Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
Pakistan Crisis

রাশ সেনার হাতেই অনুদান এনেছেন মুনির, শেষ পর্যন্ত মানলেন শরিফও

আইএমএফের যে বিশাল অঙ্কের ঋণের প্যাকেজ পাকিস্তানকে দেওয়ার কথা, তার জন্য আগেথেকেই প্রচুর শর্ত চাপানো হয়েছিল শরিফ সরকারের উপরে।

An image of Shehbaz Sharif

একটি অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ় শরিফ জানিয়েছেন, পাকিস্তানের জন্য বিদেশ থেকে অনুদান আনতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছেন সেনাপ্রধান মুনির। ফাইল ছবি।

সংবাদ সংস্থা
লাহোর শেষ আপডেট: ১৭ এপ্রিল ২০২৩ ০৮:১৭
Share: Save:

দেশের গদিচ্যুত প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান বরাবর অভিযোগ করে এসেছেন, পাকিস্তান সরকারের রাশ এখন দেশের সেনাপ্রধানের হাতে। তবে শাহবাজ় শরিফের জোট সরকার সব সময়ই সেই অভিযোগ নস্যাৎ করে দাবি করেছে, পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ রাজনীতি থেকে দেশের সেনাপ্রধান জেনারেল আসিম মুনির সর্বদা দূরে থাকেন। তবে এ বার খোদ পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শরিফই স্বীকার করে নিয়েছেন, দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে কতটা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেন জেনারেল মুনির।

গত কাল লাহোরে একটি অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ় শরিফ। সেখানেই তিনি জানিয়েছেন, অর্থনৈতিক ভাবে বিধ্বস্ত পাকিস্তানের জন্য বিদেশ থেকে অনুদান আনতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছেন সেনাপ্রধান মুনির। মূলত মুনিরের উদ্যোগেই পাকিস্তান সরকারকে দেউলিয়া হয়ে যাওয়ার হাত থেকে বাঁচাতে এগিয়ে এসেছে সৌদি আরব এবং সংযুক্ত আরব আমিরশাহির মতো বন্ধু দেশ। এই দু’দেশেরসরকার ইতিমধ্যেই পাকিস্তানকে দু’শো থেকে তিনশো কোটি ডলার ঋণ দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছে। আন্তর্জাতিক অর্থ ভান্ডারের (আইএমএফ)-এর হিসাব অনুযায়ী, পাকিস্তানের অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে এখন অন্তত সাড়ে ছ’শো কোটিডলার দরকার। পশ্চিম এশিয়ার দু’টি দেশ পাকিস্তানের পাশে দাঁড়ানোর পরেও আরও তিনশো কোটি ডলার প্রয়োজন পাকিস্তানের। শাহবাজ় এ দিন জানান, তাঁরা আশা করছেনযে, খুব শীঘ্রই আইএমএফ তাদের প্রতিশ্রুত ১১০ কোটি ডলার পাকিস্তানকে দিয়ে দেবে। প্রধানমন্ত্রী আগেই জানিয়েছেন, বিপুল পরিমাণ অর্থ দিয়ে সাহায্যের হাত বাড়িয়েছে চিনও। অঙ্কটা কত, তা স্পষ্ট না জানালেও সূত্রের খবর, তারাও পাকিস্তানকে দু’শো কোটি ডলার দিতে প্রস্তুত।

আইএমএফের যে বিশাল অঙ্কের ঋণের প্যাকেজ পাকিস্তানকে দেওয়ার কথা, তার জন্য আগে থেকেই প্রচুর শর্ত চাপানো হয়েছিল শরিফ সরকারের উপরে। পাক প্রধানমন্ত্রী শরিফ-সহ পাকিস্তানের বেশ কিছু মন্ত্রী স্বীকার করে নিয়েছিলেন যে, জ্বালানিতে ভর্তুকি তুলে দেওয়া-সহ যে সব কঠিন কঠিন শর্ত পাক সরকারের উপরে চাপানো হয়েছে, তা মেনে নেওয়া এক কথায় অসম্ভব। তা সত্ত্বেও দেশের মানুষের কথা মাথায় রেখে পাকিস্তান সরকার আইএমএফের সমস্ত শর্ত মেনে নেওয়ার চেষ্টা করছে বলে জানিয়েছিলেন শরিফ।

গত কাল লাহোরের অনুষ্ঠানেও একই কথা বলতে শোনা গিয়েছে পাক প্রধানমন্ত্রীকে। আন্তর্জাতিক অর্থ ভান্ডারকে কিছুটা ঠেস দিয়েই তিনি বলেছেন, ‘‘বিদেশ থেকে অনুদান সংগ্রহের পরে আইএমএফের যাবতীয় কঠিন শর্ত মেনে নিয়েছে পাকিস্তান। আশা করি, এর পরে চুক্তি দেরি করার জন্য আর কোনও বাহানা দেওয়া হবে না।’’ তবে জেনারেল মুনির কী ভাবে সৌদি ও আমিরশাহি সরকারের কাছ থেকে এত বড় অঙ্কের অর্থ সাহায্য আদায় করেছেন, তা খোলসাকরেননি শরিফ।

শরিফ ওই অনুষ্ঠানে আরও বলেছেন, ‘‘ভিক্ষুকদের মতো ঋণ চাওয়ার জন্য পাকিস্তানের জন্ম হয়নি। আমাদের পূর্বপুরুষেরা অনেক আত্মত্যাগ করেছেন এই দেশ গড়তে, তাই আমরা চাই না এই দেশ ঋণের উপরে চলুক।’’ একই সঙ্গে শরিফের বক্তব্য, এখন পাকিস্তানের মানুষকেই এটা ঠিক করতে হবে যে, তাঁরা ত্যাগ ও বলিদান দিয়ে, খরচে কাটছাঁট করে মাথা উঁচু করে চলবেন নাকি, বিদেশি ঋণের জালে জর্জরিত হয়ে দেশকে আরও বিপদের দিকে ঠেলে দেবেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE