Advertisement
৩০ এপ্রিল ২০২৪
International Mother Language Day

শ্রদ্ধায় একুশে পালিত বাংলাদেশে

মাতৃভাষা বাংলাকে পাকিস্তানের অন্যতম রাষ্ট্রভাষার মর্যাদা দেওয়ার দাবিতে আন্দোলন তীব্র হয়ে উঠেছিল তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে। সেই আন্দোলন দমনে ১৯৫২-র ২১ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় গুলি চালায় পুলিশ।

An image of Bangladesh

ফুলের আলপনা ভাষা-শহিদ মিনারে। বুধবার সকালে ঢাকায়। ছবি: বুলবুল আহমেদ।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ০৮:৩৬
Share: Save:

বাংলাদেশ জুড়ে বুধবার পালিত হল একুশের ভাষা-শহিদ দিবস। রাজধানী ঢাকার কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারের পাশাপাশি দেশের সর্বত্র শহিদ মিনারগুলিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান লাখো মানুষ। সারা দিন ধরে চলে অজস্র সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও আলোচনা সভা। গোটা ফেব্রুয়ারি জুড়ে ঢাকায় বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে বসে বইমেলা। এ দিন হাজার হাজার মানুষ শহিদ বেদিতে শ্রদ্ধা জানিয়ে বইমেলায় যান। ফলে সেখানে ছিল উপচে পড়া ভিড়।

মাতৃভাষা বাংলাকে পাকিস্তানের অন্যতম রাষ্ট্রভাষার মর্যাদা দেওয়ার দাবিতে আন্দোলন তীব্র হয়ে উঠেছিল তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে। সেই আন্দোলন দমনে ১৯৫২-র ২১ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় গুলি চালায় পুলিশ। মাতৃভাষায় সম্মান রক্ষায় প্রাণ দেন সালাম, রফিক, জব্বার, বরকত ও বেশ কয়েক জন নাম না-জানা তরুণ। সেই আন্দোলন থেকে উদ্ভব বাঙালি জাতীয়তাবাদের, যা কালক্রমে স্বাধীন রাষ্ট্র বাংলাদেশের জন্ম দেয়। ‘একুশে’ তাই বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর থেকেই পালিত হয়। পরে রাষ্ট্রপুঞ্জ ২১ ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসাবে ঘোষণা করার পরে গোটা বিশ্বেই পালিত হয় দিনটি।

মঙ্গলবার রাতে বাংলাদেশ সময়ে ঠিক ১২টা বাজা মাত্র ঢাকায় বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরের কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে বেজে ওঠে একুশের গান— ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো
একুশে ফেব্রুয়ারি, আমি কি ভুলিতে পারি’। আগে থেকেই নিরাপত্তার ঘেরাটোপে এসে হাজির হন রাষ্ট্রনেতা এবং বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকেরা। শহিদ বেদিতে প্রথম শ্রদ্ধা অর্পণ করেন রাষ্ট্রপতি এবং প্রধানমন্ত্রী। তার পরে ফুলের স্তবক দেন বাংলাদেশের তিন বাহিনীর প্রধান। তার পরে মন্ত্রিসভার সদস্যরা, সঙ্গে বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকেরা। এর পরে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সংগঠনের পক্ষে সারিবদ্ধ ভাবে লাইনে দাঁড়িয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন পর্ব চলে। সবার শেষে শ্রদ্ধা নিবেদনের পালা সাধারণ মানুষের। মঙ্গলবার সারা রাতের পরে বুধবার দিনভর চলে সারিবদ্ধ মানুষের যাওয়া-আসা।

বাংলা একেডেমির চত্বরে এক সময়ে যে একুশের বইমেলা শুরু হয়েছিল, এখন সেই মেলা দৈর্ঘে প্রস্থে বেড়েছে বহু গুণ। বুধবার সেই মেলায় তিল ধারনের জায়গা ছিল না। একই চিত্র চট্টগ্রাম থেকে রাজশাহি, খুলনা থেকে সিলেট, কুমিল্লা সর্বত্র। শহিদ স্মরণে নানা অনুষ্ঠান সমস্ত স্কুল-কলেজে। বিকেলে মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটের আলোচনা সভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, “দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশ এক মাত্র রাষ্ট্র, যারা ভাষার দাবিতে আন্দোলন থেকে স্বাধীনতা পেয়েছে। আমরা স্বাধীন জাতি হিসাবে আত্মমর্যাদা পেয়েছি।” দৈনন্দিন কাজ ও পড়াশোনায় বাংলা মাধ্যমকে আরও গুরুত্ব দেওয়ার কথা বলেন তিনি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

International Mother Language Day Bangladesh
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE