সম্প্রতি নিজের বই ‘দ্য স্কাইস আই অ্যাম আন্ডার’ প্রকাশ করেছেন রেচেল।
থ্রি ইডিয়টস-এর সেই দৃশ্যটা মনে আছে? কলেজের প্রথম দিন যেখানে পড়ুয়াদের ‘প্রতিযোগিতা’ শেখাচ্ছে বীরু সহস্রবুদ্ধ? কী ভাবে হাজার হাজার পড়ুয়ার মধ্যে নিজের স্বার্থ বুঝে নিয়ে এগিয়ে যেতে হয়? জন্ম থেকেই যেখানে সকলে সামিল হয়ে চলেছে ইঁদুর দৌড়ে? পিঠে ভারী ব্যাগের বোঝা, বোর্ডের পরীক্ষায় অন্তত ৯২ শতাংশ নম্বর না পেলে পরদিন থেকে মাথা নিচু করে চলতে হবে। আর তাই এক দিনও স্কুল কামাই করা চলবে না। রোজ স্কুলে গিয়ে সব কিছু গলাদ্ধকরণ করলে তবেই তো পরীক্ষায় উগরে দিয়ে হাসিল করতে হবে রাশি রাশি নম্বর। ইঁদুর দৌড়ের এই মানসিকতা নিয়ে তাদের জনপ্রিয় বিজ্ঞাপনও বানিয়ে ফেলেছিল কোনও অ্যান্টি-সেপটিক। যেখানে সেই অ্যান্টি-সেপটিক ব্যবহার করা বাচ্চা মঞ্চে উঠে গ্রহণ করছে ১০০ শতাংশ উপস্থিতির পুরস্কার। গর্বে হাসি চওড়া হচ্ছে মায়ের।
ব্লগে এ ভাবেই লিখেছেন রেচেল
এসেক্সের ১০ বছরের জে জে-ও পেয়েছিল এই পুরস্কার। স্বাভাবিক ভাবেই চওড়া হওয়ার কথা ছিল জে জে-র মায়ের মুখের হাসি। কিন্তু না। ছেলেকে পুরস্কার নিতে পাঠালেনই না ৪০ বছরের রেচেল রাইট! তাঁর বক্তব্যও খুবই স্পষ্ট। এ পুরস্কার তো মেধার জন্য নয়। সুস্থ কারণেই রোজ স্কুলে যেতে পেরেছে জে জে। যে বাচ্চারা অসুস্থ হয়ে পড়েছে তাদের দোষটা কোথায়? তিন সন্তানের মা রেচেল বলেন, ‘‘আমাদের পরিবারে সন্তানদের ঠিকঠাক মানুষ করার জন্য অনেক ভাবনাচিন্তা করা হয়। আমরা উদযাপন করি, ওদের পুরস্কৃতও করি। কিন্তু সুস্থ থাকার জন্য উদযাপনের প্রয়োজন নেই। এটা কিছুটা বরাত জোরে, আর কিছুটা জিনগত কারণে আমার ছেলে সুস্থ ছিল। এটা তো ওর হাতে নয়। আমাদের বড় ছেলে স্যাম (১১) মস্তিষ্কে ক্ষত নিয়ে জন্মেছিল। পৃথিবীতে এমন কোনও কর্মক্ষেত্র রয়েছে যেখানে প্রতি সপ্তাহে কেউ অসুস্থ হয়ে পড়ে না? যারা সুস্থ থাকে তাদের কি পুরস্কৃত করা হয়? স্কুলে কেন করা হবে? অসুস্থ হয়ে পড়া খুবই স্বাভাবিক ব্যাপার। কিন্তু এ ভাবে পুরস্কৃত করা হলে যারা বড় কোনও শারীরিক বা মানসিক সমস্যার কারণে রোজ উপস্থিত থাকতে পারছে না তাদের আমরা অসম্মান করছি। সন্তানদের কী শিক্ষা দিচ্ছি এর থেকে?’’
আরও পড়ুন: সন্তানের জন্য ক্লাসে আসতে পারেননি, শিক্ষিকার অপ্রত্যাশিত উত্তরে মায়ের চোখে জল
সম্প্রতি নিজের বই ‘দ্য স্কাইস আই অ্যাম আন্ডার’ প্রকাশ করেছেন রেচেল, যেখানে জটিল প্রতিবন্ধকতা নিয়ে জন্মানো শিশুর অভিভাবক হওয়ার অভিজ্ঞতার কথা লিখেছেন রেচেল। জে জে-কে কেন তিনি এই পুরস্কার গ্রহণ করতে পাঠাননি তা একটি ব্লগে পোস্টও করেছেন রেচেল। ২০ হাজার ‘লাইক’ পড়লেও সারা বিশ্বের মায়েদের কাছ থেকে মিশ্র প্রতিক্রিয়া পেয়েছেন রেচেল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy