো হারাম।

এই পরিস্থিতির জন্য রাষ্ট্রপুঞ্জকেই দায়ী করেছেন একাংশ। গোড়ার দিকেই ‘বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি’ সংস্থা দেশ জুড়ে দুর্ভিক্ষের সতর্কতা জারি করেছিল। তাঁদের দাবি, সে সময় রাষ্ট্রপুঞ্জ জরুরি অবস্থা জারি করলে এতদিনে প্রতিবেশী দেশগুলির থেকে অনেক বেশি পরিমাণ অনুদান সংগ্রহ করা সম্ভব হত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Nigeria
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE