Advertisement
৩১ মার্চ ২০২৩
Olive ridley sea turtle

১০ কচ্ছপের হাজারের বেশি ডিম! সংরক্ষণ করে সমুদ্রে ছাড়ার কাজ করছে বাংলাদেশের সংস্থা

সংস্থার কর্মীদের দাবি, ডিম পাড়ার জন্য মা কচ্ছপ উপযুক্ত পরিবেশ পাচ্ছে না। উপকূল জুড়ে পুঁতে রাখা বিহিঙ্গি এবং বৈদ্যুতিক জালে আটকা পড়ে বহু মা কচ্ছপ মারা যাচ্ছে।

সমুদ্রতটে এ ভাবে সংরক্ষণ করা হচ্ছে কচ্ছপের ডিম।

সমুদ্রতটে এ ভাবে সংরক্ষণ করা হচ্ছে কচ্ছপের ডিম। সৌ: প্রথম আলো।

সংবাদ সংস্থা
ঢাকা শেষ আপডেট: ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ১০:৩০
Share: Save:

সমুদ্রে ঘোরাফেরা করলেও ডিম পাড়তে সমুদ্রের তটেই আসতে হয় কচ্ছপদের। কিন্তু হালফিলের দুনিয়ায় সমুদ্রতট মোটেও নিরাপদ নয় কচ্ছপদের কাছে। ডিম পাড়লে কুকুর, পাখি, গোসাপের আতঙ্ক তো রয়েইছে উপরি হিসাবে চোরের উপদ্রবও কম নয়। তাই মুশকিল আসান হয়ে এগিয়ে এসেছে বাংলাদেশের একটি বেসরকারি সংস্থা। কক্সবাজারের তটে কচ্ছপের ডিম সংরক্ষণ করে তা থেকে বাচ্চা বার করে কচ্ছপ ছানাকে আবার সমুদ্রে ফিরিয়ে দেওয়ার কাজ করে চলেছে সংস্থা।

Advertisement

নেচার কনজারভেশন ম্যানেজমেন্ট-সহ বাংলাদেশের অন্তত দু’টি বেসরকারি সংস্থা পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় এগিয়ে এসেছে। এমনই খবর প্রকাশিত হয়েছে বাংলাদেশের দৈনিক ‘প্রথম আলো’য়। প্রতিবেদনে প্রকাশ, কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভের প্যাঁচারদ্বীপ সৈকতে বালিতে গর্ত খুঁড়ে জানুয়ারি থেকে বিরল প্রজাতির ‘অলিভ রিডলে’ সামুদ্রিক কচ্ছপের ডিম সংরক্ষণ করা হচ্ছে। আগামী মার্চে ডিম ফুটে বাচ্চা বেরোনো শুরু হবে। দুই থেকে তিন দিন বয়স পর্যন্ত কচ্ছপছানাগুলিকে নিজেদের কাছে রেখে তার পর ছেড়ে দেওয়া হবে সমুদ্রে।

অলিভ রিডলে প্রজাতির কচ্ছপের ডিম থেকে জন্ম নেওয়া তিন দিন বয়সি কচ্ছপের বাচ্চা।

অলিভ রিডলে প্রজাতির কচ্ছপের ডিম থেকে জন্ম নেওয়া তিন দিন বয়সি কচ্ছপের বাচ্চা। সৌ: প্রথম আলো।

নেচার কনজারভেশন ম্যানেজমেন্টের ব্যবস্থাপক আব্দুল কাইয়ুম বলেন, ‘‘প্যাঁচারদ্বীপ, সোনাদিয়া এবং টেকনাফের শিলখালী সৈকতের তিনটি হ্যাচারিতে ১ হাজার ৯৩টি কচ্ছপের ডিম প্রজননের জন্য সংরক্ষণ করা হয়েছে। এর মধ্যে প্যাঁচারদ্বীপের হ্যাচারিতে ৬২১টি, মহেশখালির সোনাদিয়ার হ্যাচারিতে ১৫০টি এবং টেকনাফের বাহারছড়া ইউনিয়নের শিলখালি সৈকতের আরও একটি হ্যাচারিতে ৩২২টি ডিম সংরক্ষিত রয়েছে। সূর্যের আলোর তীব্রতার উপর নির্ভর করে ডিম পাড়ার ৭০ থেকে ৯০ দিনের মধ্যে তা থেকে বাচ্চা বেরোয়।’’

ওই বেসরকারি সংস্থার কর্মীদের মতে, অন্যান্য বছরের তুলনায় এ বার কচ্ছপের ডিম সংগ্রহের পরিমাণ কমেছে। কারণ হিসাবে তাঁরা বলছেন, ‘‘ডিম পাড়ার জন্য মা কচ্ছপ উপযুক্ত পরিবেশ পাচ্ছে না। উপকূল জুড়ে পুঁতে রাখা বিহিঙ্গি এবং বৈদ্যুতিক জালে আটকা পড়ে বহু মা কচ্ছপ মারা যাচ্ছে।’’

Advertisement

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কচ্ছপ যদি ডিমই না পাড়তে পারে তা হলে কচ্ছপের বংশবৃদ্ধি পুরোপুরি থমকে যাবে। কিন্তু তটে এসে নির্ভয়ে ডিম পাড়ার ক্ষেত্রে মূলত রয়েছে দু’টি বাধা। প্রথমত, সমুদ্রে প্রায় এক হাজার কিলোমিটার দীর্ঘ এলাকায় বেআইনি জাল বিছানো রয়েছে। সেই বিহিঙ্গি জাল এবং বৈদ্যুতিক জালে আটকে যাচ্ছে ডিম পাড়তে আসা মা কচ্ছপ। দ্বিতীয়ত, পাড়ে ডিম পেড়েও নিশ্চিন্ত হতে পারছে না মা কচ্ছপ। কারণ, তটে পাখি, কুকুর বা গোসাপের হামলার সম্ভাবনা প্রচুর। নতুন উপসর্গ তটে ঘুরে বেড়ানো কিছু মানুষ। যাঁদের চোখ সর্বদা বালির দিকে। ডিমের আভাস পেলেই বালি খুঁড়ে ডিম নিয়ে ধাঁ। এই পরিস্থিতিতে ডিম সংরক্ষণে বাংলাদেশের বেসরকারি সংস্থাগুলির এগিয়ে আসার বিষয়টিকে আশার আলো হিসাবেই দেখছেন পরিবেশবিদরা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE
Popup Close
Something isn't right! Please refresh.